সমুদ্রসৈকত থেকে নিহত কচ্ছপের দেহ সরাচ্ছেন স্থানীয়েরা। ছবি: পিটিআই।
তামিলনাড়ুর চেন্নাই উপকূলে ভেসে এল শয়ে শয়ে মৃত অলিভ রিডলে প্রজাতির কচ্ছপ। প্রশান্ত এবং ভারত মহাসাগরের বাসিন্দা এই কচ্ছপের প্রজাতি ‘বিপদাপন্ন’ বলে চিহ্নিত। অথচ গত এক মাসে চেন্নাইয়ের সমুদ্রসৈকতে ১০০০-রও বেশি মৃত অলিভ রিডলে কচ্ছপ উদ্ধার হয়েছে। এই ঘটনা বন্যপ্রাণী অধিকার কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
এই ধরনের কচ্ছপকে তামিল ভাষায় ‘পাঙ্গুনি আমাই’ বলা হয়। স্থানীয়েরা এদের এই নামেই চেনেন। ১৯৭২ সালের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের অধীনে বিপদাপন্ন এই অলিভ রিডলে প্রজাতির কচ্ছপকে তফসিল ১-র আওতায় রাখা হয়েছে। রাজ্য সরকার এবং স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি দীর্ঘ দিন ধরেই এই প্রজাতিকে সংরক্ষণের চেষ্টা করে আসছে। ডিম সংগ্রহ, ডিম ফুটতে সাহায্য করা থেকে শুরু করে নিরাপদে শাবকগুলিকে সমুদ্রে ছেড়ে দেওয়া— সব চেষ্টাই করে থাকে তারা। তা সত্ত্বেও ১০০০টি ডিমের মধ্যে মাত্র একটি বা দু’টি কচ্ছপ প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া পর্যন্ত বেঁচে থাকে।
যদিও ঘটনাকে নজিরবিহীন বলেই মনে করছেন বন্যপ্রাণী অধিকার কর্মীরা। অনেকে মনে করছেন, মৃত কচ্ছপদের মাত্র ১০ শতাংশ সৈকতে ভেসে এসেছে। আদতে সমুদ্রে ৫০০০-রও বেশি অলিভ রিডলে কচ্ছপের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। মৃত কচ্ছপগুলির ময়নাতদন্তে জানা গিয়েছে, ডুবে মৃত্যু হয়েছে কচ্ছপগুলির। প্রাণী অধিকার কর্মী অ্যান্টনি রুবিন জানিয়েছেন, এই কচ্ছপগুলি জলের নীচে প্রায় ৪৫ মিনিট পর্যন্ত শ্বাস ধরে রাখতে পারে। তার পর শ্বাস নেওয়ার জন্য জলের উপরে ভেসে উঠতে হয় তাদের। সম্ভবত মাছ ধরার জালে জড়িয়ে গিয়ে আর জলের উপরে উঠতে পারেনি কচ্ছপগুলি।
মূলত প্রশান্ত মহাসাগর এবং ভারত মহাসাগরে এই অলিভ রিডলে কচ্ছপদের বাস। সাধারণত এরা গভীর সমুদ্রেই থাকে। প্রতি বছর দল বেঁধে ডিম পাড়তে আসে উপকূলের বালুতটে। এ জন্য কখনও কখনও ৭০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হয়! তার পর ডিম পাড়া শেষ হলে শীতের শেষপর্বে আবার দল বেঁধে সমুদ্রে ফিরে যায় কচ্ছপেরা। এপ্রিল মাসে সেই ডিম ফুটে বাচ্চা বেরোনো শুরু হয়। একটু বড় হয়ে বাচ্চারা নিজেরাই পাড়ি জমায় সমুদ্রের উদ্দেশে। সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য রক্ষায় এই কচ্ছপদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তাই এক সঙ্গে এত কচ্ছপের মৃত্যুতে চিন্তায় পরিবেশ ও প্রাণী অধিকার কর্মীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy