Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Congress

Ghulam Nabi Azad: আজাদ কংগ্রেস ছাড়তেই আক্রমণ বাড়াল তৃণমূল

রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, গুলাম নবির কড়া শব্দের চিঠির পরে দৃশ্যতই কোণঠাসা কংগ্রেসকে আরও চাপে রাখতে কোনও পথ ছাড়বে না তৃণমূল।

গুলাম নবি আজাদ।

গুলাম নবি আজাদ। ফাইল চিত্র।

অগ্নি রায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২২ ০৭:২৪
Share: Save:

গুলাম নবি আজাদ কংগ্রেস ছাড়ার পরে শনিবার সরব হল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। ১৯৮২ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে কংগ্রেস ছেড়ে ‘অন্য দল’ গড়া (গুলামও যা করতে চলেছেন) নেতাদের প্রসঙ্গ তুলে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের বক্তব্য, একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই পেরেছেন কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে আলাদা দল গড়ে নিজের রাজ্য থেকে কংগ্রেসকে ধুয়েমুছে সাফ করে দিতে। বাকিরা প্রায় সবাই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সমঝোতা করে কংগ্রেসে মিশে গিয়েছেন, অথবা কংগ্রেসের সহায়ক হয়ে থেকেছেন। তৃণমূলের বক্তব্য, এই শেষ তালিকায় রয়েছেন এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পওয়ার। যিনি এখন ‘অক্সিজেন সিলিন্ডার’ নিয়ে রাজনৈতিক অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে কংগ্রেসের দ্বারে।

তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন, গুলাম নবি আজাদের পদত্যাগের পরে দ্রুত কংগ্রেসে ওয়াপসির একটি তালিকা তৈরি করেছেন। তাঁর কথায়, “বড় নেতাদের মধ্যে একমাত্র গুলাম নবি পদত্যাগ করলেন। অন্য নেতাদের দল বহিষ্কার করার পরে তাঁরা নতুন দল গড়েছেন এবং কিছু দিন পর ফিরেছেন কংগ্রেসেই।” ডেরেকের বক্তব্য, “১৯৯৯ সালে অনেক বড় বড় কথা বলে পওয়ার কংগ্রেস ছেড়েছিলেন। আজ তাঁর পরিণতি কী হয়েছে? নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে ছুটে এসেছেন কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়তে। অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে কংগ্রেসের দ্বারস্থ মহারাষ্ট্রে!” পাশাপাশি নিজের দলের নেত্রীর প্রসঙ্গে ডেরেকের বক্তব্য, “একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯৯৭ সালে কংগ্রেস ছাড়ার পরে ফেরার চেষ্টাই করেননি। শুধু তা-ই নয়, পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসকে শূন্যে নামিয়ে এনেছেন। গত এগারো বছর কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখেননি তিনি। এই দাপটের প্রকাশ দেখা যাবে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে। ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে ৪২টি আসনে একা লড়বে তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই এখন মূল বিরোধী শক্তি, কংগ্রেস তার ছায়া মাত্র।”

১৯৮২ সালে এ কে অ্যান্টনি কংগ্রেস থেকে বিতাড়িত হয়ে গড়েছিলেন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস(এ)। ১৯৮৬-তে প্রণব মুখোপাধ্যায় তৈরি করেন রাষ্ট্রীয় সমাজবাদী কংগ্রেস। ১৯৯৬-এ মধ্যপ্রদেশ বিকাশ কংগ্রেস গড়েন মাধব রাও সিন্ধিয়া। ১৯৯৭-এ সুখরাম হিমাচল বিকাশ কংগ্রেস গড়েন। ওই বছরই মমতার নেতৃত্বে তৈরি হয় তৃণমূল কংগ্রেস। ২০০১ সালে কংগ্রেস ছেড়ে কংগ্রেস ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট তৈরি করেন পি চিদম্বরম। ১৯৯৯–এ শরদ পওয়ার তৈরি করেন এনসিপি।

তবে ঘটনা হল, কংগ্রেস ভেঙে তৈরি হওয়া কিছু আঞ্চলিক দল তৃণমূলের মতো সাফল্য না পেলেও আঞ্চলিক দল হিসাবে টিকে রয়েছে। জগন্মোহন রেড্ডি যেমন নতুন দল গড়ে এখন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। সেই দলগুলি কংগ্রেসে তো ফেরেইনি, বরং বিজেপির সঙ্গে তলে তলে সমঝোতা করে চলে বলেই বিরোধীদের একাংশের মতামত। ১৯৯৯ সালে মুফতি মহম্মদ সইদ কংগ্রেস ছেড়ে জম্মু-কাশ্মীরে পিডিপি গড়েছিলেন। তেলঙ্গানার বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলেন যুব কংগ্রেস থেকে।

রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, গুলাম নবির কড়া শব্দের চিঠির পরে দৃশ্যতই কোণঠাসা কংগ্রেসকে আরও চাপে রাখতে কোনও পথ ছাড়বে না তৃণমূল। ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের আগে লড়াইটা যাতে মোদী বনাম কংগ্রেস না হয়, তা নিশ্চিত করতে এখন থেকেই প্রাথমিক চিন্তাভাবনা শুরু করেছে দল। বলা হচ্ছে, লড়াইটা হবে রাজ্যে রাজ্যে বিজেপির সঙ্গে আঞ্চলিক দলগুলির। মোদী বনাম রাহুল গান্ধী মডেলটাই যে ব্যর্থ, সেই ইঙ্গিতও দেওয়া হচ্ছে। তাই বিজেপিকে রোখার যে কোনও লড়াইয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্ব দানের ভূমিকা যে শ্রেষ্ঠতর, জাতীয় বিরোধী রাজনীতির মঞ্চে তা তুলে ধরাটাই লক্ষ্য তৃণমূলের।

অন্য বিষয়গুলি:

Congress Gulam Nabi Azad TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE