বিজেপির পরবর্তী জাতীয় সভাপতি কে হবেন, তা নিয়ে অস্বস্তি কমার কোনও লক্ষণ নেই আরএসএস ও বিজেপির মধ্যে। সমাধানসূত্র অধরাই।
আজ বেঙ্গালুরুতে আরএসএস-এর তিন দিনের অখিল ভারতীয় প্রতিনিধি সভা শেষ হল। বিজেপির নতুন সভাপতি চূড়ান্ত করায় সঙ্ঘের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নে বৈঠকের শেষ সাংবাদিক সম্মেলনে আরএসএস-এর সহকার্যবাহ দত্তাত্রেয় হোসবোলে বলেন, “কোনও স্বতন্ত্র দলের সভাপতি বেছে নেওয়া আরএসএস-এর কাজ নয়।” তাঁর দাবি, বিজেপির সভাপতি নির্বাচনে তাঁদের ভূমিকা থাকে না।
অঘোষিত সত্য হল, বিজেপির সভাপতি নির্বাচনে বরাবরই বক্তব্য থাকে সঙ্ঘের। গত বছরের লোকসভা ভোটের পরে বিজেপির উপরে প্রভাব বাড়ানোর পথে হাঁটার কৌশল নিয়ে এগোচ্ছেন আরএসএস নেতৃত্ব। সূত্রের মতে, আগামী বিজেপি সভাপতি হিসেবে আরএসএস-ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিকেই দেখতে চান মোহন ভাগবতেরা। যে কারণেই বতর্মান অচলাবস্থা হয়েছে।
তিন দিনের বৈঠকে বিজেপির তরফে দলের সভাপতি জে পি নড্ডা ছিলেন। অনেকের মতে, দলের শীর্ষ নেতৃত্ব নড্ডার মাধ্যমে তাঁর উত্তরসূরির নামের তালিকা আরএসএস নেতৃত্বের কাছে পাঠান। তবে হোসবোলের দাবি, “বিজেপির পক্ষ থেকে আমাদের কাছে সম্ভাব্য সভাপতিদের কোনও তালিকা পাঠানো হয়নি।” তিনি বলেন, “সঙ্ঘের ছাতার তলায় একাধিক সংগঠন আছে। কিন্তু অন্য কোনও সংগঠনের সভাপতি নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন ওঠে না। এ ক্ষেত্রে কেন উঠছে? সঙ্ঘের কাছে সবাই সমান। দেশের জন্য সবাই কাজ করছে।” তাঁর দাবি, বিজেপি স্বতন্ত্র সংগঠন। কবে সভাপতি নির্বাচন করবে, তা একান্তই তাদের বিষয়। কে এবং কবে সভাপতি হবেন, তা ঠিক করার দায়িত্ব বিজেপি নেতৃত্বের।
কিন্তু প্রশ্ন হল, মতানৈক্য যদি না-ই থাকে, তা হলে কেন দলীয় সভাপতির নাম ঘোষণা করছে না বিজেপি? কেন দলের পক্ষ থেকে বারংবার ঘরোয়া ভাবে বলা হচ্ছে, নাগপুরের সম্মতি না পাওয়ার কারণেই মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়ার ন’মাস পরেও সভাপতি পদে থেকে গিয়েছেন জে পি নড্ডা? দলের একটি সূত্রের দাবি, দুই শিবিরের মধ্যে মতভেদ থাকার ফলে দলের একটি অংশ প্রয়োজনে জে পি নড্ডাকেই আগামী আরও কিছু দিন ওই পদে রেখে দেওয়ার পক্ষপাতী।
এই আবহে ৩০ মার্চ নাগপুরে সঙ্ঘের সদর দফতরে একটি অনুষ্ঠানে থাকার কথা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। সেখানে থাকার কথা সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবতেরও। প্রশ্ন হল, তার আগে বিজেপি সভাপতি বাছার বিষয়ে কি আদৌ মতৈক্য হবে, না কি সভাপতি পদের প্রার্থী নিয়ে অচলাবস্থার মধ্যেই ভাগবতের কাছে যাবেন প্রধানমন্ত্রী? দেবেন্দ্র ফডনবীস মোদীর যাওয়ার কথা বললেও ৩০ মার্চ মোদীর নাগপুর যাওয়া এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলেও দাবি করেছেন হোসবোলে। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী আসবেন কি না, তা নিয়ে এখনও আমাদের কাছে কোনও নির্দিষ্ট তথ্য নেই।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)