প্ল্যাটফর্মের কোথাও কোনও জঞ্জাল দেখলে মোবাইলে ছবি তুলে সরাসরি টুইটারে তাঁর অ্যাকাউন্টে পৌঁছে দিচ্ছেন যাত্রীরা। এমন সব ছবির ভিড়ে নাজেহাল দশা রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভুর! অথচ নজর না দিয়েও উপায় নেই। কেননা প্রধানমন্ত্রী নিজে মন্ত্রিসভায় নিয়মিত ভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় হওয়ার নিদান দিচ্ছেন। সরাসরি মানুষের সমস্যার কথা শুনতে এবং তাঁদের আশ্বস্ত করতে নির্দেশ দিচ্ছেন। তাই কামরায় জল না-থাকা কিংবা প্ল্যাটফর্মের জঞ্জালের ইতিবৃত্তে মন্ত্রী প্রভুকেও নিয়মিত নজর রাখতে হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে।
কিন্তু তা বলে কারও বাড়ির খারাপ হয়ে যাওয়া রেফ্রিজারেটর নিয়েও মাথা ঘামানোর নির্দেশ কি মোদী দিয়েছেন তাঁর কোনও সতীর্থকে!
না দিলেও এমন অভিনব ঘটনাই কিন্তু ঘটল মোদীর জমানায়। গত কাল রাতে বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের কাছে টুইটবাহিত আবদার এসেছে, খারাপ রেফ্রিজারেটর বদলাতে তিনি যেন সাহায্য করেন!
মোদীর মতোই টুইটপ্রিয় বলে পরিচিতি আছে সুষমার। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর ভূমিকা গত দু’বছরে প্রশংসা কুড়িয়েছে সংশ্লিষ্ট মহলের। সরাসরি সাহায্য চাইলে তিনি সাহায্য করেন, এমনটাই জনশ্রুতি। সম্প্রতি ১৭ বছরের মাশাল মাহেশ্বরী মেডিক্যাল পরীক্ষা দেওয়া নিয়ে কিছু সমস্যায় পড়ায় টুইট করেছিলেন সুষমাকে। চটজলদি তার সমাধান করেন বিদেশমন্ত্রী। একই ভাবে অলিম্পিকে সোনাজয়ী অভিনব বিন্দ্রার কোচের পাসপোর্ট হারিয়ে যাওয়ার ঘটনাতেও তিনি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন।
কিন্তু ফ্রিজ বদল! সুষমা স্বরাজের কাছে কেন, মোদী মন্ত্রিসভার ইতিহাসে এই ধরনের উদ্ভট অনুরোধ এই প্রথম। তার চেয়েও যেটা উল্লেখের, শত ব্যস্ততার মধ্যেও এই রেফ্রিজারেটর সংক্রান্ত টুইটের সকৌতুক উত্তরও দিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা। আর তার পর রসিকতার ঝড় বয়ে গিয়েছে বিদেশমন্ত্রীর টুইটার অ্যাকাউন্টে।
গত কাল রাত দশটা নাগাদ এম বেঙ্কট নামে এক ব্যক্তি টুইট করে সুষমা এবং ক্রেতা বিষয়ক মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ানকে একটি সংস্থার নাম করে জানান, ‘ওরা একটি খারাপ রেফ্রিজারেটর আমাকে বিক্রি করেছে। তারা সেটি বদলে দিতে চাইছে না। বরং চাপ দিচ্ছে দোকানে নিয়ে গিয়ে সারিয়ে আনার জন্য। দয়া করে আপনারা বিষয়টি দেখুন। দু’মাসের মধ্যেই এটি খারাপ হয়ে গিয়েছে।’ এর সঙ্গে তাঁর ফ্রিজটির মডেল এবং সিরিয়াল নম্বর লিখতেও ভোলেননি রুষ্ট ক্রেতাটি!
ক্রেতা বিষয়ক মন্ত্রী রামবিলাস অবশ্য এর কোনও উত্তর দেননি। কিন্তু বিদেশমন্ত্রী জবাবে লিখেছেন, ‘ভাই, আমি রেফ্রিজারেটরের ব্যাপারে আপনাকে তো কোনও সাহায্য করতে পারব না। দুর্দশাগ্রস্ত মানুষ নিয়ে আমি খুব ব্যস্ত রয়েছি।’’ গত কাল থেকে তাঁর এই মন্তব্যটিতে লাইক পড়েছে সাড়ে সাত হাজারেরও বেশি! রিটুইটের সংখ্যাও প্রায় সমান।
বিদেশমন্ত্রীকে এমন বেখাপ্পা অনুরোধ পাঠানোর কারণও ছদ্মকৌতুকে অনুসন্ধান করেছেন অনেকে। চলছে মস্করাও। এক জন লিখেছেন, ‘‘সম্ভবত ওই বেঙ্কট চাইছেন আপনি দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে বিষয়টির প্রসঙ্গ তুলে কূটনৈতিক পথে এর সমাধান করুন!’’ কেউ তার জবাবে টিপ্পনি করেছেন, ‘‘ভাই আপনি কী টানেন? দেশে যে কত রকমের নমুনা রয়েছে!’’ সুষমার সমর্থনে এগিয়ে এসে কেউ লিখেছেন, ‘‘সুষমাজি, লোকে আপনাকে এতটাই মানেন যে তাঁরা ভাবেন, আপনি যে কোনও সমস্যা সমাধান করে ফেলতে পারবেন।’ এক ব্যক্তির পর্যবেক্ষণ, ‘সুষমা স্বরাজের জবাবটি যথেষ্ট কুল (Cool)! কিন্তু রেফ্রিজারেটরটি নয়!’
বেঙ্কট অবশ্য এতে দমে যাননি। বরং কৌতুকের মাত্রা আরও এক ধাপ চড়িয়ে রিটুইট করেছেন, ‘ম্যাডাম, উত্তর দেওয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। আর যা-ই হোক না কেন, এর ফলে মানুষ ওই সংস্থাটির খারাপ পরিষেবা এবং পণ্যের ব্যাপারে সচেতন হবেন।’
এর কোনও উত্তর দেননি বিদেশমন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy