Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
Supreme Court

গনেড়িওয়ালার স্থায়ী নিয়োগের সুপারিশ ফেরাল সুপ্রিম কোর্ট

গত ২০ জানুয়ারি বম্বে হাইকোর্টের সুপারিশ মেনে পুষ্পা গনেড়িওয়ালাকে স্থায়ী বিচারপতি পদে নিয়োগের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে সুপারিশ করেছিল সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম।

বম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি পুষ্পা গনেড়িওয়ালা

বম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি পুষ্পা গনেড়িওয়ালা

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:৪৬
Share: Save:

ধর্ষণ, যৌন হেনস্থা নিয়ে একের পর এক বিতর্কিত রায়ের জেরে বম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি পুষ্পা গনেড়িওয়ালার স্থায়ী নিয়োগের সুপারিশ প্রত্যাহার করে নিল সুপ্রিম কোর্ট। সূত্রের খবর, গনেড়িওয়ালাকে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে করা সুপারিশ প্রত্যাহার করে নিচ্ছে সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম। বর্তমানে বম্বে হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে কর্মরত গনেড়িওয়ালা গত কয়েক দিনে একের পর এক বিতর্কিত রায় দিয়েছেন। তা নিয়ে উদ্ভুত বিতর্ক এবং ক্ষোভের জেরেই তাঁর স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ আটকে গেল। সুপ্রিম কোর্ট সূত্রের খবর, প্রধান বিচারপতি শরদ অরবিন্দ বোবডের নেতৃত্বাধীন কলেজিয়ামের অন্য দুই সদস্য বিচারপতি এন ভি রামান্না এবং বিচারপতি আর এফ নরিম্যান এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গনেড়িওয়ালাকে নিয়ে আপত্তি তুলেছেন সুপ্রিম কোর্টের আরও দুই বিচারপতিও।

গত ২০ জানুয়ারি বম্বে হাইকোর্টের সুপারিশ মেনে পুষ্পা গনেড়িওয়ালাকে স্থায়ী বিচারপতি পদে নিয়োগের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে সুপারিশ করেছিল সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম। কিন্তু তার আগে-পরে ধর্ষণ ও যৌন হেনস্থা নিয়ে পরপর কয়েকটি রায় ঘিরে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়। গত ১৯ জানুয়ারি একটি ১২ বছরের শিশুকে যৌন হেনস্থায় এক অভিযুক্তকে ছাড় দিতে গিয়ে গনেড়িওয়ালা তাঁর রায়ে বলেছিলেন, ১২ বছরের কোনও শিশুর জামাকাপড় খুলে বা জামাকাপড়ের ভিতরে হাত গলিয়ে বুক বা গোপনাঙ্গ স্পর্শ না করা হলে তা শিশুদের যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ (পকসো) আইনের আওতায় পড়বে না। তাঁর ব্যাখ্যা ছিল, ‘‘ত্বকের সঙ্গে ত্বকের সরাসরি স্পর্শ না ঘটলে পকসো আইনে অভিযোগ আনা যাবে না।’’ এই ব্যাখ্যার উপর ভিত্তি করে অভিযুক্তের কারাবাসের মেয়াদও কমিয়ে দেন তিনি। যদিও দেশ জুড়ে বিতর্ক শুরু হওয়ায় গত ২৭ জানুয়ারি সেই রায়ে স্থগিতাদেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি।

চলতি মাসেই অন্য দু’টি মামলায় নাবালিকা নিগ্রহে অভিযুক্ত দু’জনকে মুক্তি দেন বিচারপতি গনেড়িওয়ালা। গত শুক্রবার একটি মামলার পর্যবেক্ষণে তাঁর বক্তব্য ছিল, ‘‘ধস্তাধস্তির চিহ্ন মেলেনি ‘ধর্ষিতা’র শরীরে। কোনও এক জনের পক্ষে একই সময়ে তার নিজের জামাকাপড় খুলে এবং অন্য কারও জামাকাপড় খুলিয়ে ‘ধর্ষণ’ করা সম্ভব নয়। দু’জনের সম্মতিতেই হয়েছে ওই শারীরিক মিলন।’’ এই যুক্তিতে ধর্ষণের দায়ে শাস্তি পাওয়া এক আসামিকে বেকসুর খালাস করে দেন তিনি। তারও আগে, গত ১৪ জানুয়ারি ‘যথেষ্ট প্রমাণের অভাবে’ এক ‘ধর্ষক’-এর নিম্ন আদালতের সাজার রায় বদলে তাকে ছেড়ে দেন তিনি। গত ১৫ জানুয়ারির শিশুদের যৌন নির্যাতনের সংজ্ঞা নির্ধারণ করতে গিয়ে বিচারপতি গনেড়িওয়ালা বলেছিলেন, ‘‘কোনও নাবালিকার হাত ধরে টানা এবং একই সঙ্গে সেই সময় প্রকাশ্যে প্যান্টের জিপ খুললে তা যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ আইনের ৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী যৌন নির্যাতন হিসাবে গণ্য হবে না।’’ গত ১৯ জানুয়ারি তাঁর বিতর্কিত রায়ের পরেই সামনে আসতে থাকে চলতি মাসে দেওয়া অন্য রায়গুলি। এই সব রায় বা পর্যবেক্ষণ প্রকাশ্যে আসার পরেই শুরু হয় বিতর্ক। বিচারপতিদের পাশাপাশি জনমানসেও তুমুল প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। পকসো আইন নিয়ে তাঁর রায়ে স্থগিতাদেশ দেন প্রধান বিচারপতি। তার পরেই তাঁর স্থায়ী নিয়োগের সুপারিশ নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু হয় সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামে। শেষ পর্যন্ত গনেড়িওয়ালাকে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগের জন্য সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়াম কেন্দ্রীয় সরকারকে করা সুপারিশ প্রত্যাহার করার পথে হাঁটল।

অন্য বিষয়গুলি:

Supreme Court Pushpa Virendra Ganediwala
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy