Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Tiger in UP village

তুমি যে এ পাঁচিলে কে তা জানত… উবু হয়ে রোদ পোহাচ্ছে বাঘ, তোয়াক্কা নেই ভিড়-হট্টগোলেও!

এলাকায় বাঘ ঢুকেছে। আরাম করে শুয়ে আছে পাঁচিলের উপর। ব্যস, ওই খবরেই আতঙ্ক ছড়াল গোটা গ্রামে। বাঘের আতঙ্কে সারা রাত ধরে ঘুম উবে গেল গোটা গ্রামের। খবর দেওয়া হল বন দফতরেও।

পাঁচিলের উপর রোদ পোহাচ্ছে  সেই বাঘ। ছবি: এক্স।

পাঁচিলের উপর রোদ পোহাচ্ছে সেই বাঘ। ছবি: এক্স।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৩:৫৯
Share: Save:

রাতেই সে ঢুকে পড়েছিল লোকালয়ে। সকলের অলক্ষ্যে চুপি চুপি আশ্রয় নিয়েছিল একটি বাড়ির পাঁচিলের উপরে। আশপাশের কেউ টেরই পায়নি যে, এক নতুন ‘অতিথি’ পাড়ায় এসেছে। কিন্তু নিজেকে অবশ্য বেশি ক্ষণ আড়াল করে রাখতে পারেনি সে। প্রথম নজর পড়েছিল বাড়ির মালিকেরই। হাত কয়েক দূরেই বিশাল চেহারার এক বাঘকে দেখে তাঁর প্রায় জ্ঞান হারানোর অবস্থা হয়েছিল। নিজেকে কোনও রকমে সামলে বাড়ির সকলকে বিষয়টি জানান। তার পর সেই খবর মুহূর্তে দাবানলের মতো গোটা গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে।

এলাকায় বাঘ ঢুকেছে। আরাম করে শুয়ে আছে পাঁচিলের উপর। ব্যস, ওই খবরেই আতঙ্ক ছড়াল গোটা গ্রামে। বাঘের আতঙ্কে সারা রাত ধরে ঘুম উবে গেল গোটা গ্রামের। খবর দেওয়া হয়েছিল বন দফতরে। সেখান থেকে কর্মীরা এসে বাঘটিকে ধরার জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। ওই বাড়ির আশপাশ খালি করে জাল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। বাঘের মুখে চোখে জোরালো আলো ফেলা হয়। কিন্তু তার কোনও হেলদোল নেই। গা এলিয়ে পাঁচিলের উপর ঝিমোচ্ছিল। কিছুতেই পাঁচিল থেকে নড়ানো যায়নি সেটিকে। এ ভাবেই রাত কেটে ভোরের আলো ফোটে। একে একে গ্রামবাসীদের ভিড়ও বাড়তে থাকে। আশপাশের বাড়ির ছাদ ভিড়ে কানায় কানায় পূর্ণ। তার সঙ্গে হট্টগোল। চিৎকার-চেঁচামেচি। কিন্তু কোনও কিছুতেই যেন তোয়াক্কা ছিল না তার। বরং শীতের সকালের হালকা রোদের আলোয় গা সেঁকে নিতেই বেশি ব্যস্ত দেখাল তাকে।

সময় আরও একটু গড়াল। রোদের তেজও বাড়ল। এ বার পাঁচিলে দাঁড়াল সেটি। সদ্য ঘুমভাঙা চোখে একটু আড়মোড়া ভেঙে, আবার গা এলিয়ে দিল পাঁচিলে। এ ভাবেই বাঘের কাণ্ড দেখে সময় কাটতে লাগল গ্রামবাসীদের। একই সঙ্গে ক্ষোভও বাড়তে লাগল বনকর্মীদের বিরুদ্ধে। কেন সারা রাত কেটে গেলেও বাঘটিকে ধরা গেল না, কেনই বা জঙ্গলে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা গেল না? প্রায় ১২ ঘণ্টা পর বাঘটিকে ঘুমপাড়ানি গুলি দিয়ে কাবু করা হয়। তার পর উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়।

সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের পিলিভীটের আটকোণা গ্রামে। তবে বাঘটি কাউকে আক্রমণ করেনি বলে বন দফতর সূত্রে খবর। পিলিভীটে ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। মাঝেমধ্যেই জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে বাঘ। গত চার মাসে বাঘের হামলায় পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছিল। ঘটনাচক্রে, এই পিলিভীটই পশুপ্রেমী তথা বিজেপি নেত্রী মেনকা গান্ধীর ‘গড়’। এখান থেকেই পাঁচ বারের সাংসদ হয়েছেন তিনি। বর্তমানে তাঁর পুত্র বরুণ এই কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ।

পিলিভীটের সাংসদ থাকাকালীন লোকালয়ে বাঘ ঢুকে পড়া, বাঘের হামলায় গ্রামবাসীদের মৃত্যু, কখনও গ্রামবাসীদের হামলায় বাঘের মৃত্যু— এ সব নিয়ে বার বার সরব হয়েছেন মেনকা। পরবর্তী কালে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকেও এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতেও অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু তার পরেও বার বার কেন পিলিভীটে বাঘের হামলা ঘটছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Tiger UP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE