ফাইল চিত্র।
সংসদের সেন্ট্রাল হলে আজ রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার সময়ে কংগ্রেস সাংসদেরা এসেছিলেন হাতে কালো ব্যান্ড পরে। তৃণমূল সাংসদদের হাতে ছিল সাদা রুমাল— তাতে লাল অক্ষরে লেখা ‘নো সিএএ, নো এনআরসি’। কেউ কেউ জামাতেও লিখে এনেছিলেন ওই স্লোগান। সরকারের আনা ‘সাম্প্রদায়িক’ আইনের বিরুদ্ধে আজ সকালে সংসদের গাঁধীমূর্তির পাদদেশে অন্যান্য বিরোধী দলকে সঙ্গে নিয়ে ধর্না-বিক্ষোভ করেন কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গাঁধী। কিন্তু সেখানে উল্লেখযোগ্য অনুপস্থিতি তৃণমূলের। সূত্রের খবর, গত কাল রাতেই কংগ্রেসের তরফ থেকে তৃণমূলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল সংসদ চত্বরে সরকার-বিরোধী এই ধর্নায় শামিল হতে। কিন্তু ‘শেষ মুহূর্তের’ এই আহ্বান ফিরিয়ে দেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
সব মিলিয়ে সংসদের বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিনেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিজেপি-বিরোধিতার রাস্তায় এ বার হাঁটবে না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। দলীয় সূত্রের বক্তব্য, নোট বাতিলের পরে যে ভাবে প্রথমেই আন্দোলনের রাশ নিজের হাতে নিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী, এ ক্ষেত্রেও নয়া নাগরিকত্ব আইন এবং এনআরসি-র প্রতিবাদে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে গোড়া থেকে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় তিনিই। ফলে এই বিরোধিতার রাজনৈতিক পরিসর এবং নেতৃত্ব কংগ্রেস বা অন্য কাউকে ছেড়ে দেওয়ার কোনও প্রশ্নই উঠছে না। মোদী সরকারের বিরোধিতা করা হবে, কিন্তু তা করা হবে পৃথক ভাবে নিজেদের স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে।
আজ রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার সময়ে সেই ‘স্বাতন্ত্র্য’ অবশ্য কিছুটা চমকে দিয়েছে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বকে। তৃণমূল সূত্রে জানানো হয়, মমতা দিন দশেক আগেই আজকের দিনটির প্রতিবাদ জানানোর কৌশল স্থির করে সেই মতো নির্দেশ দিয়েছিলেন সংসদীয় নেতৃত্বকে। প্রথমেই স্থির হয়, রাষ্ট্রপতির সংসদীয় গরিমাকে অক্ষুণ্ণ রাখতে বিক্ষোভ জানানো হবে নিঃশব্দে। তাঁর নির্দেশে কলকাতা থেকে বানিয়ে আনা শাদা শার্ট পরেন তৃণমূল সাংসদ দোলা সেন, যেখানে এনআরসি-বিরোধিতার স্লোগান লাল অক্ষরে ক্যালিগ্রাফি করা। উপরে কোট পরে থাকায় প্রথমে যা কেউ বুঝতে পারেননি। অন্যরা পকেটে রাখেন ওই একই ডিজাইনের রুমাল।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, বিরোধী ঐক্যে ‘ফাটল’ ধরিয়ে, তৃণমূল পৃথক ভাবে এই কর্মসূচি রাখায় ক্ষুব্ধ সনিয়া-রাহুল গাঁধীরা। গত মাসের ১৩ তারিখে নয়াদিল্লিতে সনিয়ার ডাকা বিরোধী সমাবেশ নিয়ে প্রথমে উৎসাহ দেখিয়েও পরে যাননি মমতা। কংগ্রেসের একাংশ থেকে এমন অভিযোগও তোলা হচ্ছে, বিরোধী ঐক্যকে জমাট বাঁধতে না দিয়ে বিজেপিকে বার্তা দিতে চাইছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। কংগ্রেস ও বাম নেতাদের মতে, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার চাপ তৃণমূলের উপরেও কম নেই।
তৃণমূলের পক্ষ থেকে অবশ্য এই ধরনের অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এক নেতার কথায়, ‘‘লোকসভা এবং রাজ্যসভা মিলিয়ে তৃণমূলের যে সংখ্যা রয়েছে, তাতে আমরা নিজেদের মতো করে বিরোধিতা চালিয়ে যাব। এনআরসি নিয়ে মমতা আন্দোলনের রাস্তা দেখিয়েছেন। আমাদের সঙ্গে যাঁরা আসতে চান তাঁরা স্বাগত।’’ তৃণমূল সূত্রের খবর, আপাতত একটি অ-কংগ্রেস অ-বিজেপি কক্ষ সমন্বয়ের নেতৃত্ব দেওয়ার কথাই ভাবছে তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy