—প্রতীকী ছবি।
‘‘আরে হিন্দি কোথায়! সব তো সংস্কৃত শব্দ। যেমনটি আপনার নাম দয়ানিধি। সেটিও তো সংস্কৃত!’’ আইনব্যবস্থা সংস্কারের লক্ষ্যে আনা নতুন তিনটি বিলের শিরোনামে হিন্দি শব্দ ব্যবহারের পাল্টা যুক্তিতে বিজেপি নেতৃত্বের সওয়াল, হিন্দি নয়, সংস্কৃত শব্দের প্রয়োগ হয়েছে শিরোনামে। কোথাও হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়নি। তবে এ নিয়ে বিরোধ দেখে মধ্যপন্থা হিসাবে বিলের বিকল্প শিরোনাম ইংরেজিতে করার কথা ভাবার ইঙ্গিত দিয়েছে কেন্দ্র।
দণ্ডবিধি সংক্রান্ত তিনটি বিল নিয়ে আজও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সংসদীয় কমিটি বৈঠকে বসে। সূত্রের মতে, গত কাল ওই তিনটি বিলের শিরোনাম হিন্দিতে থাকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তা ইংরেজিতে করার দাবি তুলেছিলেন ডিএমকে সাংসদ দয়ানিধি মারান-সহ দক্ষিণের সাংসদেরা। আজও বিষয়টি নিয়ে সরব হন তাঁরা। ঘটনাচক্রে আজ ওই তিনটি বিলের মাধ্যমে কেন্দ্র হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ তুলে একটি প্রস্তাব এনে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে মাদ্রাজ বার অ্যাসোসিয়েশন।
দক্ষিণের সাংসদদের হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগ খণ্ডন করতে আজ আসরে নেমে বিজেপি সাংসদ তথা কমিটি সদস্য সত্যপাল সিংহ দাবি করেন, শিরোনামে যে শব্দগুলি ব্যবহার করা হয়েছে, তার উৎস সংস্কৃত। মারানের উদ্দেশে সত্যপাল বলেন, দয়ানিধি একটি সংস্কৃত শব্দ। সূত্রের মতে, শুধু দয়ানিধি নয়, আলোচনায় ওঠে করুণানিধি শব্দটিও। বিজেপির এক সাংসদ ডিএমকের প্রাক্তন সুপ্রিমো করুণানিধির নাম উল্লেখ করে বলেন, মাথায় রাখতে হবে করুণানিধি শব্দটিও কিন্তু সংস্কৃত। সূত্রের মতে, পরে এ বিষয়ে কমিটি সদস্য দিলীপ ঘোষ বলেন, নতুন যে তিনটি বিল আনা হয়েছে, তার অন্যতম লক্ষ্য হল বিচার ব্যবস্থাকে ত্বরান্বিত করা। কিন্তু যে ভাবে বিলের বিভিন্ন ধারা নিয়ে আলোচনার পরিবর্তে
গত দু’দিন ধরে কেবল বিলের শিরোনামের ভাষা নিয়ে বিবাদ চলছে, তাতে বিলের আসল উদ্দেশ্য নষ্ট হচ্ছে। বিজেপির অভিযোগ, পরিকল্পিত ভাবে সময় নষ্ট করছেন বিরোধীরা। বিবাদ মেটাতে প্রয়োজনে ওই বিলগুলির বিকল্প শিরোনাম ইংরেজিতে করার কথা ভাবা যেতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রের তরফে।
মারান বিলের শিরোনাম নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাল্টা হিসেবে বিচারব্যবস্থা সংক্রান্ত সমস্ত কার্যপ্রণালী ইংরেজির পরিবর্তে স্থানীয় আঞ্চলিক ভাষায় করার উপরে জোর দেন দিলীপ। সূত্রের মতে, তিনি বৈঠকে বলেন, স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও বিচারব্যবস্থায় শুনানি থেকে রায়দান সব ইংরেজিতে হয়ে আসছে। দেশের বড় সংখ্যক মানুষ ইংরেজিতে সড়গড় নন। ফলে ভাষাগত সমস্যায় পড়তে হয় তাঁদের। সূত্রের মতে, তাই প্রতিটি রাজ্যে সেই রাজ্যের আঞ্চলিক ভাষায় বিচার সংক্রান্ত কাজ হতে পারে কি না তা খতিয়ে দেখার পরামর্শ দেন দিলীপ। তাঁর ওই বক্তব্যকে সমর্থন করেন একাধিক সাংসদ।
শীতকালীন অধিবেশন শুরুর আগেই বিলটি যাতে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির ছাড়পত্র পায় সেই লক্ষ্যে মরিয়া বিজেপি। সে কারণে টানা তিন দিন বৈঠক ডাকা হয়েছে। কিন্তু বিজেপির সমস্যা হল, ১৩ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের চলতি স্থায়ী কমিটির মেয়াদ শেষ হবে। নতুন করে কমিটি গড়া হবে। তাই বর্তমান সদস্যেরা যাতে মেয়াদ শেষের আগেই নিজেদের পরামর্শ কমিটিতে নথিবদ্ধ করতে পারেন, সেই লক্ষ্যে আজ সব সদস্যকে চিঠি দেন কমিটির চেয়ারম্যান ব্রিজলাল। তিনি আগামী ১৫ দিনের মধ্যে প্রত্যেক সদস্যকে ওই তিনটি বিল নিয়ে নিজেদের মতামত কমিটির কাছে জমা দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। যদিও ওই সময়ের মধ্যে তা সম্ভব নয় বলে ব্রিজলালের কাছে আপত্তি জানিয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ দিগ্বিজয় সিংহ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy