গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
উত্তরপ্রদেশের সম্ভলে শাহি জামা মসজিদে সমীক্ষা সংক্রান্ত আর কোনও নির্দেশ দিতে পারবে না স্থানীয় নিম্ন আদালত। শুক্রবার প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে। আগামী ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত মসজিদ চত্বরে সমীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসবে না বলেও জানিয়েছে শীর্ষ আদালত।
দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, ওই সময়সীমার মধ্যে মসজিদ কমিটিকে এ বিষয়ে ইলাহাবাদ হাই কোর্টে আবেদন জানাতে হবে এবং হাই কোর্টকে সমীক্ষা সংক্রান্ত নির্দেশ দিতে হবে। ইতিমধ্যেই যে সমীক্ষার কাজ হয়ে গিয়েছে, তা মুখবন্ধ খামে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। অন্য দিকে, আগামী ৯ ডিসেম্বর দুপুর ২টোর মামলার উত্তরপ্রদেশের মথুরার শাহি ইদগাহ-শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি জমি বিবাদ-সহ ধর্মস্থান সংক্রান্ত ১৯টি মামলার পরবর্তী শুনানি হবে বলে দুই বিচারপতির বেঞ্চ ঘোষণা করেছে।
প্রসঙ্গত, সম্ভলের স্থানীয় আদালতে একটি মামলায় দাবি করা হয়, সেখানকার শাহি মসজিদ মোগল সম্রাট বাবরের আমলে হরিহর মন্দির ভেঙে তৈরি হয়েছিল। গত ১৯ নভেম্বর মামলা দায়েরের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নিম্ন আদালতের বিচারক আদিত্য গোস্বামী কমিশনার নিয়োগ করে মসজিদে সেই দিনই সমীক্ষার নির্দেশ দেন। কোট গারভী এলাকায় প্রথম দিনের সমীক্ষা নির্বিঘ্নেই করা হয়েছিল।
কিন্তু এর পর গত রবিবার (২৪ নভেম্বর) দ্বিতীয় বার সমীক্ষার সময়ে উত্তেজনা ছড়ায়। তাতে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়। পুলিশের গুলিতেই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। সম্ভলে আদালতের সমীক্ষার নির্দেশ ঘিরে অশান্তি এবং মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গড়েছেন উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপাল আনন্দবেন পটেল। লখনউয়ের রাজভবন থেকে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দেবেন্দ্রকুমার অরোরা এই তদন্ত কমিটির নেতৃত্ব দেবেন।
উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে মেরুকরণের রাজনীতির অভিযোগ তুলে সমাজবাদী পার্টি এবং কংগ্রেস নেতৃত্ব সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। সমাজবাদী পার্টির স্থানীয় সাংসদ জ়িয়াউর রহমান বর্কের নামে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ এই ঘটনায় উস্কানির অভিযোগে এফআইআর দায়ের করেছে। এই পরিস্থিতিতে শাহি মসজিদ চত্বরে সমীক্ষার নির্দেশের বিরোধিতা করে মসজিদ কমিটি সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ চেয়ে আবেদন জানিয়েছে। শুক্রবার প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার বেঞ্চে শুনানির জন্য মামলাটি নথিভুক্ত হয়েছে।
শাহি মসজিদ কমিটির দাবি, ১৯৯১ সালের উপাসনাস্থল (বিশেষ ব্যবস্থা) আইনে স্পষ্ট বলা হয়েছে কোনও মন্দির-মসজিদ বা গির্জার চরিত্র পাল্টানো যাবে না। ১৯৪৭-এ স্বাধীনতার সময় যেখানে যা ছিল, তেমনটাই রাখতে হবে। দেশের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র বজায় রাখতে তৈরি আইনে শুধুমাত্র অযোধ্যার রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদকে এই আওতার বাইরে রাখা হয়েছিল। অর্থাৎ, স্বাধীনতার আগে কোনও মন্দির ভেঙে মসজিদ হয়ে থাকলেও এখন যেখানে মসজিদ রয়েছে, সেখানে মসজিদই থাকবে। এই নীতি মেনে চললে, কোনও মসজিদ আগে মন্দির ছিল বলে দাবি উঠলেও সেখানে আর সমীক্ষা করা যায় না। কিন্তু প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় পদে থাকাকালীন বারাণসীর জ্ঞানবাপী বিতর্কে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণকে সমীক্ষার অনুমতি দিয়েছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy