পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত ওয়াকফ সম্পত্তিতে বদল ঘটানো যাবে না বলে কেন্দ্রকে জানিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ওয়াকফ বোর্ড নিয়োগেও রয়েছে আপাতত নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের লক্ষ্য, এটিকে রাজনৈতিক আক্রমণের অস্ত্র হিসেবে শাণিত করে জিইয়ে রাখা। সংশ্লিষ্ট শিবিরের মতে, আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা ভোট। তার আগে তৃণমূলের লক্ষ্য, রাজ্যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোটকে এক এবং একটি মাত্র ছাতার তলায় নিয়ে আসার চেষ্টা করা। সেই কাজে ওয়াকফ বিতর্ক নিঃসন্দেহে বিজেপি বিরোধিতার একটি বড় আয়ুধ দলের।
আজ দলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন এ ব্যাপারে একটি ভাষ্য তৈরি করেছেন। জানিয়েছেন, ওয়াকফের সংশোধিত বিলটি শুধুমাত্র ‘জমি বা আইনের বিষয়’ নয়। বরং মানুষের ‘মর্যাদাহানি, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠানোর বিরোধিতা, ব্যক্তিস্বাধীনতা এবং একটি বিশেষ ধর্মের প্রতি অসূয়াসঞ্জাত’। তাঁর কথায়, “আমি কি যথেষ্ট পরিমাণে ভারতীয়? আমাদের অনেককেই এই প্রশ্ন নিজেকে করতে হয়নি এর আগে। কিন্তু লাখ লাখ ভারতবাসী, বিশেষ যাঁরা সংখ্যালঘু এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর, তাঁদের কাছে আজ এটা শুধুমাত্র কথার কথা নয়। এটা বাস্তব। তাঁদের যথাসর্বস্বের প্রতি গভীর সন্দেহের বীজ বুনে দেওয়া হয়েছে।”
ডেরেকের বক্তব্য, “সংবিধান অনুযায়ী জমি রাজ্যের তালিকাভুক্ত। কাল যদি কেন্দ্রীয় সরকার হিন্দু মন্দিরের বোর্ড হাতে নিয়ে নেয়, কে আটকাতে পারবে? বা গির্জার জমি? এটা সংস্কারের বিষয় নয়, আসল বিষয় হল তারা নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে, কর্তৃত্ব ফলাতে চাইছে। যা সরাসরি ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় আঘাত হানারই সামিল।” ওয়াকফ আইন যে এই মুহূর্তে সুপ্রিম কোর্ট খতিয়ে দেখছে সে কথা উল্লেখ করে তৃণমূল নেতার বক্তব্য, “এই আইন সংবিধান বর্ণিত সমান অধিকারকে লঙ্ঘন করছে। ব্যক্তিগত স্বাধীনতা এবং এই দেশের মৌলিক আদর্শকেও লঙ্ঘন করছে।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)