Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Tripura

TMC in Tripura: বিজেপিতে বিদ্রোহের সুরই প্রধান হাতিয়ার তৃণমূলের

কংগ্রেস থেকে তৃণমূল হয়ে বিজেপিতে যাওয়া সুদীপের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের সম্পর্ক কত ‘মধুর’, ত্রিপুরা রাজনীতিতে তা সুবিদিত।

ফাইল চিত্র।

সন্দীপন চক্রবর্তী
আগরতলা শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২১ ০৬:৫৬
Share: Save:

নাম না করে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করলেন তাঁর দলেরই বিধায়ক ও প্রাক্তন মন্ত্রী। সরব হলেন পুরভোটকে ‘প্রহসনে’ পরিণত করার বিরুদ্ধে। আর বিজেপি নেতার ওই বক্তব্যকে বিজেপির বিরুদ্ধেই হাতিয়ার হিসেবে তুলে নিল তৃণমূল কংগ্রেস। পুরভোটের মাত্র ৪৮ ঘণ্টা আগে অস্বস্তি বাড়ল বিজেপি শিবিরে।

দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়লেও সুদীপ রায়বর্মণ এখনও বিজেপির বিধায়ক। আর এক বিধায়ক আশিস সাহাকে পাশে নিয়ে সুদীপ মঙ্গলবার তোপ দেগেছেন, ‘‘বিজেপির মূল মন্ত্র সব কা সাথ, সব কা বিকাশ, সব কা বিশ্বাস। যদি বিশ্বাসের উপরে ভোট হত, তা হলে সন্ত্রাস করতে হত না! কিন্তু বিজেপির মূল চিন্তাধারার বিপরীতে গিয়ে রাজ্যে দল পরিচালনা করা হচ্ছে। এক জন প্যারাট্রুপ্‌ড লিডারের জন্য দেশের প্রধানমন্ত্রীর বদনাম হচ্ছে।’’ তাঁর আরও কটাক্ষ, ‘‘শিশুসুলভ নেতৃত্ব! আসল শত্রুকে চিনতে পারছে না।’’

কংগ্রেস থেকে তৃণমূল হয়ে বিজেপিতে যাওয়া সুদীপের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের সম্পর্ক কত ‘মধুর’, ত্রিপুরা রাজনীতিতে তা সুবিদিত। পুরভোটের মুখে রাজ্য বিজেপির ‘সন্ত্রাসের’ বিরুদ্ধে গলা চড়িয়ে সুদীপ যে বিপ্লবকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন, তা নিয়েও কারও কোনও সংশয় নেই। সুদীপের দাবি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বদনাম হতে দেখে ‘ব্যথিত’ হয়ে এবং দলের যে সব নেতা-কর্মীরা পীড়িত হয়েও কিছু বলতে পারছেন না, তাঁদের হয়ে তিনি মুখ খুলেছেন। দলকে অস্ব্স্তিতে ফেলার জন্য নয়।

বিজেপির রাজ্য মুখপাত্র সুব্রত চক্রবর্তী অবশ্য বুঝিয়ে দিয়েছেন, পুরভোটের পরেই পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে বিশ্লেষণ করে গঠনতন্ত্র অনুসারে সুদীপদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সুদীপের বিরুদ্ধে অনেক দিন ধরেই অভিযোগ জমা পড়ছিল বলে সুব্রতের দাবি। সুদীপদের নাম না করলেও মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব এ দিন ‘মিরজাফর-জয়চাঁদ’ প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন। এক সাক্ষাৎকারে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘মিরজাফর, জয়চাঁদদের চেনাতে হয় না। তাঁরাই নিজেদের চিনিয়ে দেন! আমি এইটুকুই বলব, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব প্রথমে দলের রাজ্য সভাপতি এবং পরে সরকার চালানোর দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি গ্রামের ছেলে। যা করেছি, মানুষের সামনেই সব আছে। তাঁরাই রায় দেবেন।’’

সুদীপের কথায় তাদের বক্তব্যের ‘মান্যতাই’ দেখছে তৃণমূল। বাংলার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এ দিন আগরতলায় বলেছেন, ‘‘ত্রিপুরার অভিজ্ঞ বিজেপি নেতা সুদীপ যা বলেছেন, তাকে স্বাগত জানাচ্ছি। তিনি বলতে চেয়েছেন, ত্রিপুরায় একটি গুন্ডার দল বিজেপি। তিনি আরও বলতে চেয়েছেন, এই সরকার চলছে শিশুসুলভ নেতৃত্বে। মাথায় বসে আছে খোকা বিপ্লব, খুকু প্রতিমা ( ভৌমিক)! মানে খোকা-খুকুর দল প্রধানত ডানপিটে, হার্মাদ এবং বজ্জাত!’’ তাঁর আরও মন্তব্য, ‘‘আমরা এত দিন যেটা বলছিলাম, সেটা সুদীপ বলেছেন। বিজেপি ওঁকে বহিষ্কার করে দেখাক! তা হলে বুঝব মুরোদ আছে!’’ পাশে দাঁড়িয়ে বাংলার তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের সংযোজন, ‘‘বাংলায় গো-হারা হারের পরে ত্রিপুরায় পরাজয়ের ভূত দেখছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তাই গুন্ডারাজকে নীরবে মদত দিয়ে মুখরক্ষার চেষ্টা করছেন ওঁরা।’’

সূত্রের খবর, বিজেপিতে ‘বিক্ষুব্ধ ও বেসুরো’ সুদীপের তৃণমূলে ফিরে যাওয়া এখন সময়ের অপেক্ষা। রাজনৈতিক শিবিরের অনেকের মতে, বাংলায় বিধানসভা ভোটের আগে শাসক তৃণমূলে ‘বেসুরের’ ফায়দা নিতে যে ভবে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বিজেপি, উল্টো দিক থেকে একই ঘটনা এখন ঘটছে উত্তর-পূর্বের ত্রিপুরায়!

সুদীপ এ দিন অভিযোগ করেছেন, সিপিএমের গুন্ডাবাহিনীকে বিজেপিতে নিয়ে এসেছেন প্যারাট্রুপারে নেমে আসা নেতা! তারাই পুরভোটকে প্রহসনে পরিণত করতে চাইছে। পুলিশ ঠুঁটো জগন্নাথ, বিরক্তও বটে। গণতন্ত্রের ছিটেফোঁটাও থাকছে না। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা, সাধারণ সম্পাদক বি এল সন্তোষ এবং অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাকে গোটা পরিস্থিতি জানিয়েছেন সুদীপ। বামফ্রন্ট আমলে যেমন উৎসবের মেজাজে ভোট হত, সে ভাবেই বেরিয়ে এসে মানুষকে পুর-নির্বাচনে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

অন্য বিষয়গুলি:

Tripura TMC BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy