দেশে সংবিধান গৃহীত হওয়ার পরে ৭৫ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। বাক্স্বাধীনতার মানে কী, সেটি এ বার অন্তত পুলিশের বোঝা উচিত। কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ইমরান প্রতাপগ্রহীর বিরুদ্ধে মামলায় সোমবার এ কথা জানাল সুপ্রিম কোর্ট। একটি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন কংগ্রেস সাংসদ। ভিডিয়োটিতে নেপথ্যকণ্ঠে একটি কবিতা পাঠ চলছিল। ওই কবিতাকে কেন্দ্র করেই বিতর্কের সূত্রপাত। ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত এবং সাম্প্রদায়িক গোলমাল ছড়ানোর অভিযোগে গুজরাত পুলিশ এফআইআর রুজু করে সাংসদের বিরুদ্ধে। এফআইআর খারিজের দাবিতে মামলা করেন কংগ্রেস সাংসদ। সোমবার ওই মামলার শুনানি শেষে রায়দান স্থগিত রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট।
শীর্ষ আদালতের বিচারপতি অভয় এস ওকা এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভূঞার বেঞ্চে মামলাটির শুনানি ছিল সোমবার। আইনি খবর পরিবেশনকারী ওয়েবসাইট ‘লাইভ ল’ অনুসারে, দুই বিচারপতির বেঞ্চের মৌখিক পর্যবেক্ষণ, ওই কবিতাটি সঙ্গে দেশবিরোধী কার্যকলাপের কোনও যোগ নেই। পুলিশের সেটি পড়ে মানে বোঝা উচিত। কবিতাটি আসলে অহিংসার কথা বলে মত শীর্ষ আদালতের। এফআইআর রুজু করার ক্ষেত্রে পুলিশের সংবেদনশীলতার অভাব ছিল বলেও জানিয়েছেন বিচারপতি ওকা।
গুজরাত সরকারের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা আদালতে জানান, কবিতার অর্থ বুঝতে হয়ত অনেকের ভুল হয়েছে। তাতে বিচারপতি ওকা বলেন, “এটাই তো সমস্যা। এখন কেউ সৃজনশীলতাকে সম্মান করেন না। এটি (কবিতাটি) পড়লে আপনি বুঝতে পারবেন সেখানে বলা হয়েছে, যদি আপনি কোনও অবিচারও পান, সেটিও ভালবাসার সঙ্গে গ্রহণ করুন।” মামলাকারী কংগ্রেস সাংসদের হয়ে সুপ্রিম কোর্টে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী কপিল সিবল।
আরও পড়ুন:
গুজরাতের জামনগরে সাংসদের বিরুদ্ধে এফআইআর রুজু হওয়ার পরে গুজরাত হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ইমরান। তবে এফআইআর খারিজ হয়নি হাই কোর্টে। হাই কোর্ট জানিয়েছিল, বিষয়টির আরও অনুসন্ধানের প্রয়োজন রয়েছে। পরে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি। আগেও এই মামলার শুনানিতে এফআইআরের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল শীর্ষ আদালত। ওই এফআইআরের প্রেক্ষিতে সাংসদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না বলেও অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।