আইএনএস বিরাট।
‘বুড়ো’ যুদ্ধজাহাজ আইএনএস বিরাটকে ভেঙে ফেলা হবে না। বদলে তার ভিতরেই গড়ে উঠবে সমুদ্র সংক্রান্ত সংগ্রহশালা। ভারতীয় নৌবাহিনী ঠিক এটাই চেয়েছিল। যুদ্ধজাহাজ আইএনএস বিরাটকে বয়সের কারণে তিন বছর আগে তারা বাতিল করেছিল ঠিকই তবে তাকে টুকরো টুকরো করে ভেঙে ফেলা হোক তা একেবারেই চায়নি তারা। সম্প্রতি বিরাটকে সংগ্রহশালা বানানোর প্রস্তাব দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আবেদন করেছিল মুম্বইয়ের একটি সংস্থা। বুধবার সুপ্রিম কোর্ট সেই প্রস্তাবে সায় দিল। সেই সঙ্গে বিরাটকে ভেঙে ফেলার নির্দেশে স্থগিতাদেশও দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
ভারতীয় নৌবাহিনীর কাছে বিরাটের আরও একটি পরিচয় আছে। বাহিনীর সবচেয়ে পুরনো আর বিশ্বস্ত যুদ্ধজাহাজ বিরাটকে ‘মা’ বলে ডাকেন নৌবাহিনীর সদস্যরা। বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো যুদ্ধজাহাজ বিরাট। সমুদ্রে যত মাইল পথ সে অতিক্রম করেছে, তাতে পৃথিবীকে ২৭ পাক ঘুরে ফেলা যায়। সমুদ্রে যত সময় সে কাটিয়েছে, তার মোট হিসেব করলে দাঁড়ায় সাত বছর। অঙ্কটা যুদ্ধজাহাজের ক্ষেত্রে নেহাৎ কম নয়। সেই বিরাটের বিদায়ী অনুষ্ঠানে যখন কেন্দ্রীয় জাহাজমন্ত্রী মনসুখ মান্ডব্য বলেছিলেন, বিরাটকে তিনি সংগ্রহশালা বানাতেই পারেন। তাতে ৪০০-৫০০ কোটি টাকা খরচ হবে সরকারের। কিন্তু, সমস্যা হল বিরাট ১০ বছরের বেশি টিকবে না।
এরপরই বিরাটের ভবিষ্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। বিরাটকে সংগ্রহশালা বানানোর জন্য বেসরকারি সংস্থাগুলিকে এগিয়ে আসতে বললেও কেউই সে ভাবে উৎসাহ দেখায়নি। ফলে বিরাটকে ভেঙে ফেলা হবে এই আশঙ্কা ক্রমশ বাড়তে থাকে। ২০১৪ সালে যুদ্ধজাহাজ আইএনএস বিক্রান্তকে ভেঙে ফেলা হয়েছিল। বিরাটেরও কি তবে একই দশা হবে? প্রশ্ন উঠতে শুরু করে বিভিন্ন মহলে। শুরু হয় বিরাটকে বাঁচানোর চেষ্টাও। শেষে এগিয়ে আসে মুম্বইয়ের সংস্থা এনভিটেক মেরিন কনসালট্যান্টস প্রাইভেট লিমিটেড। তারা জানায়, বিরাটকে সমুদ্র বিষয়ক সংগ্রহশালা বানিয়ে গোয়ার জুয়ারি নদীতে রাখবে তারা। এ ব্যাপারে তাঁদের সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দেয় গোয়া সরকারও। কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রককে চিঠি দিয়ে এ ব্যাপারে অনুরোধ করেছিল তারা। আবেদন করা হয় সুপ্রিম কোর্টেও। বুধবার তাদের সেই প্রস্তাবের প্রেক্ষিতেই আইএনএস বিরাটকে ভেঙে ফেলার নির্দেশ স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট।
তিন বছর আগেও সমুদ্রে ভেসে যুদ্ধবিমানকে উড়তে নিতে সাহায্য করেছে বিরাট। বয়স হয়েছে বলে, পুরনো এবং বিশ্বস্ত এই যুদ্ধজাহাজকে ২০১৮ সালে বাতিল করে দেয় ভারতীয় সেনা বাহিনী। তবে বিরাট শুরু থেকেই ভারতীয় নৌবাহিনীতে ছিল না। ব্রিটেনের রয়্যাল নেভিতে ১৯৫৯ সালের ১৮ নভেম্বর এইচএমএস হেরেমিস নামে যাত্রা শুরু বিরাটের। পরে ১৯৮৬ সালে তাকে কিনে নেয় ভারতীয় নৌবাহিনী। নতুন নামকরণ হয় বিরাটের। তারপর থেকে ভারতীয় বাহিনীর সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য যুদ্ধজাহাজ হয়ে ওঠে বিরাট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy