Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Farmers Protest

প্রায় ভেস্তে যাওয়া আন্দোলনে প্রাণ ফেরাল মধ্যরাতে কৃষক নেতা রাকেশের কান্না

রাকেশ টিকায়েত এবং তাঁর ভাই তথা সংযুক্ত কিসান মোর্চার অধ্যক্ষ নরেশ টিকায়েতের দ্বিমত সামনে এসেছিল। সেই দ্বন্দ্বও মিটেছে।

শুক্রবার সকালের গাজিপুর সীমান্ত।

শুক্রবার সকালের গাজিপুর সীমান্ত। ছবি— টুইটার।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২১ ০৮:৫৮
Share: Save:

কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েতের কান্না ফিরিয়ে আনল আন্দোলন স্থল থেকে মুখ ঘোরানো বহু কৃষককে।

প্রজাতন্ত্র দিবসে লালকেল্লায় তাণ্ডবের পর থেকেই চাপে কৃষক আন্দোলনের নেতারা। উত্তরপ্রদেশ-দিল্লির গাজিপুর সীমানা থেকে কৃষকদের সরে যেতে নির্দেশ দিয়েছিল যোগী প্রশাসন। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই প্রচুর পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনীও মোতায়েন করা হয় সেখানে। আন্দোলনকারীদের একাংশ যখন রণে ভঙ্গ দিয়ে ফিরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তখন পরিস্থিতি বদলে দিল ভারতীয় কিসান ইউনিয়নের (বিকেইউ)-এর জাতীয় মুখপাত্র রাকেশ টিকায়েতের একটি সাংবাদিক বৈঠক। সেখানে আবেগতাড়িত কৃষক নেতা কেঁদে ফেলেন। সেই ভিডিয়ো মুহূর্তে ছড়িয়ে যায় ইন্টারনেটে। কাঁদতে কাঁদতে প্রবীণ কৃষক নেতার আকুতি বদলে দেয় পরিস্থিতি। পুলিশকে উপেক্ষা করে আন্দোলনকারীরা ফের জড়ো হতে থাকেন ধর্না চালানোর জন্য। রাকেশের এই কান্না দেখে রাতেই উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আরও কৃষক এসে যোগ দেন গাজিপুরে। আজ শুক্রবার কৃষকদের ‘মহাপঞ্চায়েত’ বা বড়সড় একটি বৈঠক হওয়ার কথা। সেখান থেকেই পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির হবে।

প্রজাতন্ত্র দিবসে হিংসার ঘটনায় রাকেশ টিকায়েত-সহ একাধিক কৃষক নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। ভারতীয় কিসান ইউনিয়নের এই নেতা জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি আত্মসমর্পণ করবেন না। প্রয়োজনে গ্রাম থেকে আরও কৃষক যোগ দেবেন প্রতিবাদস্থলে। গাজিপুর সীমানায় কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন ছেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে রাকেশ বলেছেন, ‘‘দরকারে আত্মহত্যা করব। কিন্তু আন্দোলন বন্ধ করব না।’’ আন্দোলন ভেস্তে দিতে পুলিশের সঙ্গে বিজেপির গুণ্ডারা এসেছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। নিজেই গাজিপুর সীমানায় হাতে লাঠি নিয়ে ঘোরা একটি ছেলেকে ধরে চড় মারেন। দাবি করেন, ওই ব্যক্তি সংগঠনের কেউ নয়। এঁদের জন্যই আন্দোলন গতি হারাচ্ছে। সেই ভিডিয়ো-ও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ে।

এই পরিস্থিতিতেই রাকেশ টিকায়েত এবং তাঁর ভাই তথা সংযুক্ত কিসান মোর্চার অধ্যক্ষ নরেশ টিকায়েতের দ্বিমত সামনে এসেছিল। রাকেশ যখন পুলিশের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে গাজিপুরেই কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের কথা বলছেন, তখন তাঁর ভাই নরেশ মুজফ্ফরপুরে সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘হতাশ হওয়ার কিছু নেই। গাজিপুরে আজকের প্রতিবাদ শেষ। পুলিশের হাতে মার খাওয়ার থেকে জায়গা খালি করে দেওয়া ভাল।’’ কিন্তু রাকেশের কান্না বদলে দেয় এই অবস্থানও। বৃহস্পতিবার রাতে টুইট করে নরেশ দাবি করেন, ‘হরিয়ানার বিভিন্ন গ্রাম থেকে কৃষক ভাইয়েরা গাজিপুর সীমানায় দিকে আসতে শুরু করেছেন। ৩ কৃষি আইন প্রত্যাহার করা হলে তবেই তাঁরা বাড়ি ফিরবেন’। জানা গিয়েছে, দুই ভাইয়ের এই দ্বন্দ মেটাতে উদ্যোগী হয়েছিলেন রাষ্ট্রীয় লোক দল (আরএলডি) নেতা জয়ন্ত চৌধুরি। টুইটে তিনি জানিয়েছেন, দুই টিকায়েত ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের একত্র থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। সব মিলিয়ে বৃহস্পতিবার গাজিপুরে প্রতিবাদস্থলের পরিস্থিতি ছিল নাটকের মতোই টানটান।

বৃহস্পতিবার রাতের মতোই টানটান শুক্রবার সকালের গাজিপুর। ইতিমধ্যেই বিশাল সংখ্যক মানুষ জড়ো হয়েছেন সেখানে। আরএলডি নেতা জয়ন্ত চৌধরিও এসেছেন রাকেশ টিকায়েত এবং কৃষকদের সঙ্গে কথা বলতে। কান্নার রেশ ছেড়ে চনমনে দেখাচ্ছে রাকেশকেও। গাজিপুরের প্রতিবাদস্থলে দাঁড়িয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা এখান থেকে সরছি না। আমাদের দাবি নিয়ে সরকারের সঙ্গে কথা বলব। আমি আন্দোলনকারীদের শান্তিপূর্ণ থাকার আবেদন জানাচ্ছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Gazipur Farmers Protest Rakesh Tikait
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy