মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গে ১২টি আসনের তালিকা নিয়ে কংগ্রেসের জাতীয় নেতৃত্ব তৃণমূলের সঙ্গে আসন সমঝোতা সংক্রান্ত আলোচনা শুরু করতে চাইছে। কংগ্রেস সূত্রের খবর, প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে কংগ্রেসের জাতীয় জোট কমিটির আলোচনায় সব মিলিয়ে ১২টি আসনের তালিকা তৈরি হয়েছে। এই ১২টি আসনে তৃণমূলের সমর্থন চেয়ে কংগ্রেস দরকষাকষি শুরু করবে। সেই আলোচনা শুরুর আগে তৃণমূলনেত্রীকে ইতিবাচক বার্তা দিতে আজ কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে ‘মমতা দিদি’-কে বাংলায় সোশ্যাল মিডিয়া ‘এক্স’-এ শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। যদিও তৃণমূলের সঙ্গে আসন সমঝোতা করে আখেরে বিরোধী শিবিরের লাভ হবে কি না, তা নিয়ে কংগ্রেস শিবিরে চিন্তা রয়েছে।
কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, তত্ত্বগত ভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে তৃণমূল, বাম, কংগ্রেস এককাট্টা হলে তার সুবিধা বিজেপি পেতে পারে। কারণ সে ক্ষেত্রে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ ভোটারদের পুরো সমর্থনটাই বিজেপি পেয়ে যাবে। উল্টো দিকে তৃণমূলের বিরোধী ভোট কংগ্রেস, সিপিএম, বিজেপির মধ্যে ভাগ হয়ে গেলে তৃণমূলের লাভ। তৃণমূলের সঙ্গে হাত মেলালে কংগ্রেস, সিপিএম দুই শিবিরেরই তৃণমূল বিরোধী ভোট পাওয়ার কোনও আশা থাকবে না। বিজেপি তা ঝোলায় পুরে নিজের আসন বাড়িয়ে নেবে।
পশ্চিমবঙ্গে আসন সমঝোতা হোক বা না হোক, কংগ্রেস শীর্ষনেতৃত্ব চান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইন্ডিয়া-র অন্যতম প্রধান শরিক হিসেবে বিরোধী জোটে থাকুন। আসন সমঝোতা শুরুর আগে তৃণমূলনেত্রীকে ইতিবাচক বার্তা দিতে আজ কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে ‘মমতা দিদি’-কে সোশ্যাল মিডিয়া ‘এক্স’-এ বাংলায় লিখেছেন, ‘‘তৃণমূলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারপার্সন মমতা দিদিকে জন্মদিনের আন্তরিক শুভেচ্ছা। আপনার দীর্ঘ ও সুস্থ জীবন কামনা করছি।’’ কংগ্রেস নেতারা চাইছেন, তাঁরা একই সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল ও সিপিএম, দুই দলের সঙ্গেই কথা বলবেন। সিপিএম তৃণমূলের সঙ্গে আলোচনায় যেতে অরাজি হলেও কংগ্রেস দুই দলের সঙ্গেই আলাদা ভাবে আসন সমঝোতার চেষ্টা করতে পারে। সিপিএম সূত্রের অবশ্য এতে আপত্তি রয়েছে। সে ক্ষেত্রে তাঁরা কংগ্রেসের সঙ্গে বোঝাপড়া করবেন না।
কংগ্রেস সূত্রের বক্তব্য, ১২টি আসন নিয়ে দর কষাকষি শুরু করলেও তৃণমূল পাঁচ থেকে ছয়টি আসন দিলে কংগ্রেস রাজি হতে পারে। কংগ্রেসের সঙ্গে আসন সমঝোতা হলে দলের পাশে থাকা সংখ্যালঘুদের সমর্থন তৃণমূল পাবে। সে কারণে তৃণমূলও আগ্রহী। তৃণমূল অবশ্য এখনও বলছে, কংগ্রেসের হাতে থাকা দু’টি আসন ছাড়া আর কোনও আসন ছাড়া হবে না। কংগ্রেসের একটি সূত্রের বক্তব্য, আসন সমঝোতা না হলে কংগ্রেসের জেতা দু’টি আসন বহরমপুর ও মালদহ দক্ষিণ জেতাও কঠিন হতে পারে। যদিও আসন সমঝোতা হলেই বহরমপুরে স্থানীয় তৃণমূল নেতা-কর্মীরা অধীর চৌধুরীকে ভোট দেবেন, এমন নিশ্চয়তা নেই। কারণ মূলত অধীরের সঙ্গে বিরোধিতার কারণেই তাঁরা কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন।
শুক্রবার সন্দেশখালির ঘটনার পরে বিজেপি, বাম, কংগ্রেস কার্যত একই সুরে তৃণমূল নেতৃত্বকে নিশানা করেছে। এই ঘটনার পরে প্রদেশ কংগ্রেস তৃণমূলের সঙ্গে বোঝাপড়ায় না যাওয়ার বিষয়ে আরও কঠোর অবস্থান নিচ্ছে। সেই সুযোগ নিয়ে ইন্ডিয়া জোটে ফাটল ধরাতে আজ দিল্লিতে বিজেপির মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়া কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরীর মন্তব্যকে হাতিয়ার করেছেন। গৌরব বলেছেন, ‘‘অরাজকতা চরম সীমায় পৌঁছলে জোটের শরিকরাও দুর্নীতিগ্রস্তদের নিয়ে প্রশ্ন তুলতে বাধ্য হন। আজ যে কারণে সন্দেশখালিতে ইডি আধিকারিকদের উপরে শাসক দলের গুণ্ডাদের হামলা নিয়ে কংগ্রেসের নেতা অধীর চৌধুরী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।’’ তাঁর অভিযোগ, আসলে দুর্নীতির আঠা ইন্ডিয়া-র শরিকদের এককাট্টা করে রেখেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy