এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পওয়ার। ফাইল চিত্র।
এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পওয়ার মনে করেন— জাতীয় স্বার্থে কংগ্রেসের সঙ্গে মতপার্থক্য সরিয়ে রেখে ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের আগে বিরোধী জোট গড়তে এগিয়ে আসবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য বৃহস্পতিবার পওয়ারের এই পর্যবেক্ষণ কার্যত উড়িয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ‘ভারত জোড়ো’ যাত্রার ফাঁকে সমস্ত বিরোধী দলকে একজোট হওয়ার ডাক দিয়েছেন। রাহুলের মতে, মতাদর্শ, আর্থিক ক্ষমতা এবং প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষমতার প্রয়োজনেই সব বিরোধী দলের উচিত অভিন্ন মঞ্চে এসে দাঁড়ানো।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথাবার্তায় বুধবার পওয়ার বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যক্তিগত ভাবে জানিয়েছেন, শাসক বিজেপির সামনে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়ার জন্য জাতীয় স্বার্থে তাঁর দল কংগ্রেসের সঙ্গে যৌথ ভাবে কাজ করতে প্রস্তুত।” পওয়ারের মতে, পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁদের লড়াইয়ের অভিজ্ঞতাকেও ভুলে যেতে রাজি মমতা।
শরদ পওয়ারের এই মন্তব্যকে কার্যত ব্যঙ্গ করেছেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। পওয়ারকে রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী করানোর জন্য যিনি সব চেয়ে সক্রিয় ছিলেন, তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন আজ পওয়ার সম্পর্কে বলেছেন, “গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল!” তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, রাষ্ট্রপতি নিবার্চনের সময়ে তাঁদের কার্যত ল্যাজে খেলিয়েছেন পওয়ার। শেষ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ভয়ে পিছিয়ে গিয়েছেন। এখনও পওয়ার আবার সক্রিয় হয়েছেন আগামী ২৫ তারিখ হরিয়ানার ফতেহাবাদ-এ আইএনএলডি-র ডাকা বিরোধী সমাবেশের আগে। দেখাতে চাইছেন বিরোধী ঐক্য তৈরিতে তিনি কত আন্তরিক।
তৃণমূলের শীর্ষ নেতার বক্তব্য, “উনি মাতব্বরি করে আসলে কংগ্রেস এবং সিপিএমকে সাহায্য করতে চাইছেন। শরদ পওয়ার এক সময়ে আমাদের বলেছিলেন, নিজের মুখে নিজের নাম রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসাবে প্রস্তাব করা বাঞ্চনীয় নয়। তাই তৃণমূলকে অনুরোধ করেছিলেন বৈঠক ডাকতে। মমতা দিল্লি ছুটে যান পওয়ারের কথায়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে তাঁর দলেরই এক নেতা পওয়ারকে সরে দাঁড়াতে বলেন। তিনি প্রার্থী হলে সিবিআই-এর খপ্পরে পড়ার ভয় দেখান। মুখ পোড়ে আমাদের।” তৃণমূল নেতার বক্তব্য, “উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময়েও পওয়ার ফের চেষ্টা করেন বিরোধী অভিভাবকের ভূমিকা নিতে। তিনি এবং কংগ্রেসের জয়রাম রমেশ ধরেই নিয়েছিলেন মার্গারেট আলভার নামে আমরা সম্মত হয়ই যাব।”
আগামী ২৫ তারিখ ওমপ্রকাশ চৌটালার আয়োজনে ফতেহাবাদ যাচ্ছেন সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরি। যাওয়ার কথা রয়েছে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারেরও। প্রথমে স্থির ছিল তৃণমূলের পক্ষ থেকে পাঠানো হবে দলের রাজ্যসভার মুখ্য সচেতক সুখেন্দুশেখর রায়কে। কিন্তু অনিবার্য কারণে তিনি যেতে পারছেন না। সুখেন্দুশেখরের বদলে কাকে পাঠানো হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে দলের অন্দরে। সূত্রের খবর, এই বৈঠকটিকে খুব বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে না তৃণমূল একাধিক কারণে। আইএনএলডি নেতা চৌটালার রাজনৈতিক বিশ্বাসযোগ্যতা, বিরোধী জোটে তাঁর ভূমিকা এবং পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি– সবকটাই প্রশ্নের মুখে বলে মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি তৃণমূলের বিশ্বাস, এই বিরোধী সমাবেশে কংগ্রেস নেই ঠিকই, তবে বাম দলগুলির হয়ে ব্যাট করছেন পওয়ার। চাইছেন বিরোধী নেতৃত্বে নিজের বিশ্বাস অর্জন করতে। আর কংগ্রেসের মতো সিপিএমের প্রতিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের ‘অ্যালার্জি’ সমমাত্রার।
অন্য দিকে আজ ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’-র ফাঁকে কেরলে রাহুল গান্ধী বলেন, “আমি মনে করি, বিরোধীদের একসঙ্গে আসাটা খুবই জরুরি। আমি চাই এ বিষয়ে বিরোধী দলগুলির মধ্যে আলোচনা হোক, রণকৌশল তৈরি করা হোক।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমরা এমন এক যন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়ছি, যারা সমস্ত প্রতিষ্ঠান দখল করে ফেলেছে। যাদের সীমাহীন অর্থ রয়েছে। মানুষকে চাপ দেওয়ার, লোককে কিনে নেওয়ার, হুমকি দেওয়ার সীমাহীন ক্ষমতা রয়েছে। যার ফল সম্প্রতি গোয়ায় দেখা গিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy