Advertisement
E-Paper

মমতা-শুভেন্দুর লড়াই জানে না অযোধ্যার নন্দীগ্রাম, গুলিয়েছিলেন রেলমন্ত্রীও, রামহীনের সম্বল ভরত-কথা

অযোধ্যা নিয়ে এত মাতামাতির মূল কারণ রাম। কিন্তু কাছেই নন্দীগ্রাম খ্যাত ভরতের জন্য। সেই গ্রাম কিন্তু এত আলো পায় না। দিন দিন সে আলো যেন আরও কমে আসছে। কারণ, কোনও বিতর্ক নেই।

অযোধ্যার নন্দীগ্রাম। নিজস্ব চিত্র।

অযোধ্যার নন্দীগ্রাম। নিজস্ব চিত্র।

পিনাকপাণি ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২৪ ১০:১৮
Share
Save

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নাম জানে না এই গ্রাম। তবে মমতাদিদির (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) নাম শুনেছেন এই গ্রামের কেউ কেউ। অযোধ্যা শহর থেকে ১৭ কিলোমিটার দূরের এই নন্দীগ্রাম জানে না বাংলার সেই জমি-আন্দোলনের কথাও। দুই নন্দীগ্রামের মধ্যে প্রায় ৯০০ কিলোমিটারের দূরত্ব।

দূরত্ব যতই থাক, যাওয়ার পথটা দৃশ্যত এক। অযোধ্যা শহর থেকে ৩৩০ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে অনেকটা এগোনোর পরে গ্রামের রাস্তা ধরতেই সর্ষে ক্ষেত। হলুদ ফুল ফুটে রয়েছে। মাঝে মধ্যে আখের ক্ষেতও। একটা সময়ে এই গ্রামের মানুষেরা ভাবতেন, উন্নয়নে অযোধ্যার কাছাকাছি যেতে না পারলেও ছিটেফোঁটা জুটবে। কিন্তু জোটেনি। অযোধ্যা এখন ঠিক যতটা চকচকে, ততটাই বিষণ্ণ চেহারার নন্দীগ্রাম। তবে এই গ্রামকে আরও একটা নামে চেনে লোকে— ভরতকুণ্ড।

সম্বল বলতে কিছুই নেই। তবে অনেক কাহিনি আছে। স্থানীয় বাসিন্দার মুখে মুখে সেই সব কথা। একটা বাজার মতো এলাকায় খান কয়েক দোকান। সেখানেই এক দোকানি রমেশ শুক্ল বললেন, ‘‘এখানকার কাহিনি মূলত রাজা ভরতকে নিয়ে।’’ কী সেই গল্প? রমেশ বললেন, ‘‘রাম যখন বনবাসে চলে গেলেন, তখন রাজত্ব সামলানোর দায়িত্ব পড়েছিল বৈমাত্রেয় ভাই ভরতের উপরে। কিন্তু তিনি দাদা রামের প্রতি এতটাই অনুরক্ত ছিলেন যে, রাজা হয়ে অযোধ্যায় বসতে চাননি। এই নন্দীগ্রামে থেকেই তিনি রাজত্ব চালিয়েছিলেন।’’ রামায়ণে লেখা সেই সিংহাসন কোথায়? যেখানে রামের পাদুকা রেখে রাজত্ব চালাতেন ভরত? রমেশের তা জানা নেই।

গ্রামে ঢুকে পর পর দু’টি মন্দির। একটির নাম ভরত হনুমান মিলন মন্দির। এখানে নাকি সবার আগে হনুমানের সঙ্গে ভরতের দেখা হয়েছিল। সেটা অসুস্থ লক্ষ্মণের জন্য বিশল্যকরণী নিয়ে যাওয়ার সময়ে। মন্দিরের প্রধান পুরোহিত পরমাত্মা দাস শোনালেন, বনবাস শেষ করে এখানেই ভাই ভরতের কাছে এসেছিলেন রাম। সঙ্গে এ-ও বললেন যে, ‘‘ভরত যেমন রামের বৈমাত্রেয় ভাই ছিলেন, তেমনই প্রশাসনের চোখেও অযোধ্যার বৈমাত্রেয় ভাই নন্দীগ্রাম। এখানে উন্নয়ন এসে পৌঁছয় না। দিন দিন পর্যটকও আসাও কমে গিয়েছে।’’

মঙ্গলবার অযোধ্য ধামে যখন লাখ লাখ মানুষের ভিড়, তখন বাংলার সঙ্গে নাম-মাহাত্ম্যে জোড়া নন্দীগ্রামে গিয়ে দেখা গেল হাতেগোনা মানুষজন। তবে যাঁরা রামায়ণের কাহিনি পড়ে অযোধ্যায় আসেন, তাঁরা নাকি সকলেই এই গ্রামে আসেন। তেমনই বললেন চায়ের দোকানদার রাঘব কৌশল। বললেন, ‘‘এখনও রামকে কেন্দ্র করে পর্যটনের জন্য যে যাত্রীরা আসেন, তাঁদের প্যাকেজে এই নন্দীগ্রাম থাকে। আবার অনেকে নিজের থেকেই আসেন। তবে দিন দিন সেটা কমছে। এখন রামভক্তেরা কেউই ভরতভক্ত নন।’’ যদিও অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধন হওয়ায় কিছুটা ভাল দিনের আশা করছেন রাঘব। বললেন, ‘‘সরকার যদি অযোধ্যার সঙ্গে একটু এই গ্রামের কাহিনিও প্রচার করে, তবেই সুদিন আসবে।’’

অযোধ্যার নিকটবর্তী এই নন্দীগ্রাম নিয়ে ভ্রান্তিবিলাস ঘটিয়ে ফেলেছিল ভারতীয় রেল। তখন রেলমন্ত্রী পীযুষ গয়াল। রামায়ণ এক্সপ্রেসের বিজ্ঞাপনে আইআরসিটিসি লিখেছিল নন্দীগ্রামের কথা। কিন্তু ভুল ছিল ঠিকানায়। বলা হয়েছিল, পশ্চিমবঙ্গের নন্দীগ্রামে যাবে ট্রেনটি। সেই বিজ্ঞাপন গর্বের সঙ্গে টুইটও করে দেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী গয়াল। পরে অবশ্য সেটি তুলে নেন। আসলে ‘নন্দীগ্রাম’ উচ্চারিত হলে অযোধ্যা নয়, আগে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কথাই মনে আসে। সেখানেই পুরাণের ভরতের থেকে এগিয়ে থাকেন বাংলার শুভেন্দু।

Ayodhya Ram Mandir Ram Mandir Inauguration

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

ক্যানসেল করতে পারবেন আপনার সুবিধামতো

Best Value
প্রতি বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
প্রতি মাসে

৪২৯

১৬৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।