উত্তরাখণ্ডে দাবানল। — ফাইল চিত্র।
দাবানলের কবলে উত্তরাখণ্ড। একের পর এক জঙ্গল আগুনে পুড়ছে। আগুন নিয়ন্ত্রণ আনতে সরকার কী পদক্ষেপ করেছে, এমনই প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট। শুধু তা-ই নয়, জঙ্গলের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার দায়িত্বে থাকা দমকলকর্মীদের কেন ভোটের কাজে পাঠানো হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে দেশের শীর্ষ আদালত। পাশাপাশি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত তহবিল কেন দেওয়া হয়নি, সেই প্রশ্ন তুলে কেন্দ্রীয় সরকারকেও ভর্ৎসনা করে আদালত।
গত বছরের নভেম্বর থেকে দাবানলের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে উত্তরাখণ্ডের একাধিক জঙ্গলে। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বর থেকে এখনও পর্যন্ত রাজ্যের ৯১০টি জঙ্গলে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। বেশির ভাগই মনুষ্যসৃষ্ট। এর ফলে বন দফতরের ১১৪৫ হেক্টর জমি নষ্ট হয়েছে। রাজ্যের তরফে বুধবার আদালতে জানানো হয়, দাবানল মোকাবিলা করতে কেন্দ্রের কাছে প্রাথমিক ভাবে ১০ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার এখনও পর্যন্ত মাত্র তিন কোটি ১৫ লক্ষ টাকাই বরাদ্দ করেছে।
সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশে প্রশ্ন করে, ‘‘এটা অত্যন্ত দুঃখের বিষয়। কেন রাজ্য সরকারকে পর্যাপ্ত তহবিল দেওয়া হয়নি?’’ পাশাপাশি, আদালত আরও প্রশ্ন করে, ‘‘এই অগ্নিকাণ্ডের পরিস্থিতির মধ্যেও কেন দমকলকর্মীদের ভোটের কাজে পাঠানো হয়েছে?’’ বন বিভাগের কর্মীদের নির্বাচন সংক্রান্ত কাজে নিয়োগ করা নিয়ে আগেও সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়েছিল উত্তরাখণ্ড সরকার।
উত্তরাখণ্ডের কয়েকটি জঙ্গলে আচমকাই আগুন লেগে যায়। সেই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে আশপাশে। জঙ্গল ছাড়িয়ে আগুন পৌঁছে যায় লোকালয়েও। কারও বাড়ি, কারও কারখানা এই আগুনের গ্রাসে পুড়ে ছাই হয়েছে। অনেকের শেষ সম্বলটুকুও কেড়ে নিয়েছে দাবানল। দমকলকর্মীদের প্রায়শই উপযুক্ত সরঞ্জাম ছাড়া আগুন নেভাতে যেতে হয়। আগুন নেভাতে গিয়ে সাধারণ মানুষের প্রাণ হারানোর ঘটনা উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল।
সেই মামলার শুনানিতেই কেন্দ্র এবং রাজ্যকে এক যোগে ভর্ৎসনা করে শীর্ষ আদালত। রাজ্যের আইনজীবী বুধবার আদালতে জানান, মুখ্যসচিব নির্দেশ দিয়েছেন অবিলম্বে বনবিভাগের কর্মীদের ভোটের দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেওয়ার জন্য। সেই নির্দেশ পালন করা হচ্ছে।
বিচারপতি বিআর গাভাই, বিচারপতি এসভিএন ভাট্টি এবং বিচারপতি সন্দীপ মেহতার বেঞ্চ বুধবার রাজ্যের উদ্দেশে বলে, ‘‘এটি খুবই দুঃখজনক পরিস্থিতি। আপনারা শুধু অজুহাত তৈরি করছেন।’’ গত সপ্তাহেও এই মামলার শুনানিতে রাজ্যকে বলেছিল, ‘‘আগুন নেভানোর জন্য কর্তৃপক্ষ শুধুমাত্র বৃষ্টির উপর নির্ভর করে থাকতে পারেন না।’’ রাজ্য দাবি করেছে, এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মোট বনভূমির ০.১ শতাংশ নষ্ট হয়েছে। যা উত্তরাখণ্ডের ৪৫ শতাংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy