Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Gyanvapi Mosque

জ্ঞানবাপীর নমাজস্থল ঘুরে দেখার পর রবিবার তৃতীয় দিনের সমীক্ষায় এএসআই, সঙ্গে মুসলিম সদস্যেরাও

জ্ঞানবাপীতে সমীক্ষার বিরুদ্ধে আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল মসজিদ কমিটি। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ হয়েছে। ফলে শুক্রবার সকাল থেকে যে সমীক্ষা শুরু হয়েছে, তা চলবে রবিবারও।

Third day survey for Gyanvapi mosque will be held on Sunday.

বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদ। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
বারাণসী শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২৩ ০৮:৫৬
Share: Save:

বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ (আর্কিয়োলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া বা এএসআই)-এর ‘বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা’ চলছে। রবিবার তৃতীয় দিনের সমীক্ষায় নামবে এএসআই। তাদের সঙ্গে থাকবেন মুসলিম পক্ষের পাঁচ জন সদস্যও।

জ্ঞানবাপীতে এই সমীক্ষার বিরুদ্ধে আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল মসজিদ কমিটি। কিন্তু শীর্ষ আদালতে সেই আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে। ফলে শুক্রবার সকাল থেকে যে সমীক্ষা শুরু হয়েছে, তা চলবে রবিবারও। সকাল থেকেই সমীক্ষা শুরু হওয়ার কথা।

এর আগে শনিবার সারা দিন জ্ঞানবাপীর আনাচকানাচ ঘুরে দেখেছেন এএসআইয়ের আধিকারিকেরা। শনিবারের মূল পরিদর্শনকেন্দ্র ছিল মসজিদের সেন্ট্রাল হল। সেখানেই নমাজ পড়া হয়। এ ছাড়া, মসজিদ ভবনের বেসমেন্টের কিছু অংশও পরিদর্শন করা হয়েছে। বিকেল ৫টার মধ্যে দ্বিতীয় দিনের এই সমীক্ষা শেষ হয়ে গিয়েছিল। মাঝে দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৩টে পর্যন্ত মধ্যাহ্নভোজনের জন্য বিরতি নিয়েছিলেন সমীক্ষকেরা। এএসআইয়ের তরফে সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানানো হয়েছে, রবিবার সকাল ৮টা থেকে আবার সমীক্ষার কাজ শুরু হবে।

মুসলিম পক্ষের আইনজীবী তৌহিদ খান জানিয়েছেন, মসজিদ কমিটির দু’জন আইনজীবীও এএসআইয়ের সমীক্ষক দলের সঙ্গে ছিলেন। হিন্দু পক্ষের এক আইনজীবীর দাবি, জ্ঞানবাপীতে এখনও পর্যন্ত কোনও হিন্দু দেবদেবীর মূর্তি পাওয়া যায়নি ঠিকই, তবে মূর্তির ধ্বংসাবশেষের ছোটখাটো টুকরো মিলেছে। শীঘ্রই মূর্তিও পাওয়া যাবে বলে তাঁদের বিশ্বাস। মসজিদ কমিটি তাঁদের সাহায্য করছে বলে জানিয়েছেন ওই আইনজীবী।

সপ্তদশ শতকে তৈরি জ্ঞানবাপী মসজিদটি আদতে কোনও হিন্দু মন্দির ভেঙে সেই ধ্বংসাবশেষের উপরে তৈরি করা হয়েছিল কি না, তা জানার জন্যই এএসআইয়ের সমীক্ষা।

জ্ঞানবাপী মসজিদ কমিটির তরফে পাঁচ হিন্দু মহিলার ২০২১ সালের পূজার্চনার আর্জি খারিজ করার জন্য বারাণসী জেলা আদালতে আবেদন জানানো হয়েছিল। মসজিদ কমিটির আইনজীবী বারাণসী জেলা আদালতে জানিয়েছিলেন, ১৯৯১ সালের ধর্মীয় উপাসনাস্থল রক্ষা (বিশেষ ব্যবস্থা) আইন এবং ১৯৯৫ সালের সেন্ট্রাল ওয়াকফ আইন অনুযায়ী, এ সংক্রান্ত আবেদনের শুনানি হতে পারে না। অন্য দিকে, হিন্দু পক্ষের আইনজীবীদের দাবি ছিল, ১৯৯১ সালের ওই আইন জ্ঞানবাপীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। তিনি জানান, ১৯৪৭ সালের পরেও শৃঙ্গার গৌরীস্থলে পূজার্চনার প্রমাণ রয়েছে।

২০২১ সালের অগস্টে পাঁচ হিন্দু মহিলা জ্ঞানবাপীর ‘মা শৃঙ্গার গৌরী’ (ওজুখানা ও তহখানা) এবং মসজিদের অন্দরের পশ্চিমের দেওয়ালে দেবদেবীর মূর্তির অস্তিত্বের দাবি করে তা পূজার্চনার অনুমতি চেয়ে যে মামলা দায়ের করেছিলেন, তারই প্রেক্ষিতে মসজিদের অন্দরের ভিডিয়ো সমীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছিল বারাণসীর নিম্ন আদালত। এর পরেই হিন্দু পক্ষের তরফে প্রাপ্ত নমুনাগুলির কার্বন ডেটিং পরীক্ষার আবেদন জানানো হয়েছিল।

সেই সমীক্ষা এবং ভিডিয়োগ্রাফির কাজ শেষ হওয়ার পরে ২০২২ সালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মামলার শুনানির দায়িত্ব পায় বারাণসী জেলা আদালত। পর্যবেক্ষক দলের ভিডিয়োগ্রাফির রিপোর্টে মসজিদের ওজুখানার জলাধারে শিবলিঙ্গের মতো আকৃতির যে কাঠামোর খোঁজ মিলেছে, সেটি আসলে ফোয়ারা বলে মুসলিম পক্ষ দাবি করে। অন্য দিকে, হিন্দুপক্ষের তরফে প্রাপ্ত নমুনাগুলির কার্বন ডেটিং পরীক্ষার আবেদন জানানো হয়েছিল। ‘শিবলিঙ্গ’-এর বয়স নির্ধারণে কার্বন ডেটিং পদ্ধতির প্রয়োগ নিয়ে অবশ্য ধন্দ রয়েছে বিশেষজ্ঞদের একাংশের মধ্যে। তাঁরা জানাচ্ছেন, মৃত প্রাণী বা উদ্ভিদের দেহাংশ এবং জীবাশ্মের বয়স নির্ধারণে কার্যকরী হলেও এই পদ্ধতিতে কোনও প্রাচীন শিলা বা প্রস্তরখণ্ডের বয়স নির্ধারণ করা কঠিন (যদি না সেই কাঠামোর গায়ে প্রাচীন জৈব দেহাবশেষ থাকে)।

অন্য বিষয়গুলি:

Gyanvapi Mosque ASI varanasi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy