বিশিষ্ট মুসলিমদের নিয়ে গঠিত নাগরিক সমাজ যখন নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে ‘ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, মেঘালয়’ (ইউএসটিএম)-এর আচার্য মাহবাবুল হককে গ্রেফতার করার ঘটনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করল, তখনই অসমের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন, মাহবাবুলের কারাবাসের মেয়াদ দীর্ঘ হবে।
মাহবাবুল হককে গত শনিবার ভোরে তাঁর গুয়াহাটির বাসভবন থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মার দাবি, মাহবাবুল এমন একটি চক্রের সঙ্গে জড়িত, যারা ‘প্রতারণামূলক উপায়ে’ বেশি নম্বর পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় বসায়। আদালত তাঁকে প্রথমে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠায়। পরে তাঁকে শ্রীভূমি পুলিশের হেফাজতে দেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হককে আজ গুয়াহাটি আনা হয়েছে।
‘সিটিজ়েনস ফর ফ্রেটার্নিটি’ নামে একটি নাগরিক সমাজ প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকপত্র পাঠিয়ে দাবি করেছে, এক জন ‘সম্মাননীয়, অরাজনৈতিক’ নাগরিককে গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়াই এ ভাবে গ্রেফতার করা এবং পুলিশ ও বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রেখে দেওয়াটা সমাজের প্রগতিশীল অংশের মনোবল ভেঙে দেবে। এই ঘটনা তাঁর প্রতিষ্ঠিত ধর্মনিরপেক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতালের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ণ করেছে। ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করেন প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এস ওয়াই কুরেশি, দিল্লির প্রাক্তন লেফটেন্যান্ট গভর্নর নাজিব জং, আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য জমির উদ্দিন শাহ, প্রাক্তন সাংসদ শাহিদ সিদ্দিকী এবং শিল্পপতি সাইয়দ শেরওয়ানি। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তাঁরা লেখেন, ‘এই গ্রেফতারি সম্পূর্ণ প্রতিহিংসামূলক এবং আমরা নিশ্চিত যে, আপনি এই ঘটনার প্রতিকারের জন্য নির্দেশ দেবেন।’
এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে শুক্রবার হিমন্ত বলেন, ‘‘বিষয়টি গুরুতর। পুলিশ তদন্ত করছে এবং আমরা সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করছি। হককে সম্ভবত দীর্ঘ সময় জেলে থাকতে হবে।’’ হকের পাশাপাশি, পাথারকান্দি সেন্ট্রাল পাবলিক স্কুলের অধ্যক্ষ হীরামণি শইকিয়া, শিক্ষক বিজয় দত্ত, রেজাক আলি, নুমান আহমেদ এবং ইমদাদুর রহমানকেও চার দিনের পুলিশ রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)