তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। —ফাইল চিত্র।
টাকা নিয়ে সংসদে প্রশ্নের অভিযোগে এথিক্স কমিটিতে হাজিরা দেওয়ার আগে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি লিখলেন তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। তাঁর অভিযোগ, ‘রাষ্ট্র পরিচালিত আক্রমণ’ হচ্ছে বিরোধীদের উপর। তাঁর মতো বেশ কয়েক জন বিরোধী দলের সাংসদদের মোবাইলে এ নিয়ে মেসেজ এসেছে অ্যাপল সংস্থার তরফে। বিরোধীদের মোবাইল থেকে তথ্য হাতানোর চেষ্টা হচ্ছে। এমনকি, ফোনের ক্যামেরা, মাইক্রোফোনের মাধ্যমে সেই নজরদারি চলছে। বৃহস্পতিবার এথিক্স কমিটিতে হাজিরা দেওয়ার আগে লোকসভার স্পিকারকে মহুয়ার এই চিঠি ‘তাৎপর্যপূর্ণ’।
বুধবার নিজের এক্স হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) ওই চিঠির প্রতিলিপি পোস্ট করে মহুয়া লেখেন, ‘‘সাংবিধানিক স্বাধীনতা এবং আইনের শাসন লঙ্ঘিত করে বিরোধী সদস্যদের (সাংসদ) উপর নজরদারির গুরুতর বিষয় নিয়ে এই মাত্র লোকসভার মাননীয় স্পিকারকে চিঠি দিয়েছি।’’
স্পিকারকে লেখা চিঠিতে মহুয়া দাবি করেছেন, পেগাসাসের চেয়েও এই ‘আক্রমণ’ গুরুতর। বস্তুত, মঙ্গলবার প্রথমে তৃণমূল সাংসদ মহুয়াই আমেরিকার সংস্থা অ্যাপলের মেসেজ এবং ইমেল নোটিফিকেশনের স্ক্রিনশট এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে দাবি করেন যে, তাঁর আইফোন কেন্দ্রীয় সরকার হ্যাক করতে চাইছে বলে সতর্কবার্তা এসেছে। তার পর কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর, শিবসেনার প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদীও অ্যাপল সংস্থা থেকে পাওয়া ‘সতর্কবার্তার’ কথা জানান। একই অভিযোগ করেন আপের রাজ্যসভার সাংসদ রাঘব চড্ডা। এমনকী, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও সাংবাদিক বৈঠক করে অভিযোগ করেন যে, প্রধানমন্ত্রী মোদীর ‘ঘনিষ্ঠ’ শিল্পপতি গৌতম আদানির বিরুদ্ধে যে সাংসদেরা সরব, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্ত্রক তাঁদের ফোন হ্যাক করছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত সংসদের স্ট্যান্ডিং কমিটি অ্যাপলের প্রতিনিধিকে ডাকার ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে। তার মধ্যে লোকসভার স্পিকারকে চিঠি দিয়ে কি চাপ তৈরি করতে চাইলেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ? চিঠিতে মহুয়া লিখেছেন, “২০১৯-’২১ সালের মধ্যে পেগাসাস সফট্অয়্যারের মাধ্যমে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্ট এবং সাংবাদিকদের ‘টার্গেট’ করা হয়েছিল। এই ইস্যু নিয়ে বিরোধীরা সংসদে প্রশ্ন তুলেছিলেন। কিন্তু এখনও কোনও কেন্দ্রীয় সংস্থা তা নিয়ে রিপোর্ট দেয়নি।”
Just written to Hon’ble Speaker @loksabhaspeaker on serious issue of surveillance on Opposition members in violation of Constitutional freedoms & rule of law.@MamataOfficial @abhishekaitc @AITCofficial pic.twitter.com/tqmKpgkNew
— Mahua Moitra (@MahuaMoitra) November 1, 2023
অভিযোগের সুরে চিঠিতে মহুয়া এ-ও লিখেছেন, “গত কয়েক বছর ধরে বিরোধী সাংসদদের গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা এবং বিরোধী কণ্ঠ রোধের চেষ্টা চলছে। তারই উদাহরণ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থার অপব্যবহার এবং বিভিন্ন আইন রদ, সংশোধন এবং প্রণয়নের মাধ্যমে বিরোধী স্বর স্তব্ধের চেষ্টা হয়েছে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়ে জবাবদিহি করার জন্য স্পিকারকে আর্জি জানালেন মহুয়া।
অন্য দিকে, মহুয়ার বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে প্রশ্ন করার অভিযোগ আনা বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবের দাবি, তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা ২০১৫ সালের টাকা নিয়ে প্রশ্ন করার দুর্নীতির চেয়েও বড়। তাঁর কথায়, “১০ হাজার টাকার বিনিময়ে সংসদে প্রশ্ন করায় সাংসদেরা সাসপেন্ড হয়েছিলেন। এই মামলা (মহুয়া) তার চেয়েও গুরুতর।’’ উল্লেখ্য, ২০০৫ সালে টাকা নিয়ে প্রশ্ন করার অভিযোগে যে ১১ জন সাংসদ সাসপেন্ড হন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন বিজেপির ছত্রপাল সিংহ লোধা এবং ওয়াইজি মহাজন। ছিলেন আরজেডি সাংসদ অন্না সাহেব এমকে পাতিল, কংগ্রেস সাংসদ রামসেবক সিংহ, বিএসপি সাংসদ নরেন্দ্র কুমার কুশওয়া প্রমুখ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy