অশ্বিনী মহাজন
মোদী সরকারের আর্থিক নীতিতে আরও বেশি করে প্রভাব ফেলতে চাইছে আরএসএস-এর স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ। তাদের চাপেই অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বিদেশ থেকে ডলারে ঋণ নেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটেছেন। আরএসএস-এর আর্থিক শাখার যুগ্ম-আহ্বায়ক অশ্বিনী মহাজন বলছেন, ‘‘আসলে সরকারকে ভুল পথে চালিত করা হয়েছিল।’’ মোদী সরকারের কাছে মঞ্চের দাবি, সরকারের আয় বাড়াতে ই-কমার্স ও প্রযুক্তি সংস্থার উপরে কর বসানো হোক।
বাজেটে অর্থমন্ত্রী সরকারি গ্যারান্টিযুক্ত ‘সোভরেন বন্ড’-এর মাধ্যমে বিদেশ থেকে ঋণ নেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিলেন। স্বদেশি জাগরণ মঞ্চের নেতারা তাতে প্রবল আপত্তি তোলার পরে প্রথমে অর্থসচিবের পদ থেকে সুভাষচন্দ্র গর্গকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তার পরে খোদ প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি নৃপেন্দ্র মিশ্র বিদায় নেন। অভিযোগ উঠেছিল, বিদেশ থেকে ডলারে ঋণ নেওয়ার পিছনে গর্গই ছিলেন প্রধান মস্তিষ্ক। তাতে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের অনুমোদনও ছিল। নৃপেন্দ্র বিদেশ থেকে ডলারে ঋণের ভাল-মন্দ দিক নিয়ে নিজে জানলেও প্রধানমন্ত্রীকে জানাননি বলে খবর। অশ্বিনী এখন হেসে বলছেন, ‘‘যারা সরকারকে এই সব পরিকল্পনা দিয়েছিলেন, তাদের তো সরকারের বাইরে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে।’’
সরকার পিছু হটলেও একে অবশ্য নিজেদের জয় হিসেবে দেখতে রাজি নন অশ্বিনী। তিনি বলেন, ‘‘আমরা লড়াই করতে থাকি। কারও হার-জিতের প্রশ্ন নয়। এটা দেশের জয়। আমরা সরকারকে স্পষ্ট বলে দিয়েছিলাম, ওরা ভুল পথে চলছে। মন্ত্রীকেও জানিয়েছিলাম।’’ ডলারে ঋণ নেওয়ার পিছনে অর্থ মন্ত্রকের কর্তাদের প্রধান যুক্তি ছিল, কম সুদের হার। অশ্বিনী বলেন, ‘‘যদি ৪% হারে সুদে ঋণ মেলে, কিন্তু ডলারের দর ৬% বেড়ে যায়, তা হলে তো ১০ শতাংশ সুদ চাপল। সেটা কি সস্তা? আমরা অফিসারদের এ সব প্রশ্ন করেছিলাম। তাঁদের কাছে কোনও উত্তর ছিল না।’’
এখন পুরনো ঋণে সুদের বোঝা এতটাই বেশি যে, সরকারি কাজ চালাতে ১০০ টাকা ধার করলে তার ৯৩ টাকাই যাচ্ছে পুরনো ধারের সুদ মেটাতে। অশ্বিনীর দাওয়াই, বেশি ধার করতে হচ্ছে বলেই সুদের বোঝা বাড়ছে। আয় বাড়িয়ে ধার কমানো হোক। তার জন্য ই-কমার্স ও প্রযুক্তি সংস্থার উপরে কর বসানো হোক। অশ্বিনীর যুক্তি, ‘‘গুগল, ফেসবুক, মাইক্রোসফটের মতো সংস্থা তো কোনও করই দেয় না। অথচ যেটুকু বৃদ্ধি, তা এই সব ক্ষেত্রেই।’’
আরএসএস-এর প্রধান ভোটব্যাঙ্ক, ছোট ব্যবসায়ীরাও ই-কমার্স সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে সরব। স্বদেশি জাগরণ মঞ্চের বক্তব্য, প্রযুক্তি, ই-কমার্স, বিদেশি সফটওয়্যার সংস্থাগুলো কোনও কর মেটায় না বলেই কর্পোরেট কর থেকে আয় বাড়ছে না। এরা বিদেশের সার্ভারে তথ্য রেখে বিদেশ থেকেই ব্যবসা চলছে বলে দাবি করে। অথচ এ দেশ থেকে নেওয়া বিজ্ঞাপনের টাকা থেকে বিপুল আয় করে। অথচ কর মেটায় না। বিপুল ছাড় দেয়। ফলে ছোট ব্যবসায়ীরা মার খায়। অশ্বিনী বলেন, ‘‘এই সংস্থাগুলির উপরে কর চাপালে বছরে ১ লক্ষ কোটি টাকা আয় হতে পারে। আমরা বাজেটের আগেই অর্থমন্ত্রীকে জানিয়েছি। এ বার প্রকাশ্যে বলছি।’’ কেন্দ্রীয় শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গলায়ও এ দিনই বিপুল ছাড় এবং দাম কমিয়ে রাখার প্রবণতা নিয়ে ই-কমার্স সংস্থাগুলিকে নিশানা করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy