শিল্পপতি গৌতম আদানি। —ফাইল চিত্র।
বুধবার আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে করা জনস্বার্থ মামলার রায় ঘোষণা করবে সুপ্রিম কোর্ট। সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের বেঞ্চ রায় ঘোষণা করবে। হিন্ডেনবার্গ রিপোর্টকে হাতিয়ার করে শীর্ষ আদালতে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন আইনজীবী বিশাল তিওয়ারি-সহ কয়েক জন। তাঁদের আবেদন, আদালতের নজরদারিতে ওই প্রতারণার তদন্ত হোক। গত নভেম্বর মাসে ওই মামলাগুলির শুনানি শেষ হয়। এক মাস পরে বুধবার রায় ঘোষণা হবে সেই মামলার।
গত জানুয়ারিতে আমেরিকার শেয়ার বিশ্লেষক সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ তাদের রিপোর্টে দাবি করেছিল, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে কারচুপি করে নিজেদের নথিভুক্ত সংস্থাগুলির শেয়ার দর বাড়িয়েছে আদানি গোষ্ঠী। সেবির বিধিকে ফাঁকি দিতে ভুঁইফোঁড় বিদেশি সংস্থার মাধ্যমে নিজেদের সংস্থার শেয়ার কিনিয়েছে তারা। উদ্দেশ্য, অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ হাতে রাখা। এই রিপোর্ট প্রকাশের পরে, আদানিদের সংস্থাগুলির শেয়ার দর বিপুল ভাবে পড়েছিল। বহু বিনিয়োগকারী আদানির শেয়ার থেকে টাকা তুলে নিতে শুরু করেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘ঘনিষ্ঠ’ শিল্পপতি গৌতম আদানির সংস্থার বিরুদ্ধে হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টকে হাতিয়ার করে দু’টি মামলা দায়ের হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। বিনিয়োগকারীদের আস্থার বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য গত বছরের মার্চ মাসে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে শীর্ষ আদালত। এই কমিটিতে রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এম সাপ্রে, বিচারপতি জে পি দেবড়কর, ও পি ভাট, কে ভি কামাথ, নন্দন নিলেকানি এবং সোমশেখর সুদর্শন। পাশাপাশি, শেয়ার বাজারে ‘অনিয়মের’ অভিযোগটি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয় বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবিকে।
গত ২৫ নভেম্বর আদানি-হিন্ডেনবার্গ কাণ্ডের রায় ঘোষণা সংরক্ষিত রেখেছিল সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি, বিচারপতি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মিশ্রের বেঞ্চ তার পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিল, হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের মতো একটি বাজার সমীক্ষা সংস্থায় প্রকাশিত রিপোর্টের ভিত্তিতে বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবি আদানিদের বিরুদ্ধে নোটিস জারি করবে এমনটা ভেবে নেওয়া ঠিক নয়। আদানিকাণ্ডের তদন্তে ‘বিশেষ তদন্তকারী দল’ (সিট) গড়ার আবেদনও নাকচ করে দিয়েছিল শীর্ষ আদালত।
প্রসঙ্গত, আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের অভিযোগের বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখতে গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির কয়েক জন সদস্যের নাম নিয়ে আপত্তি তুলে আগেই একটি আবেদন জমা পড়েছে সুপ্রিম কোর্টে। আবেদনে নির্দিষ্ট ভাবে স্টেট ব্যাঙ্কের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও পি ভাটের নাম করা হয়েছে। জানানো হয়েছে, ভাট এখন গ্রিনকো নামে একটি বিকল্প বিদ্যুৎ সংস্থার চেয়ারম্যান। ওই সংস্থা ২০২২ সালের মার্চ থেকে বিকল্প বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য আদানিদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। এ ছাড়াও আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের প্রাক্তন কর্ণধার কে ভি কামাথের কথা উল্লেখ করা হয়েছে আবেদনে। কামাথ ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ওই বেসরকারি ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান ছিলেন। ঋণ প্রতারণা মামলায় সিবিআইয়ের এফআইআরে তাঁর নামও ছিল। যে মামলার অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত ব্যাঙ্কটির আর এক প্রাক্তন চেয়ারপার্সন চন্দা কোছর। আর সুদর্শনের ক্ষেত্রে আবেদনকারীর অভিযোগ, তিনি বিভিন্ন মঞ্চে আদানিদের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy