Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Ramesh Pokhriyal Nishank

বিভাজন বাড়াবে নয়া শিক্ষানীতি, ক্ষোভ কংগ্রেসের

নতুন শিক্ষানীতিতে হিন্দি ও সংস্কৃতকে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ এনেছিল তামিলানাড়ুর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। সেই ক্ষোভ মেটাতে আজ মাঠে নেমেছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক।

ছবি সংগৃহীত

ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২০ ০৪:৪৪
Share: Save:

নরেন্দ্র মোদী সরকারের নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির সমালোচনা করে বেশ কিছু প্রশ্ন তুলে দিল কংগ্রেস। তাদের অভিযোগ, করোনা অতিমারির সময়ে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যখন বন্ধ, তখন এই বিষয় নিয়ে শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত কারও সঙ্গেই কথা বলেনি সরকার। শুধু সঙ্ঘ পরিবারের শিক্ষাবিদদের মতামত নিয়েই প্রকাশিত হয়েছে জাতীয় শিক্ষানীতি। যেখানে শব্দের চাতুর্য রয়েছে, কিন্তু সরকারি অর্থ সংস্থানের দিশা নেই। নতুন শিক্ষানীতিতে ডিজিটাল মাধ্যমে জোর দেওয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে সনিয়া গাঁধীর দল। তাদের বক্তব্য, এই বিষয়টি ধনী ও গরিব ঘরের পড়ুয়াদের মধ্যে বিভাজনের সৃষ্টি করবে।

নতুন শিক্ষানীতিতে হিন্দি ও সংস্কৃতকে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ এনেছিল তামিলানাড়ুর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। সেই ক্ষোভ মেটাতে আজ মাঠে নেমেছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক। তামিলে টুইট করে তিনি লিখেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যগুলির উপর কোনও ভাষা চাপিয়ে দেবে না। নতুন শিক্ষানীতির পক্ষে আজ সওয়াল করেছেন প্রধানমন্ত্রীর প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি পি কে মিশ্রও। জোধপুর আইআইটি-র প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে আজ তিনি দাবি করেন, নতুন শিক্ষানীতির ফলে আরও বেশি সংখ্যায় বিদেশি পড়ুয়ারা ভারতে পড়তে আসতে উৎসাহ পাবেন। তাঁর মতে, নতুন শিক্ষানীতির মাধ্যমে ভারতে শিক্ষার বাতাবরণ উন্মুক্ত হবে। যা বিদেশি পড়ুয়াদের আকর্ষণ করবে।

কংগ্রেস অবশ্য শিক্ষানীতি নিয়ে মোদী সরকারের উদ্দেশে আরও অনেক প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছে। কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা, মনমোহন সরকারের আমলের মানব সম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী পাল্লাম রাজু আজ সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করেন, নতুন শিক্ষানীতি গ্রাম ও শহর ভারতের বিভাজন বাড়াবে। সুরজেওয়ালার যুক্তি, কোভিড পরিস্থিতিতে অনলাইন ক্লাস থেকে বাদ গিয়েছে গরিব পরিবারগুলির প্রায় ৭০ শতাংশ পড়ুয়া। গ্রামাঞ্চলে কম্পিউটারের অভাব ও ইন্টারনেটের সংযোগ না থাকায় বহু পড়ুয়া অনলাইন শিক্ষার অঙ্গনে পৌঁছতেই পারছে না। নতুন শিক্ষানীতি এই বিভাজনকে আরও প্রকট করবে। সেখানে তফসিলি জাতি, তফসিলি উপজাতি ও অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির পড়ুয়াদের উন্নতির বিষয়ে কোনও আলোচনা করা হয়নি বলেও কংগ্রেসের অভিযোগ।

শিক্ষাক্ষেত্রে অর্থের সংস্থান কী ভাবে হবে, তা-ও জানতে চেয়েছে কংগ্রেস। নতুন শিক্ষানীতিতে জিডিপি-র ৬ শতাংশ অর্থ শিক্ষাক্ষেত্রে খরচের জন্য বলা হয়েছে। কংগ্রেসের বক্তব্য, বিজেপি সরকারের আমলে এমনিতেই শিক্ষাখাতে বরাদ্দ কমছে। ২০১৪-১৪ আর্থিক বছরে শিক্ষাক্ষেত্রে জিডিপি-র ৪.১৪ শতাংশ অর্থ খরচ হয়েছিল। ২০২০-২১ সালে বরাদ্দ কমে হয়েছে ৩.২ শতাংশ। তার মধ্যেই কোভিড পরিস্থিতিতে শিক্ষাখাতে বাজেট বরাদ্দ থেকে ৪০ শতাংশ টাকা কাটছাঁট হতে চলেছে। অর্থাৎ, শিক্ষায় আসলে খরচ হতে চলেছে জিডিপি-র ২ শতাংশ। ফলে শিক্ষাখাতে জিডিপি-র ৬ শতাংশ অর্থ কী ভাবে আসবে, তা জানতে চেয়েছে কংগ্রেস। তাদের মতে, নতুন শিক্ষানীতিতে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব কার্যত ঝেড়ে ফেলে বেসরকারিকরণের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। ফলে শিক্ষায় বাজেট বরাদ্দ কমবে, পড়াশোনার খরচ আরও বেড়ে যাবে। যার জেরে শিক্ষার পরিসর থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য হবে অনেক পড়ুয়া। উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেমেয়েরা।

নতুন শিক্ষা নীতিতে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের নিয়ে কংগ্রেসের বক্তব্য, পুরোপুরি সরকারি কর্মী না হলেও এঁরা জনস্বাস্থ্য ও আহার সরবরাহের কাজে প্রবল চাপে থাকেন। খুবই কম টাকায় কাজ করতে হয়। এই পরিস্থিতিতে এঁদের প্রশিক্ষণ দিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করা খুবই জটিল ব্যাপার।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy