Advertisement
E-Paper

Suriya - Jai Bhim: বাম রাজনীতির পাঠ কোর্টে লাগিয়েছেন বিচারপতি চন্দ্রু

সূর্য আছেন সিনেমায়। কঠোর বাস্তবের দুনিয়া থেকেই তাঁকে সিনেমার রসদ এনে দিয়েছেন যিনি, তাঁর নাম কে চন্দ্রু। বাস্তবের সূর্য এই চন্দ্রুই।

বিচারপতি কে চন্দ্রু এবং ছবিতে তাঁর ভূমিকায় সূর্য।

বিচারপতি কে চন্দ্রু এবং ছবিতে তাঁর ভূমিকায় সূর্য। ফাইল চিত্র।

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২১ ০৬:১৮
Share
Save

অপরাধীকে এনকাউন্টার করে মেরে দিচ্ছেন ডাকসাইটে পুলিশ অফিসার। দর্শক এমন বীরত্বের কাহিনি লুফে নিচ্ছেন! বলিউড হোক বা সিনেমা-পাগল তামিল ভূম, এই চিত্রনাট্যেই বাজার মাত হয়েছে বারবার। কিন্তু এ বার অন্য ছবি। পুলিশ এবং প্রশাসনের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এক আইনজীবীর লড়াইকে উপজীব্য করে সামাজিক ন্যায়ের গল্প বলে হইচই ফেলে দিয়েছে ‘জয় ভীম’। তামিল ছবিতে ‘সুপারকপ’ ভূমিকায় জনপ্রিয় অভিনেতা সূর্যই এখানে ‘সিস্টেমের’ বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণাকারী আইনজীবী। পুলিশ হেফাজত থেকে নিখোঁজ হওয়া স্বামীর সন্ধানে হেবিয়াস কর্পাস মামলা দায়ের করা অসহায় মহিলার পাশে দাঁড়িয়ে যিনি জাতপাতের বৈষম্যের বিরুদ্ধে ন্যায় প্রতিষ্ঠার লড়াই করছেন।

সূর্য আছেন সিনেমায়। কঠোর বাস্তবের দুনিয়া থেকেই তাঁকে সিনেমার রসদ এনে দিয়েছেন যিনি, তাঁর নাম কে চন্দ্রু। বাস্তবের সূর্য এই চন্দ্রুই। আইনজীবী এবং তার পরে তামিলনাড়ু হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে অবসর নিয়েছেন। চেন্নাইয়ে বসেই এখনও সামাজিক ন্যায় এবং জাত-বৈষম্যের বিরুদ্ধে বিচারপ্রার্থী মানুষকে আইনি সহায়তা দিয়ে থাকেন। আকাশভাঙা বৃষ্টিতে জলভাসি চেন্নাই থেকে যিনি হাসতে হাসতে বলছেন, ‘‘তৃষ্ণার্ত এক জন মানুষ এসে যদি জল চান, তাঁকে এক গেলাস জল দিতে হবে আপনাকে। জল-প্রকল্প শুরু করছি, তার পরে জল আসবে, এটা বলে আপনি তাঁর তৃষ্ণা মেটাতে পারবেন না! বিচার বিভাগ এবং আইনের মাধ্যমে আমি সারা জীবন তৃষ্ণার্তকে ওই এক গেলাস জল দেওয়ার চেষ্টাই করেছি।’’

বিচারপতি থাকার সময়ে দিনে প্রায় ৭৫টা শুনানি করে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন। আদালত কক্ষে ‘মাই লর্ড’ সম্বোধন পছন্দ করতেন না, বিচারপতিদের মহার্ঘ ‘ফেয়ারওয়েল’-এ সটান ‘না’ বলে দিয়ে অবসরের সন্ধ্যায় আদালতের গাড়ি ছেড়ে দিয়ে বাসে চেপে ফিরেছিলেন। সে সবেরও আগে প্রথম জীবনে সিপিএমের ছাত্র সংগঠনে ছিলেন। চেন্নাইয়ের লয়োলা কলেজ থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন আন্দোলন করতে গিয়ে। জরুরি অবস্থার সময় থেকে চন্দ্রুর মনে হয়েছিল, সামাজিক ন্যায় ও বিচার পাওয়ার জন্য আইন একটা বড় হাতিয়ার হতে পারে। সেই ভাবনা থেকেই চলেছে বাকি জীবন।

পর্দা এবং বাস্তবের ‘নায়ক’।

পর্দা এবং বাস্তবের ‘নায়ক’।

প্রায় ৩০ বছর আগের তামিলনাড়ুর বৃদ্ধাচলমে চুরির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল রাজাকান্নু নামে এক ব্যক্তিকে। পুলিশ হেফাজতে নির্মম অত্যাচারের পর তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। রাজাকান্নুর স্ত্রী, ইরুলা জনজাতির অসহায় প্রতিনিধি সেনগানির হয়ে আইনি লড়াই করেছিলেন চন্দ্রু। উকিলের কাজ ছাপিয়ে তদন্তকারীর ভূমিকাও নিতে হয়েছিল তাঁকে। সে দিনের চন্দ্রুর ভূমিকাই ‘জয় ভীম’ ছবিতে ফুটিয়ে তুলেছেন সূর্য। রুপোলি পর্দায় সেই যুদ্ধ দেখে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি ফিরে গিয়েছেন পুরনো স্মৃতিতে।

কিন্তু চন্দ্রুদের সেই পুরনো ঘটনা এখন ছবি নির্মাতারা জানলেন কোথা থেকে? আনন্দবাজারের কাছে সেই গল্প শুনিয়েছেন চন্দ্রুই। ‘‘ওই ঘটনায় ক্ষতিপূরণ দিতে হয়েছিল প্রশাসনকে। অবসর নেওয়ার পরে ওই এলাকার মানুষ আমাকে একটা বইমেলার উদ্বোধনে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানেই পরিচালক জ্ঞানভেলের (‘জয় ভীম’-এর পরিচালক) সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে এই ঘটনাটা এসেছিল। পুরনো কিছু তামিল পত্রিকায় ঘটনার কথা ছিল। উৎসাহ নিয়ে ওঁরা পড়েছেন তার পরে।’’ বলছেন বিচারপতি।

আইনকে অস্ত্র করে বিচার পাওয়া এবং পাওয়ানোর লড়াইয়ে বামপন্থী রাজনীতি তাঁর সহায় হয়েছে বলে অকপটে উল্লেখ করছেন চন্দ্রু। তাঁর কথায়, ‘‘এসএফআই করতাম। রাজনীতিতে স্বপ্ন ছিল বিপ্লব। কিন্তু ন্যায়প্রার্থী মানুষকে তো বিপ্লবের অপেক্ষায় রাখা যায় না। কিছু উপশম দিতে হয়। বামপন্থী রাজনীতিতে যা শিখেছি, বিচার ব্যবস্থায় সেটাই কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি। অম্বেডকরের ভাবনা বুঝতেও সুবিধা হয়েছে বাম রাজনীতি করেছি বলে।’’

তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এ কে স্টালিন যে ‘জয় ভীম’ দেখে সদর্থক পদক্ষেপের কথা বলেছেন, চন্দ্রু তাতে জয়ই দেখছেন। এত বছরের লড়াইয়ে ‘সিস্টেম’কে কি উন্নত করা গেল? হাসছেন চন্দ্রু। ‘‘বিচারে বিলম্ব হয় বলেই এনকাউন্টার দেখে খুশি হয় মানুষ। আইনে সব সংস্থানই আছে। আমাদের চেষ্টা হওয়া উচিত, মানুষ যাতে সময়মতো একটু বিচার পান। এই ছবি দেখেও যদি সেই বোধটা উন্নত হয়, খুব ভাল কথা। সিস্টেম কি একা বদলানো যায়?’’

Jai Bhim Suriya K Chandru

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।