বিখ্যাত ট্রাক আর্টিস্ট হায়দার আলি।
২৯ জুলাই বিশ্ব ব্যাঘ্র দিবস। বাঘ সম্পর্কে জনমানসে সচেতনতা বাড়াতে প্রতি বছর এই দিনটি উদ্যাপন করা হয়। ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ড (ডব্লিউডব্লিউএফ)-এর হিসেবে বিশ্বে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩,৯০০টি বাঘ রয়েছে। কিন্তু ক্রমাগত তাদের বাসস্থানের সঙ্কোচন, চোরাশিকার, মানুষের সঙ্গে সঙ্ঘাতে পৃথিবীতে ক্রমশ বাঘের সংখ্যা কমছে। গোটা বিশ্বে বাঘের সংখ্যা কমেছে ৯৫ শতাংশের বেশি। একটা সময় বাঘের ৮টি প্রজাতি পাওয়া যেত। বেঙ্গল টাইগার, সাউথ চায়না, ইন্দো-চাইনিজ, সুমাত্রা, সাইবেরিয়া, কাস্পিয়ান, বালি এবং জাভা টাইগার। তার মধ্যে কাস্পিয়ান, জাভা এবং বালি— এই তিন প্রজাতি নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। বাঘ সংরক্ষণের জন্য বিশ্ব জুড়ে নানা পদক্ষেপ করা হচ্ছে।চালানো হচ্ছে সচেতনতামূলক প্রচারও। কিন্তু তার পরেও বাঘেদের অস্তিত্ব ক্রমশ সঙ্কটের মুখে পড়ছে।
বাঘ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এ বার অভিনব উদ্যোগ নিল ‘শের’ নামে এক সংস্থা। বাঘ নিয়ে মানুষের আগ্রহ এবং উৎসাহ তৈরির পাশাপাশি মানব সমাজে তাদের সম্পর্কে একটা ভাল ধারণা গড়ে তুলতে ‘ট্রাক আর্ট’কে বেছে নিয়েছে তারা। তাই আগামী ২৯ জুলাই বিশ্ব ব্যাঘ্র দিবসের দিনে বাঘ এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে মানবসমাজে বার্তা পৌঁছে দেওয়ায় উদ্যোগী হয়েছে ‘শের’। আর এ কাজে বিখ্যাত ট্রাক আর্টিস্ট হায়দার আলির শিল্পসত্তাকে ব্যবহার করা হবে।
ট্রাক আর্টের জন্য বিশ্বজোড়া খ্যাতি আছে পাকিস্তানের হায়দার আলির। তাঁর এই শিল্পকর্মের জন্য ২০০২-এ গোটা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছেন। করাচিতে জন্ম হলেও পঞ্জাবের জালন্ধরেই কিন্তু তাঁর পরিবারের বাস ছিল। দেশ ভাগের আগেই তাঁরা লাহৌরে চলে যান। সেখান থেকে করাচি। ৮ বছর বয়সেই বাবা মহম্মদ সর্দারের কাছ থেকে এই শিল্পকর্মের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন হায়দার। তাঁর প্রথম ট্রাক আর্ট ১৬ বছর বয়সে।
বন্যজীবন সংরক্ষণ করা কেন জরুরি এই ট্রাক আর্ট-এর মাধ্যমেই সেই বার্তা পৌঁছে দিতে চাইছে ‘শের’। কারণ এই শিল্পই বন্যপ্রাণী সম্পর্কে মানুষের মধ্যে একটা ভাল ধারণা সৃষ্টির মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে বলেই মনে করে সংস্থাটি।
এক রাজ্য থেকে আর এক রাজ্যে, দেশের নানা প্রান্তে ছুটে বেড়ায় ট্রাক। জাতীয়সড়ক, শহর, গ্রাম, রাজ্য, দেশে পরিবহণের অন্যতম এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। ট্রাকে অনেক সময় নানা সচেতনতামূলক ছবি এবং বার্তা ফুটিয়ে তোলা হয়। কেননা এটি একটি চলমান বার্তাবাহকের কাজ করে। আর সে করাণেই এই বার্তাবাহকদের ব্যবহার করে বাঘ এবং বন্যপ্রাণ সম্পর্কে অনেক বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে বার্তা পৌঁছে দিতে চাইছে ‘শের’। আর সে কারণেই ট্রাক আর্ট-কে বেছে নেওয়া।
এই ট্রাক আর্টের মাধ্যমে মূলত দু’টি বার্তা পৌঁছে দিতে চাইছে সংস্থাটি। প্রথম বার্তা, বাঘকে তাদের পরিবেশে বাঁচিয়ে রাখা। এবং দ্বিতীয়ত, যে সব রাস্তা এবং হাইওয়ে বন্যপ্রাণীর চলার পথে পড়েছে বা তাদের বাসস্থানের বুক চিরে চলে গিয়েছে, সেই সব রাস্তা বা হাইওয়েতে যেন ধীর গতিতে গাড়ি চালানো হয়। যাতে বন্যপ্রাণীদের সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু না হয়।
গ্রাম এবং মফসসলগুলিতে এ নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ অনবরত চালিয়ে যাচ্ছে ‘শের’। এ বার আরও বেশি মানুষের কাছে বাঘ এবং বন্যপ্রাণ সম্পর্কে বার্তা পৌঁছে দিতে ট্রাকে সেই শিল্পকর্ম ফুটিয়ে তুলতে চাইছে তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy