অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। ফাইল চিত্র।
যে দিন বাংলা-ভাগের বিরুদ্ধে কোচবিহারে মিছিল করল তৃণমূল, সেই দিনই অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা জানিয়ে দিলেন, যে যাই বলুক, অসম বিভাজন সম্ভব নয়। কেএলওর শান্তি আলোচনা ও অনন্ত রায় মহারাজের বৃহত্তর কোচবিহারের দাবি আবহে তাঁর এই বক্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। অনন্ত মহারাজের বৃহত্তর কোচবিহার গঠন প্রসঙ্গে মঙ্গলবার হিমন্ত বলেন, “অনন্ত মহারাজকে আমি ধর্মগুরু হিসাবেই জানি। তিনি যা বলেছেন, তা তাঁর ব্যক্তিগত মন্তব্য। অসমের বিভাজন আর সম্ভব নয়। বরং, কমতাপুর স্বায়ত্তশাসিত পরিষদকে আমরা অসমের ভৌগোলিক সীমার ভিতরেই শক্তিশালী করব।”
হিমন্ত আরও বলেন, “আমার ইচ্ছে আছে, বিটিআর বাদ দিয়ে এবং অবিভক্ত গোয়ালপাড়ায় রাভা স্বশাসিত পরিষদের অন্তর্গত অঞ্চল বাদ দিয়ে বাকি অংশে কোচ-রাজবংশী ও কামতাপুর স্বায়ত্বশাসিত পরিষদকে ভূমির উপরে অধিকার দেব। যাতে তাঁরা ভূমিপুত্র হিসেবের ভূমির অধিকারের রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারেন।” এ দিকে কেএলও প্রধান জীবন সিংহ যখন পৃথক রাজ্যের দাবি নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনায় বসার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন, তখনই হিমন্তর এমন স্পষ্ট বার্তা সেই প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিল। জীবনের ধর্মপুত্র দিবাকর দেবরাজ সিংহ একাধিকবার বলেছেন, হিমন্তের নেতৃত্বেই কেন্দ্রের সঙ্গে জীবন সিংহের শান্তি আলোচনা চলছে। কেএলও সূত্রে বলা হয়েছিল, পৃথক রাজ্য না হলেও কেন্দ্রশাসিত কমতাপুরের দাবি মানতে তৈরি কেন্দ্র। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, যদি এত কিছুর পরে নিছক বর্তমান স্বশাসিত পরিষদকে অসমের ভৌগোলিক সীমানার মধ্যে শক্তিশালী করাই প্রস্তাবিত শান্তি চুক্তির ফল হয়, সে ক্ষেত্রে জীবন সিংহ ও কেএলওর মুখরক্ষা হবে কি?
জীবন সিংহের গড়ে দেওয়া শান্তি কমিটির অন্যতম সদস্য তথা কোচ রাজবংশী জাতীয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায় বলেন, “ভারতের অখণ্ডতার শপথ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হওয়া কেউই রাজ্য বিভাজনের কথা ব্যক্ত করতে পারেন না। তার পরও দেশে তেলঙ্গানা, ঝাড়খণ্ড, উত্তরাখণ্ড, ছত্তীসগঢ় তৈরি হয়েছে। কোচ-কমতাপুরিরা অসম ভাঙতে চাইছেন না। ঐতিহাসিক ভাবে অবিভক্ত কমতাপুর কোচদের ন্যায্য দাবি।” আরও এক ধাপ এগিয়ে তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর আজকের বক্তব্যকে গুরুত্ব দিচ্ছি না, এবং নিজের দাবি থেকেও সরছি না।” অনন্ত মহারাজ প্রসঙ্গে অবশ্য হিমন্তের মন্তব্যকে সমর্থন করে বিশ্বজিৎ বলেন, “অনন্ত রায় ধর্মগুরু মাত্র। তিনি কোচ-রাজবংশীর ত্রাণকর্তা নন। তাঁর কথায় গুরুত্ব দেওয়া অর্থহীন।” জীবনের ধর্মপুত্র দেবরাজ বিষয়টি নিয়ে মন্তব্যে রাজি হননি।
চাকমাদের দাবি। ভারত ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ১৯৯৭ সালে স্বাক্ষরিত ‘চিটাগং হিল ট্র্যাক্ট’ চুক্তির পূর্ণাঙ্গ রূপায়ণ দাবি করল চারটি চাকমা সংগঠন। চট্টগ্রাম থেকে উত্তর-পূর্ব ভারতে আশ্রয় নেওয়া চাকমাদের অরুণাচলে এখনও নাগরিকত্ব দেওয়া হয়নি। মিজোরামেও এখনও তাঁরা কার্যত দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক। তাই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফর কালে চাকমাদের যৌথ মঞ্চ নরেন্দ্র মোদী ও হাসিনাকে পাঠানো স্মারকলিপিতে দাবি জানাল, ২৫ বছর আগে স্বাক্ষরিত চুক্তির শর্ত অনুযায়ী বান্দরবন, খাগরাচরি ও রাঙামাটির তিনটি পার্বত্য জেলা পরিষদের হাতে আইন-শৃঙ্খলা ও তদারকের দায়িত্ব এখনও দেওয়া হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy