বৃহস্পতিবার ই়ডি-র দফতরের পথে সনিয়া। পিটিআই
শুধু উপরাষ্ট্রপতি ভোট নয়। সিবিআই-ইডিকে কাজে লাগিয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার সমালোচনাতেও তৃণমূল ‘বিরত’ থাকল। কলকাতায় ২১শে জুলাইয়ের সমাবেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিবিআই-ইডি লেলিয়ে দেওয়ার রাজনীতির বিরুদ্ধে মুখ খুললেও দিল্লিতে বিরোধী দলগুলির একযোগে জারি করা বিবৃতিতে ছিল না তৃণমূলের নাম।
আজ সনিয়া গান্ধীকে ইডি-র জিজ্ঞাসাবাদের দিন কংগ্রেস-সহ ১২টি বিরোধী দল মিলে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’-র অভিযোগ তুলে বিবৃতি জারি করেছে। কিন্তু সেই দলে তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতি থাকলেও তৃণমূল নেই। সনিয়া গান্ধীকে ইডি-র জিজ্ঞাসাবাদের বিরুদ্ধে সব দলই যাতে তাঁর পাশে দাঁড়ায়, সে জন্য কংগ্রেসের তরফে অন্যান্য বিরোধী দলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তৃণমূলের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু তৃণমূলের দিক থেকে ইতিবাচক সাড়া মেলেনি বলেই কংগ্রেসের দাবি।
বৃহস্পতিবার সকালে সংসদে রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের মল্লিকার্জুন খড়্গের ঘরে বিরোধী দলগুলির বৈঠক বসে। ২১শে জুলাইয়ের সমাবেশের জন্য তৃণমূলের সব সাংসদই কলকাতায় ছিলেন। ফলে বৈঠকে কারও যোগ দেওয়ার প্রশ্ন ছিল না। তবে লক্ষণীয় ভাবে বৈঠকে ডিএমকে, এনসিপি, সিপিএম, সিপিআই, আরজেডি-র মতো দলের পাশাপাশি তেলঙ্গানা রাষ্ট্র সমিতিও যোগ দেয়, যাদের সঙ্গে তেলঙ্গানায় কংগ্রেসের সরাসরি লড়াই। এই বৈঠকের পরেই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে একযোগে বিবৃতি জারি করা হয়। লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী পরে অভিযোগ তোলেন, তৃণমূল ইচ্ছাকৃত ভাবেই মোদী সরকারের সমালোচনা এড়িয়ে গিয়েছে। সনিয়া গান্ধী অসুস্থ। তিনি কোভিড থেকে সবে সেরে উঠেছেন। তাঁর নিশ্বাস নিতেও অসুবিধা হয়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কংগ্রেসকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। তার প্রতিবাদ থেকেও তৃণমূল গা বাঁচিয়ে চলছে।
ইডি-সিবিআই প্রসঙ্গে তৃণমূলের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন করা হলে আজ কলকাতায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সিবিআই-ইডি সবাইকেই হেনস্থা করছে। পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল, মহারাষ্ট্রে এনসিপি-শিবসেনার বিরুদ্ধে সিবিআই-ইডিকে কাজে লাগানো হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে চার জন মন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু যাঁরা বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন, তাঁরা ধোয়া তুলসীপাতা হয়ে যাচ্ছেন। সে ক্ষেত্রে কেন এর নিন্দায় তৃণমূল বিরোধীদের সঙ্গে থাকল না, সে বিষয়ে অভিষেক জবাব দেননি। তৃণমূলের লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় আবার ২১শে জুলাইয়ের সমাবেশে অভিযোগ তোলেন, পরিকল্পিত ভাবে এ দিন সনিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছে, যাতে তৃণমূলের সমাবেশ থেকে সাধারণ মানুষ ও প্রচারমাধ্যমের নজর সরে যায়।
অন্য দিকে দিল্লিতে ১২টি বিরোধী দলের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মোদী সরকার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক বিপক্ষ ও সমালোচকদের বিরুদ্ধে নিরন্তর প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের পরিকল্পিত ভাবে নিশানা করা হচ্ছে। অভূতপূর্ব ভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে। এর নিন্দায় বিরোধী দলগুলি মোদী সরকারের জনবিরোধী, কৃষক-বিরোধী, সংবিধান বিরোধী নীতির বিরুদ্ধে যৌথ লড়াইয়ের সঙ্কল্প করছে। প্রসঙ্গত, এর আগে রাহুল গান্ধীকে যখন ইডি ডেকেছিল, তখনও কংগ্রেস অন্য দলগুলিকে পাশে পাওয়ার চেষ্টা করেছিল। সফল হয়নি। সনিয়ার ক্ষেত্রে কিন্তু তেমনটা ঘটল না। এমনকি বিক্ষুব্ধ জি-২৩ গোষ্ঠীর নেতা বলে পরিচিত গুলাম নবি আজাদ, আনন্দ শর্মারাও আজকের বিক্ষোভে যোগ দেন। এর মধ্য দিয়ে পরোক্ষে ফের রাহুলের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন উঠে পড়ায় কংগ্রেসের মধ্যে কিছুটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy