বিচারপতি নিয়োগের কলেজিয়াম পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তোলায় মাস তিনেক আগেই সুপ্রিম কোর্ট ভর্ৎসনা করেছিল তাঁকে। কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেণ রিজিজু এ বার সমালোচনা করলেন নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ‘স্বচ্ছতা বজায় রাখতে’ শীর্ষ আদালতের সাম্প্রতিক রায়ের।
শনিবার রিজিজু বলেন, ‘‘আমাদের সংবিধানে সরকার, আইনসভা এবং বিচারবিভাগের ক্ষমতার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্মণরেখা স্থির করে দিয়েছে। তা লঙ্ঘন করা যায় না।’’ প্রসঙ্গত, গত ২ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের ৫ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ রায় দিয়েছিল, কেন্দ্রীয় সরকারের বদলে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ করবে প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি এবং লোকসভার বৃহত্তম বিরোধী দলের নেতাকে নিয়ে তৈরি কমিটি।
আরও পড়ুন:
শীর্ষ আদালতের ওই রায়ের প্রসঙ্গ তুলে রিজিজু বলেন, ‘‘সংবিধানে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের কথা বলা আছে। সংসদকে আইন করতে হবে। সেই অনুযায়ী নিয়োগ হবে।’’ নিয়োগ কমিটি গড়ে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের কোনও কমিটি সংসদ এখনও পাশ করায়নি, সে কথাও মনে করিয়ে দেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী।
আরও পড়ুন:
নরেন্দ্র মোদী সরকার নির্বাচন কমিশনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইছে বলে আগেই বিরোধীদের অভিযোগ ছিল। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে কংগ্রেস-সহ একাধিক বিরোধী দল দাবি তুলেছে, বর্তমান মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারেরা নিজেদের পদ থেকে ইস্তফা দিন। শীর্ষ আদালতের ওই রায়ের ফলে সরকারের উপর চাপ বেড়েছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। তাঁদের মতে রিজিজুর মন্তব্যে তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, বর্তমান মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমারের মেয়াদ ২০২৫ পর্যন্ত। তাঁর নজরদারিতেই ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। অন্য দুই নির্বাচন কমিশনারের মধ্যে, উত্তরপ্রদেশে যোগী সরকারের মুখ্যসচিব হিসেবে কাজ করে আসা অনুপচন্দ্র পাণ্ডের মেয়াদ ২০২৪-এর ফেব্রুয়ারিতে, লোকসভা ভোটপর্বের ঠিক আগে শেষ হওয়ার কথা। আর এক নির্বাচন কমিশনার অরুণ গয়াল কমিশনে থাকবেন ২০২৭ পর্যন্ত। গত নভেম্বরে গয়াল কেন্দ্রীয় সরকার থেকে স্বেচ্ছাবসর নেওয়ার এক দিনের মধ্যে তাঁকে নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ করা হয়। সুপ্রিম কোর্ট একে ‘রহস্যময়’ বলে আখ্যা দিয়ে বলেছে, ‘‘উনি যেন স্বেচ্ছাবসর নেওয়ার সময়ই জানতেন, ওঁকে নিয়োগ করা হতে চলেছে।’’