Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
Tribal community

চুরির ‘শাস্তি’, ট্রাকে বেঁধে টেনে নিয়ে গিয়ে খুন! তালিবানি আফগানিস্তান নয়, মধ্যপ্রদেশে

নির্যাতিত ওই ব্যক্তি ভিল সম্প্রদায়ভুক্ত। তাঁর নাম কানহাইয়ালাল। চুরির অভিযোগে তাঁকে মারধর করেন যাঁরা, তাঁরা রাজপুত সম্প্রদায়ের মানুষ।

ভিডিয়োটি রেকর্ড করেছেন নিগ্রহকারীরাই। বর্বরোচিত সেই দৃশ্য দেখে শিউরে উঠেছেন নেটাগরিকরা।

ভিডিয়োটি রেকর্ড করেছেন নিগ্রহকারীরাই। বর্বরোচিত সেই দৃশ্য দেখে শিউরে উঠেছেন নেটাগরিকরা। ছবি: টুইটার

সংবাদ সংস্থা
ভোপাল শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০২১ ১৩:০১
Share: Save:

চুরি করেছেন। এই অভিযোগে এক ব্যক্তিকে প্রথমে বেধড়ক মারধর করে তার পর ট্রাকের সঙ্গে পায়ে দড়ি বেঁধে টেনে নিয়ে যাওয়া হল মধ্যপ্রদেশে। এই ঘটনার কিছু ক্ষণ পর ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তিনি সেখানেই মারা যান।

নেটমাধ্যমে ঘটনাটির একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছেন মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা কমল নাথ। কমল জানতে চেয়েছেন ‘মধ্যপ্রদেশে এ সব কী হচ্ছে...? উপজাতি সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তির সঙ্গে এটি কী ধরনের বর্বরতা?’ নেটমাধ্যমে দেওয়া ভিডিয়োটিতে নির্যাতিত মানুষটির উপর অত্যাচার এবং তাঁর শেষ মুহূর্তের যন্ত্রণা ধরা পড়েছে। ভিডিয়োটি দিয়ে টুইটারে কমল নাথ প্রশ্ন করেছেন, ‘চোর সন্দেহে মানুষটির উপর এমন অত্যাচার করা হল যে তিনি মারা গেলেন?’’

ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার মধ্যপ্রদেশের নীমাচ জেলার কালান গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে নির্যাতিত ওই ব্যক্তি মধ্যপ্রদেশের উপজাতি ভিল সম্প্রদায়ভুক্ত। তাঁর নাম কানহাইয়ালাল। চুরির অভিযোগে তাঁকে মারধর করেছেন মধ্যপ্রদেশের রাজপুত শ্রেণির গুর্জর সম্প্রদায়ের কয়েক জন। যদিও এই ঘটনার নেপথ্যে জাতিবিদ্বেষই মূল কারণ কি না সে বিষয়ে পুলিশ কিছু জানায়নি।

ভিডিয়োটিতে দেখা গিয়েছে, কানহাইয়ালালের পায়ে দড়ি বেঁধে সেই দড়ি একটি ট্রাকের পিছনে বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। ধুলো মাখা চেহারা ও ছেঁড়া ফাটা জামার মধ্য দিয়ে স্পষ্ট তাঁর উপর হওয়া অত্যাচারের চিহ্ন। ভিডিয়োটিতে হাতজোড় করে অনুনয় করতেও দেখা যায় কানহাইয়ালালকে। তবে সে দিকে দৃকপাত না করেই চালিয়ে দেওয়া হয় ট্রাক। পিচের রাস্তায় টানতে টানতে নিয়ে যাওয়া হয় অত্যাচারে প্রায় অসুস্থ হয়ে পড়া মানুষটিকে।

ভিডিয়োটি রেকর্ড করেছেন নিগ্রহকারীরাই। বর্বরোচিত সেই দৃশ্য দেখে শিউড়ে উঠেছেন নেটাগরিকরা। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটির খবর পেয়েই ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করেন তাঁরা। নিয়ে যাওয়া হয় নীমাচের সরকারি হাসপাতালে। কিন্তু ততক্ষণে অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসকরা কানহাইয়ালালকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

এই ঘটনায় মোট আট জন অভিযুক্তকে চিহ্নিত করেছে পুলিশ। এর মধ্যে মূল অভিযুক্ত-সহ চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের সন্ধান করা হচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ঘটনার দিন কানহাইয়ালালের বাইকের সঙ্গে স্থানীয় গুর্জর সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তির গাড়ির সঙ্ঘর্ষ হয়। তা থেকেই ঘটনার সূত্রপাত। তবে বাইক দুর্ঘটনার পর কেন কানহাইয়ালালকে চুরির অপবাদ দেওয়া হয় তা স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE