অধীর রঞ্জন চৌধুরী এবং অপরূপা পোদ্দার। —ফাইল চিত্র।
দিল্লির বিজেপি সাংসদ রমেশ বিদুরির বিএসপি সাংসদ দানিশ আলিকে কুরুচিকর আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানালো জোট ‘ইন্ডিয়া’র দুই শরিক। শুক্রবার লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে এই সংক্রান্ত বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে চিঠি দেন কংগ্রেসের সংসদীয় দলের নেতা অধীর চৌধুরী। একই ভাবে তৃণমূলের তরফে প্রতিবাদ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন আরামবাগের তৃণমূল সাংসদ অপরূপা পোদ্দার। তবে অপরূপা চিঠি দিয়েছেন লোকসভার সচিবালয়কে। অধীর ও অপরূপা পৃথক ভাবে চিঠি দিলেও তাদের দাবি এক। দু’জনেই দাবি করেছেন, বিএসপি সাংসদের বিরুদ্ধে যে ভাবে কুরুচিকর ও অবমাননাপূর্ণ মন্তব্য করেছেন বিজেপি সাংসদ রমেশ। এই বিষয়টি লোকসভার শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির কাছে বিবেচনার জন্য পাঠানো উচিত। এই ধরনের ঘটনা যে লোকসভার ইতিহাসে নজিরবিহীন, তা-ও উভয়ের চিঠিতেই উল্লেখ রয়েছে।
লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা হিসাবে অধীর লিখেছেন, বিজেপি সাংসদের অবমাননাকর মন্তব্য সংবাদপত্র, বৈদ্যুতিন মাধ্যম ও বিভিন্ন মাধ্যম মারফত সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। যা সামাজে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। সংসদের গরিমা বজায় রাখতে বিজেপি সাংসদ রমেশের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আর আর্জি জানিয়েছেন তিনি। আরামবাগের তৃণমূল সাংসদ নিজের চিঠিতে বিজেপি সাংসদ রমেশের করা মন্তব্যের প্রতিটি শব্দ তুলে ধরেছেন। সঙ্গে লিখেছেন, বিজেপি সাংসদদের অসংসদীয় মন্তব্য দেশের লোকসভার গরিমাকে ক্ষুন্ন করেছে। তাই বিষয়টি অবিলম্বে সংসদের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির কাছে পাঠিয়ে উচিত ব্যবস্থা নেওয়া হোক। জোট ইন্ডিয়ার মঞ্চে কংগ্রেস ও তৃণমূল উভয় বিজেপির বিরুদ্ধে হলেও, বাংলার রাজনীতিতে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর বরাবরই তৃণমূল সরকার ও নেতৃত্বে তীব্র সমালোচক। কিন্তু সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিএসপি সাংসদদের এ হেন অবমাননাই অধীর ও তৃণমূলকে এক বিন্দুতে নিয়ে এসেছে বলেই মনে করছেন জাতীয় রাজনীতির কারবারিরদের একাংশ।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার লোকসভায় চন্দ্রযান-৩-এর সাফল্য নিয়ে আলোচনা চলাকালীন বাগ্বিতণ্ডা শুরু হয় বিজেপি সাংসদ রমেশ ও বিএসপি সাংসদ দানিশের মধ্যে। সেই সময় দানিশকে উদ্দেশ্যে করে বিজেপি সাংসদ রমেশ অসংসদীয় শব্দ ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ ওঠে। তারপরেই এই মন্তব্যের নিন্দা করে সরব হয় সব বিরোধী দলগুলি। সেই সময় লোকসভার অধিবেশন টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার চলছিল। তাতে দিল্লির বিজেপি সাংসদের অসংসদীয় শব্দ উচ্চারণ স্পষ্ট শোনা যায়। বিজেপি সাংসদ বিদুরি যখন এই বিতর্কিত মন্তব্য করেন, সেই সময় স্পিকারের চেয়ারে ছিলেন কংগ্রেস সাংসদ কোডিকুনাল সুরেশ। অসংসদীয় ও অবমাননাকর মন্তব্যের জন্য বিজেপি সাংসদের কড়া নিন্দা করেন তিনি। সেই সঙ্গে বিতর্কিত মন্তব্যগুলি লোকসভার রেকর্ড থেকে মুছে ফেলার নির্দেশ দেন। দলীয় সাংসদের এ হেন মন্তব্য নিয়ে চুপ বিজেপি সাংসদরা। রমেশের মন্তব্যের জন্য দলের তরফে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে শুক্রবার দিনভর বিরোধীদের নিশানায় ছিল বিজেপি। যদিও রমেশের মন্তব্যের জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy