Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪
Trinamool Congress

আদানি কাণ্ডে ধর্নায় তৃণমূলও

সকালের ধর্নার পাশাপাশি লোকসভায় রাষ্ট্রপতির বক্তব্য নিয়ে আলোচনায় কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও মহুয়া মৈত্র এবং রাজ্যসভায় ডেরেক ও ’ব্রায়েন সরব হয়েছেন।

A representative image of a protest

আদানি কাণ্ডের জেরে এ বার দিল্লিতে এলআইসি-র সদর দফতরের বাইরে ধর্নায় বসল তৃণমূল কংগ্রেস। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:১৬
Share: Save:

গতকাল গোটা দেশে এলআইসি ও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সমানে ধর্না দিয়েছিল কংগ্রেস। পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস নেতৃত্বের কটাক্ষ ছিল, আদানির সংস্থায় বিনিয়োগ করা মানুষের বিপুল অর্থের অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে মুখ বুজে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এর পরেই নড়েচড়ে বসেছে তৃণমূল। আজ সকাল দশটায় এলআইসি-র সদর দফতরের সামনে পোস্টার এবং মুখে কালো কাপড় বেঁধে স্লোগান দিতে দেখা গিয়েছে তৃণমূলের সাংসদদের। তাঁদের অভিযোগ, এলআইসি-কে লুট করা হচ্ছে। জোর করে এলআইসি-কে আদানির সংস্থায় টাকা ঢালতে বাধ্য করা হয়েছে। এর ফলে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের জমানো টাকার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

তৃণমূল সূত্রের খবর, গতকাল রাতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংসদীয় দলের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আদানি কাণ্ড নিয়ে অবিলম্বে রাস্তায় নামতে নির্দেশ দেন তিনি। সেই মতো লোকসভা এবং রাজ্যসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডেরেক ও ’ব্রায়েন দলের সাংসদদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। স্থির হয়, কালো কাপড় মুখে পর পর দু’দিন নয়াদিল্লির এলআইসি এবং এসবিআই-এর সদর দফতরের সামনে প্রতিবাদ জানাবেন তৃণমূলের নেতারা। সাংসদদের মধ্যে যাঁরা দিল্লি রয়েছেন, তাঁদের সবার সঙ্গেই যোগাযোগ করেন সুদীপ। এর পরেই আজ ধর্নায় বসেন তৃণমূলের সাংসদরা।

কংগ্রেস ও অন্য বিরোধীরা আজ দুপুর থেকে রাষ্ট্রপতির বক্তৃতা নিয়ে আলোচনা শুরু করেছেন। তবে গতকাল দুপুর থেকেই কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যে বাদানুবাদ শুরু হয়েছে। গতকাল বিকেলে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তোপ দেগেছিলেন লোকসভার কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরীর দিকে। তাঁর বক্তব্য, নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম জুড়ে অধীর আসলে বিজেপির কাছে ভাল সাজতে চাইছেন। তাঁর নিজের লোকসভা আসনে জেতার জন্য শুভেন্দু অধিকারীর অনুগ্রহ প্রয়োজন। কল্যাণের অভিযোগ, সে কারণেই বিরোধী ঐক্যে চিড় ধরাচ্ছেন অধীর। তাঁর একার জন্যই কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের সমন্বয় হচ্ছে না, এমন অভিযোগও তোলেন কল্যাণ।

রাতে অবশ্য তাঁকে গুরুত্ব না দিয়ে সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যাকেই আক্রমণ করতে দেখা যায় অধীরকে। তাঁর অভিযোগ, মোদীর বিরুদ্ধে হাত গুটিয়ে বসে রয়েছেন মমতা। অধীর বলেন, “এর দু’টো কারণ রয়েছে। মোদীর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা এবং আদানির সঙ্গে নতুন বন্ধুত্ব। তাজপুর বন্দর আদানি বানাবেন। মোদী বা আদানির কাছ থেকে সম্ভবত তাঁর কাছে নির্দেশ গিয়েছে এই বাণিজ্য গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মুখ না খুলতে।”

আজ অবশ্য কংগ্রেসের বক্তব্যকে ভুল প্রমাণিত করতে সকাল থেকেই মাঠে নেমেছে তৃণমূল। সকালের ধর্নার পাশাপাশি লোকসভায় রাষ্ট্রপতির বক্তব্য নিয়ে আলোচনায় কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও মহুয়া মৈত্র এবং রাজ্যসভায় ডেরেক ও ’ব্রায়েন সরব হয়েছেন। কল্যাণ বলেন, “গরিব মানুষের টাকা যাচ্ছে আদানির কাছে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের দিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। কেন্দ্রীয় সরকার কেন ভয় পেয়ে পিছিয়ে যাচ্ছে?” তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র টুপি নিয়ে হাজির হয়ে বলেন, আদানি প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, বিমানমন্ত্রী, তেলমন্ত্রী, জাহাজমন্ত্রী, বিদ্যুৎমন্ত্রী— সকলকেই টুপি পরাচ্ছেন। তিনি এমন ধারণা তৈরি করেছেন যে তাঁকে খুশি করা মানেই দেশের প্রধানমন্ত্রীকে খুশি করা। তাঁর সংস্থার শেয়ার দর এত গুণ বাড়ছে, যা গুগল, অ্যামাজ়নের মতো সংস্থারও বাড়ে না। মহুয়ার অভিযোগ, ২০১৯ থেকে আদানি গোষ্ঠীর অনিয়ম নিয়ে সেবি, রাজস্ব গোয়েন্দা সংস্থা, প্রত্যক্ষ কর পর্ষদকে চিঠি লিখছেন। কিন্তু কেউ কোনও পদক্ষেপ করেনি। সেবি-র যে কমিটি কর্পোরেট সংস্থার অনিয়মে নজরদারি করে, গৌতম আদানির বেয়াই সেই কমিটিতেই বসে রয়েছেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy