Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Cheetah

আফ্রিকার চিতারা কেন মরছে মধ্যপ্রদেশে? কেন্দ্রকে অহং ছেড়ে কারণ খুঁজতে বলল শীর্ষ আদালত

আবেদনকারী পক্ষের অভিযোগ, রাজনৈতিক কারণেই বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশ থেকে কংগ্রেস শাসিত রাজস্থানে চিতা পাঠাতে চাইছে না মোদী সরকার। এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রের জবাব চেয়েছে শীর্ষ আদালত।

Supreme Court tells Centre not to make Cheetah deaths prestige issue

মধ্যপ্রদেশের কুনোয় আনা আফ্রিকার চিতা। ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২৩ ১৬:৫২
Share: Save:

গত চার মাসের মধ্যে মারা গিয়েছে আটটি চিতা। তাদের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং নামিবিয়া থেকে আনা পূর্ণবয়স্কদের পাশাপাশি রয়েছে, ভারতে জন্মানো তিন সদ্যোজাত শাবকও। এই পরিস্থিতিতে বিষয়টিকে আত্মমর্যাদার জায়গা থেকে না দেখে, চিতাদের মৃত্যুর কারণ খুঁজতে বলল সুপ্রিম কোর্ট।

মধ্যপ্রদেশের কুনো পালপুর জাতীয় উদ্যানে পর পর চিতা-মৃত্যু নিয়ে বৃহস্পতিবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিচারপতি বিআর গাভাইয়ের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ। বিষয়টিকে ‘মর্যাদার প্রসঙ্গ’ না বানিয়ে চিতাদের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানের জন্য কেন্দ্রকে সক্রিয় হতে বলেছেন বিচারপতি গাভাই। কেন্দ্রের আইনজীবী, অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ঐশ্বর্যা ভাটিকে বিচারপতি গাভাই বলেন, ‘‘গত সপ্তাহে আরও দু’টি চিতার মৃত্যু হয়েছে। কেন এটি একটি মর্যাদার ইস্যু হয়ে উঠছে? কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ করুন।’’

অন্য কোনও অভয়ারণ্যের বদলে কেন আফ্রিকা থেকে আনা চিতাদের এক জায়গায় রাখা হয়েছে, সে প্রশ্নও তোলেন বিচারপতি গাভাই। প্রসঙ্গত আবেদনকারী পক্ষের অভিযোগ, রাজনৈতিক কারণেই বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশ থেকে কংগ্রেস শাসিত রাজস্থানে চিতা পাঠাতে চাইছে না মোদী সরকার। এ প্রসঙ্গে, বন্যপ্রাণ বিজ্ঞানী তথা মোদী সরকারের ‘ন্যাশনাল চিতা অ্যাকশন প্ল্যান’ (জাতীয় চিতা পুনঃস্থাপন কর্মসূচি)-এর সদ্য অপসারিত প্রধান যাদবেন্দ্রনাথ ঝালার সাম্প্রতিক মন্তব্যের কথাও শীর্ষ আদালতের সামনে তুলে ধরা হয়।

প্রসঙ্গত বিজ্ঞানী ঝালা সম্প্রতি বলেছিলেন, ‘‘কুনো জাতীয় উদ্যানের যা পরিসর, সেখানে ৫০টি দূরের কথা ২০টি চিতার স্বচ্ছন্দ বসবাসেরও সুযোগ নেই। তা ছাড়া ওখানে চিতাদের শিকার করে খাওয়ার মতো হরিণ বা বনশুয়োরের অভাব রয়েছে।’’ সেই সঙ্গে তিনি বলেছিলেন, ‘‘কুনো জাতীয় উদ্যানের লাগোয়া রাজস্থানের মুকুন্দারা অভয়ারণ্যের কিছুটা অংশও চিতা পুনঃস্থাপন কেন্দ্রের অন্তর্গত করা প্রয়োজন।’’

তবে সেই অনুমোদন যে ‘রাজনীতি-সাপেক্ষ’, সেটাও মনে করিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। বলেছিলেন, ‘‘রাজস্থানের মুকুন্দরার জঙ্গলে খাবারের কোনও অভাব হবে না চিতাদের। তবে চিতার আবাসস্থলের ঠিকানা হিসাবে মুকুন্দরার জঙ্গল অধিগ্রহণে কেন্দ্র খুব একটা উৎসাহী নয়। আমার মনে হয়, এই অনীহা একেবারেই রাজনৈতিক কারণে।’’ কারণ, সে ক্ষেত্রে কংগ্রেস শাসিত রাজস্থান ‘চিতার ভাগ’ পেয়ে যাবে বলে জানিয়েছিলেন ঝালা।

সেপ্টেম্বরে নামিবিয়া থেকে প্রথম দফায় ৮টি চিতাকে আনা হয়েছিল কুনো-য়। দ্বিতীয় দফায় দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আনা হয় আরও ১২টি চিতা। তাদের খাদ্যসম্ভার হিসেবে কুনোয় প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৩৮টি চিতল হরিণ রয়েছে। বিজ্ঞানী ঝালার মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে কুনোয় ১৫টির বেশি চিতা রাখা সম্ভব নয়। মধ্যপ্রদেশের অন্য দুই অভয়ারণ্য গান্ধীসাগর এবং নওরাদেহিতে চিতাদের বিকল্প বাসস্থান গড়ে তোলার প্রস্তাব থাকলেও, তা সময় এবং ব্যয়সাপেক্ষ। খরচের বহরও বাড়বে আরও অন্তত ৭৫০ কোটি টাকা। ঝালা বলেন, ‘‘তাই আমার প্রস্তাব ছিল, বেশি চিতা ছাড়তে হলে আপাতত মুকুন্দরা জঙ্গলটিকে ব্যবহার করা হোক।’’ কিন্তু সেই প্রস্তাব যে আমল পায়নি, তা খোলাখুলি স্বীকার করেছিলেন তিনি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy