সৌরদীপ সেনগুপ্ত।
ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগে ধৃত গুরুচরণ কলেজের পদার্থবিদ্যা বিভাগের অস্থায়ী শিক্ষক সৌরদীপ সেনগুপ্তকে আজ জেল হেফাজতে পাঠাল শিলচর সিজেএম আদালত। মূলত এবিভিপি নেতৃত্বাধীন কলেজ-ছাত্রদের একাংশ তাঁর বিরুদ্ধে এফএইআর করে। তার ভিত্তিতেই গত কাল সন্ধ্যায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রাক্তনীর মুক্তির দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ।
দিল্লির হিংসার পরিপ্রেক্ষিতে গত কাল ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের বিরুদ্ধে কিছু মন্তব্য পোস্ট করেন সৌরদীপ। তার পরেই পথে নামে গুরুচরণ কলেজেরই এবিভিপির সমর্থক পড়ুয়ারা। কলেজের অধ্যক্ষকে স্মারকলিপি দিয়ে সৌরদীপকে শিক্ষকতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি জানায় তারা। এর পর সৌরদীপ পোস্টটি মুছে ফেলেন। ফেসবুকে ক্ষমাও চান। কিন্তু তা মানতে চায়নি এবিভিপি। সৌরদীপ ও তাঁর বাবাকে কলেজে ডেকে পাঠিয়ে অধ্যক্ষ বিভাস দেব জানান, তাঁর উপরে চাপ বাড়ছে। এর পর সৌরদীপ পদত্যাগপত্র জমা দেন।
সৌরদীপের পরিবারের ঘনিষ্ঠ এক সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কাল সন্ধ্যায় জনা পঞ্চাশেক যুবক শিলচর শহরের ইটখোলায় তাঁদের বাড়িতে চড়াও হয়। সৌরদীপ তখন বাড়িতে ছিলেন না। খবর পেয়ে বাড়ি আসতেই সদর থানার পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানিয়েছে, সমাজে অশান্তি সৃষ্টি, ধর্মীয় আবেগে আঘাত, সাম্প্রদায়িক উস্কানির অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি আইন লঙ্ঘনের অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
সৌরদীপের বাবা, নাট্যকার শান্তনু সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘আবেগের বশে ও কিছু লিখে ফেলেছিল। কিছু ক্ষণের মধ্যেই ভুল বুঝতে পেরে পোস্টটা মুছে দেয়। দুঃখপ্রকাশ করে আলাদা একটি পোস্টও দিয়েছিল। ভেবেছিলাম বিষয়টি এখানেই শেষ হল!’’
গুরুচরণ কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি জ্যোতিলাল চৌধুরী জানান, সৌরদীপকে সরানোর জন্য এবিভিপি অধ্যক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করে চলেছে। অধ্যক্ষ আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলছেন। প্রয়োজনে বিষয়টি পরিচালন সমিতির কাছে পাঠানো হবে।
প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের এই প্রাক্তন সহ-সম্পাদক সম্পর্কে ছাত্র সংসদের তৎকালীন সভাপতি সুমাল্য মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ও যেটা লিখেছিল তা প্রত্যাহার করে নিয়ে ক্ষমাও চায়। এর পরেও বিষয়টি মিটল না কেন? মনে হচ্ছে দেশে ফ্যাসিবাদী শাসন চলছে।’’ এ দিন বর্তমান ছাত্র সংসদের তরফে সৌরদীপকে গ্রেফতারকে ধিক্কার জানানো হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গে রাজনীতিকরাও সরব। কেউ পক্ষে, কেউ বিপক্ষে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘শিক্ষক হয়ে দেশের জনপ্রিয়তম প্রধানমন্ত্রী বিরুদ্ধে অপশব্দ বলছে! এর কঠিন সাজা হওয়া উচিত।’’ অন্য দিকে, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র ও সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিমের মতে, এই সরকার সব প্রতিবাদ, সমালোচনাকেই দেশদ্রোহ বলে দেগে দিচ্ছে। তাঁদের কথায়, ‘‘অবশ্য বিজেপির আগেই এ রাজ্যে এই পথ দেখিয়েছে তৃণমূল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy