এই প্রথম ব্রহ্মপুত্রের সম্পূর্ণ যাত্রাপথ দাঁড় টানা নৌকায় পাড়ি দেওয়া হল। নজির গড়া এই অভিযান করলেন অরুণাচলের দিরাং-এর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মাউন্টেনিয়ারিং অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস (নিমাস)-এর সদস্যেরা। পরিচালক কর্নেল রণবীর সিং জামওয়ালের নেতৃত্বে একটি দল ব্রহ্মপুত্র নদের ১০৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ পুরো অংশটি দাঁড় টানা নৌকায় অতিক্রম করল।
যাত্রা শুরু হয়েছিল অরুণাচল প্রদেশের গেলিং গ্রাম থেকে। সেখানে ইয়ারলুং সাংপো নদীটি তিব্বত থেকে ভারতে প্রবেশ করে। অভিযান শেষ হয় বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে অসমের হাটসিঙ্গিমারিতে। তারপর থেকে ব্রহ্মপুত্র যমুনা নামে বাংলাদেশে প্রবাহিত হয়। দলনেতা কর্নেল আরএস জামওয়াল বলেন, এই অভিযানে আবহাওয়া ছিল প্রতিকূল। এবং দুর্গম বেশ কিছু অংশ অতিক্রম করতে হয়েছে অভিযানকারীদের। অভিযান শেষ করতে সময় লাগে ২৮ দিন, যার মধ্যে ২৫ দিন দাঁড় টানতে হয়েছে এবং ৩ দিন বরাদ্দ ছিল মেরামতি, রক্ষণাবেক্ষণের জন্য। দলটিতে ৯ জন র্যাফটার এবং ১৪ জন সাপোর্ট
স্টাফ ছিলেন।
যাত্রা শুরু হয়েছিল সিয়াং নদীর (ব্রহ্মপুত্রকে অরুণাচল প্রদেশে সিয়াং বলা হয়) গেলিং গ্রাম থেকে, যা ক্লাস ৪ এবং ৫ ‘র্যাপিডে’র জন্য বিখ্যাত। টানা চার দিন ধরে, দলটি সেই ভয়ঙ্কর পাহাড়ি স্রোতের সঙ্গে যুদ্ধ করে। গেলিং থেকে টুটিং পর্যন্ত প্রথম দিনেই ১১টি বিপজ্জনক ‘র্যাপিড’ অতিক্রম করা ছিল সবচেয়ে কঠিন কাজ। পাসিঘাট পৌঁছনোর আগে বহু কুখ্যাত ‘র্যাপিড’ পার হতে হয় তাঁদের। অসম-পর্বে র্যাফটাররা বিশাল ঢেউ, অপ্রত্যাশিত স্রোত ও নদীর পরিবর্তনশীল গতিবেগের সঙ্গে লড়াই চালিয়েছেন।
যাত্রাপথে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আদানপ্রদানের কর্মসূচিও চলে সমানতালে। নদীর তীরে বসবাসকারী মেম্বা, আদি, বড়ো, মিসিং-সহ বিভিন্ন জনজাতির মানুষ অভিযাত্রীদের উষ্ণ আতিথ্য দেন।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)