মন্ত্রকের কর্তাদের সন্দেহ, কন্যাভ্রূণ হত্যা বৃদ্ধির কারণেই আনুপাতিক হারে অবনতি হয়ে থাকতে পারে। প্রতীকী ছবি।
গত তিন বছরের মধ্যে শিশুপুত্র ও শিশুকন্যার জন্মকালীন অনুপাতের হার অনেকটা কমেছে পশ্চিমবঙ্গ-সহ আরও কয়েকটি রাজ্যে। সতর্ক করে আটটি রাজ্যকে চিঠি পাঠাল স্বাস্থ্য মন্ত্রক। স্যাম্পল রেজিস্ট্রেশন সার্ভের (এসআরএস) রিপোর্টে ২০১৮-২০ সালের পরিসংখ্যানে বিষয়টি উঠে এসেছে। এর ভিত্তিতে মন্ত্রকের কর্তাদের সন্দেহ, কন্যাভ্রূণ হত্যা বৃদ্ধির কারণেই আনুপাতিক হারে অবনতি হয়ে থাকতে পারে।
মঙ্গলবার এ রাজ্য-সহ মধ্যপ্রদেশ, তেলঙ্গানা, ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ, অসম, দিল্লি ও মহারাষ্ট্রের মুখ্যসচিব ও স্বাস্থ্যসচিবকেও উদ্বেগ প্রকাশ করে চিঠি পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে সামগ্রিক ভাবে দেশে শিশুপুত্র ও শিশুকন্যার অনুপাতের হারে উন্নতি হয়েছে। ২০১৬-য় দেশে প্রতি এক হাজার পুত্র সন্তান পিছু কন্যা সন্তান জন্মানোর আনুপাতিক হার ছিল ৮৯৯। ২০১৭-তে সেটা বেড়ে হয়েছে ৯০৪ এবং ২০২০-তে ৯০৭। সেখানে ২০১৬-তে বাংলায় প্রতি এক হাজার পুত্র সন্তান পিছু কন্যা সন্তান জন্মানোর আনুপাতিক হার ছিল ৯৪১। ২০১৭-তে বেড়ে ৯৪৪ হয়েছিল। ২০২০-তে সেটি কমে ৯৩৬ হয়েছে। এর নেপথ্যে কন্যাভ্রূণ হত্যার প্রবণতা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনার দিকে আঙুল তুলেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যকর্তারা।
তাই, রাজেশও তাঁর চিঠিতে প্রতিটি রাজ্যকে পিসি-পিএনডিটি (প্রি-কনসেপশন অ্যান্ড প্রি-নেটাল ডায়গনস্টিক টেকনিকস) আইন নিয়ে কড়া অবস্থান নিতে পরামর্শ দিয়েছেন। যাতে, ওই নজরদারির ফাঁক গলে ইচ্ছুক দম্পতিকে গর্ভস্থ ভ্রূণের লিঙ্গ সম্পর্কে চিকিৎসক বা টেকনিশিয়ানেরা কিছু জানাতে না পারেন। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা সিদ্ধার্থ নিয়োগী বলেন ‘‘বিষয়টি দেখা হচ্ছে। আইনের আওতায় নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিই উপায়।’’
রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন তথা স্বাস্থ্য দফতরের কন্যাভ্রূণ নির্ণয় সংক্রান্ত কমিটির সদস্য লীনা গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কখনও সখনও ভ্রূণের লিঙ্গ নির্ণয়ের চেষ্টার অভিযোগ পেয়েছি। কয়েক মাস আগে বালুরঘাটের একটি অভিযোগ কানে আসে। তবে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে এ বিষয়টিতে নজরদারি চালানো হয়।’’ রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন সুদেষ্ণা রায়ও বলেন, ‘‘যে পরিসংখ্যান নিয়ে এত কথা, তাতে পশ্চিমবঙ্গ কিন্তু ছেলে ও মেয়ের জন্মকালীন হারে এ দেশে চতুর্থ। সার্বিক পরিস্থিতি তত খারাপ নয়। এ বিষয়ে জোরদার নজরদারিও চলে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy