মুম্বইয়ে হামলার আগে বেশ কয়েক বার সরেজমিনে খোঁজখবর নেওয়া (রেকি) হয়েছিল। আর মুম্বইয়ে থেকেই সেই ‘রেকি’ করেছিলেন অন্যতম চক্রী ডেভিড কোলম্যান হেডলি। শুধু তা-ই নয়, ২৬/১১ হামলার এক সপ্তাহ আগে আর এক চক্রী তাহাউর রানাকে সেই ‘প্লট’ শুনিয়েছিলেন হেডলি। সেই ছক শুনে রানা হেসেছিলেন। তদন্তে এমনই তথ্য পাওয়া গিয়েছে বলে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) সূত্রে খবর।
এনআইএস সূত্রে খবর, মুম্বইয়ে রানা যে ‘ইমিগ্রেশন কনসালটেন্সি’ খুলেছিলেন, সেই সংস্থার ম্যানেজার হিসাবে রাখা হয়েছিল হেডলিকে। আর রানার সেই সংস্থার মাধ্যমেই হেডলির পুরো পরিচয়, ভিসা-সহ যাবতীয় নথির তথ্য গোপন করা হয়। ওই সংস্থায় আর কারা কাজ করতেন, কারা হেডলিকে ভুয়ো পরিচয়পত্র এবং থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন, তাঁদের খুঁজে বার করার চেষ্টা চলেছে।
আরও পড়ুন:
এনআইএ সূত্রে খবর, ২০০৮ সালের মে-তে রানাকে মুম্বই হামলার ‘প্লট’ শুনিয়েছিলেন হেডলি। মুম্বই বন্দরের আশপাশে নৌকা নিয়ে রেকি করেছিলেন তিনি। হামলাকারীদের নৌকার মাধ্যমে তামজমহল প্যালেস হোটেলের কাছে নামানো হবে বলেও সেই সময় রানাকে জানিয়েছিলেন হেডলি। এই হামলার আগে হেডলি যাতে মুম্বইয়ে ‘রেকি’ নিতে পারেন, তার জন্য বাণিজ্যনগরীতে রানা ‘ইমিগ্রেশন কনসালটেন্সি’ খুলে বসেন। একই সঙ্গে এক ব্যক্তিকে রানা নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, হেডলির পরিচয় যেন কোনও ভাবে প্রকাশ্যে না আসে, তার সমস্ত রকম ব্যবস্থা করতে। সেই ব্যক্তিই এখন তদন্তকারীদের আতশকাচের তলায়।
রানার ভ্রমণ সংস্থায় কারা কাজ করতেন সেই খোঁজও চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা। প্রাথমিক ভাবে তাঁরা মনে করছেন, রানা তাঁর ভ্রমণ সংস্থায় পাকিস্তানের বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠীর সদস্যকে নিয়োগ করেছিলেন। তদন্তকারীরা আরও জানতে পেরেছেন যে, ২০০২ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি জঙ্গি প্রশিক্ষণ শিবিরে গিয়েছিলেন পাঁচ বার। ২০০৫ সালের শেষের দিকে লশকর জঙ্গিগোষ্ঠী থেকে হেডলির কাছে নির্দেশ আসে, তাঁকে ভারতে যেতে হবে নজরদারি চালাতে। হামলার আগে তাই পাঁচ বার ভারতে ঘুরে গিয়েছেন হেডলি। তার তিন বছর পরই ২০০৮ সালে হামলা হয় মুম্বইয়ে। সেই হামলায় ১৬৬ জন নিহত হন। আহত হন আরও অনেকে।