Advertisement
E-Paper

Sougata Roy: ‘ইন্দিরার অনুল্লেখ কংগ্রেসের বিষয়’

একাত্তরের যুদ্ধের সময় প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির নেতৃত্বে কংগ্রেসে যোগ দিয়ে সক্রিয় রাজনীতি শুরু করেছিলেন সৌগত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২১ ০৭:০৪
Share
Save

একাত্তরের যুদ্ধে সাফল্যের সুবর্ণজন্তী পালন করল নরেন্দ্র মোদী সরকার, কিন্তু ইন্দিরা গাঁধীর নাম উচ্চারণটুকুও করা হয়নি। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের বিজয় দিবসের দিন এ জন্য ক্ষোভে ফেটে পড়েন কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাঁদের বক্তব্য— এ যেন রামকে বাদ দিয়ে রামায়ণ লেখা। কিন্তু এ ব্যাপারে মৌনী কংগ্রেস ভেঙে তৈরি হওয়া তৃণমূল কংগ্রেস, এনসিপি অথবা ইউপিএ-র অন্য শরিক এবং বামেরা। এই ‘নীরবতা’র ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে অকংগ্রেসি বিরোধী দলগুলির বক্তব্যের নির্যাস— ‘বিষয়টি একান্তই কংগ্রেসের। এ নিয়ে তাদেরই সরব হওয়ার কথা এবং তারা হয়েছেও।’ তবে ইন্দিরার অনুল্লেখে ‘ব্যক্তিগত ভাবে’ খারাপ লাগার কথা জানিয়েছেন তৃণমূলের সাংসদ সৌগত রায়।

একাত্তরের যুদ্ধের সময় প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির নেতৃত্বে কংগ্রেসে যোগ দিয়ে সক্রিয় রাজনীতি শুরু করেছিলেন সৌগত। জানাচ্ছেন, “কলকাতায় যে জনসভাটি অর্ধসমাপ্ত রেখে ইন্দিরা রাজভবন হয়ে দিল্লিতে ফিরে যান, সেটিতে আমিও উপস্থিত ছিলাম। মুক্তিযুদ্ধে তাঁর ভূমিকার আমরা সাক্ষী। ফলে মোদী সরকার যখন এই প্রসঙ্গে তাঁর নাম উল্লেখ করছে না তখন ব্যক্তিগত ভাবে আমার খুবই খারাপ লেগেছে।” সৌগতবাবুর কথায়, “ইন্দিরা গাঁধীকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশ যুদ্ধ নিয়ে কোনও আলোচনাই এগোতে পারে না। আমরা চোখের সামনে দেখেছি তাঁর নেতৃত্ব। কী ভাবে উদ্বাস্তুদের তিনি গ্রহণ করেছিলেন। বেশির ভাগই তো এসেছিল পশ্চিমবঙ্গে। গোটা বিশ্ব ঘুরে সমর্থন তৈরি করেছিলেন ইন্দিরা। তখন প্রিয়দা সরাসরি যোগাযোগ রাখতেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। তাঁর মাধ্যমে আমরা খবর পেতাম।”

এতটাই আবেগ জড়িয়ে থাকা সত্ত্বেও কেন বিজয় দিবসের দিন বিজেপির ভূমিকার সমালোচনা করলেন না সৌগত? বললেন, “কংগ্রেস নিজে থেকে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, কারণ বিষয়টি সরাসরি তাদের। আমরা দলগত ভাবে কী বলব তা তো আমি ঠিক করি না, দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব স্থির করেন। তবে এ বিষয়ে আজ প্রশ্ন করায় এই প্রতিক্রিয়া দিলাম। গত কাল করলেও একই কথা বলতাম।” এনসিপি, ডিএমকে, শিবসেনা বলছে, এটা কংগ্রেসের বিষয় এবং তারা যা বলার তো বলছেই। তাঁদের বক্তব্য, “বিজেপি দীর্ঘদিন ধরেই কংগ্রেসের রাজনৈতিক ইতিহাস মুছে দেওয়ার চেষ্টা করছে। বিজেপি সেটাই করে। কিন্তু এটা কংগ্রেসের দায়। নিজের ইতিহাস টিকিয়ে রাখতে কংগ্রেসকেই রাজনৈতিক ভাবে আরও সক্রিয় হতে হবে।’ সিপিএমের পলিটবুরো সদস্য বৃন্দা কারাট বলেন, “আমরা এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করছি না। আমাদের মনে হয়, বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতার যুদ্ধ করেছিলেন। সমস্ত কৃতিত্ব তাঁদেরই পাওয়া উচিত। এ বিষয়ে কৃতিত্ব নেওয়ার লড়াই করাটা ঠিক নয়।” ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে আন্দোলন, ধর্নায় কংগ্রেসের উদাসীন ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন বামেরা। তাঁদের বক্তব্য, ইন্দিরা গাঁধীই ব্যাঙ্ক জাতীয়করণ করেছিলেন। কংগ্রেসের উচিত ছিল আরও শক্ত ভাবে ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো।

আবার কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা কর্ণ সিংহ আজ বিবৃতি দিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ইন্দিরা গাঁধীর ভূমিকা বিশদে তুলে ধরেছেন। তিনি বলছেন, “লোকসভায় সেই দিনটির স্মৃতি আমার কাছে অমলিন। ইন্দিরা গাঁধী সাধারণত আবেগ প্রকাশ করতেন না। কিন্তু সে দিন তার মুখচোখে উত্তেজনার ছাপ ছিল স্পষ্ট। দৌড়ে এসে তিনি নিজের আসনে বসলেন, আমার আসনটি ছিল তাঁর ঠিক পিছনে। তিনি প্রবেশ করতেই গোটা অধিবেশন কক্ষ চুপ। ইন্দিরাজি উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, মাননীয় স্পিকার মহোদয়, ‘ভারতীয় সেনা এবং মুক্তিবাহিনী ঢাকার দখল নিয়ে নিয়েছে।’ গোটা লোকসভা হর্ষে ফেটে পড়ল।” কর্ণ সিংহ এ কথাও মনে করিয়ে দেন, ‘ইন্দিরা গাঁধীর ভূমিকাকে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন বিরোধী নেতা অটলবিহারী বাজপেয়ী, তাঁকে ‘দূর্গা’ বলে অভিহিত করে।’

অটলবিহারী বাজপেয়ীর মতো শীর্ষ বিজেপি নেতা যেখানে ইন্দিরাকে ‘দুর্গা’ বলেছিলেন, সেখানে তাঁরই দল ইন্দিরাকে অস্বীকার করছে? এই প্রসঙ্গে এক বিজেপি নেতার বক্তব্য, “একাত্তরের যুদ্ধ কোনও ব্যক্তির কৃতিত্ব নয়। গোটা দেশ বাংলাদেশের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সেটাই তুলে ধরছেন। কংগ্রেসই বরং যুদ্ধের সব কৃতিত্ব গাঁধী পরিবারকে দিতে চাইছে।” অনেকে বলছেন, বাজপেয়ীর ‘দুর্গা’ সম্বোধনের সমর্থনে গত পঞ্চাশ বছরে কখনওই উচ্চবাচ্য করতে শোনা যায়নি বিজেপির কোনও শীর্ষ নেতাকে।

Congress Indira Gandhi Sougata Roy

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।