সুপ্রিম কোর্ট। ফাইল চিত্র।
পাঁচ বছর আগে একটি জমি অধিগ্রহণ মামলার রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অরুণ মিশ্রর বেঞ্চ। সেই মামলা পুনরায় শীর্ষ আদালতের পর্যালোচনার জন্যে এসেছে। গঠিত হয়েছে পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চও। সেই বেঞ্চের নেতৃত্ব হিসেবে ফের নির্বাচন করা হয়েছে তাঁকেই। এই নির্বাচন নিয়ে চূড়ান্ত বিরোধিতার মধ্যেই শুনানির কিছুক্ষণ আগে বিচারপতি অরুণ মিশ্র জানিয়ে দিলেন, এই মামলার শুনানি থেকে তিনি সরবেন না।
গত কয়েক দিন সোশ্যাল মিডিয়ায় বারবার বিচারপতি মিশ্র সমালোচিত হয়েছেন। প্রতিবাদীরা তাঁর বিরুদ্ধে পক্ষপাতদুষ্টতার অভিযোগও এনেছেন। তবে তাতে অবস্থান থেকে নড়ছেন না বিচারপতি অরুণ মিশ্র। এ দিন তিনি জানিয়েছেন, কোনও ভাবেই এই বেঞ্চ থেকে তিনি নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছেন না এই মুহূর্তে। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, তাঁর অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তোলার অর্থ হল শীর্ষ আদালকেই কালিমালিপ্ত করা। পক্ষপাতদুষ্টতার মতো অভিযোগ জনগণের কাছে ভুল বার্তা দেয় বলেও দাবি করেন বিচারপতি মিশ্র। তাঁর কথায়, ‘‘শীর্ষ আদালতের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে আমি হব প্রথম ব্যক্তি যিনি যে কোনও ত্যাগে প্রস্তুত। আমি কোনও কিছু দ্বারাই প্রভাবিত নই। আমার বিশ্বাস অটুট। ফলে সরে দাঁড়ানোর কোনও প্রশ্ন নেই।’’
সরকারি সংস্থার জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত যে মামলাটি নিয়ে বিতর্ক তা নিয়ে এ যাবৎ দু’টি রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ২০১৪ সালে প্রথম রায় ঘোষণা করেছিল তিন সদস্যের একটি বেঞ্চের। সেই বেঞ্চে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি আর এম লোঢা, বিচারপতি কুরিয়ন জোসেফ ও বিচারপতি মদন লোকুর। অন্য একটি বেঞ্চ ২০১৮ সালের মার্চ মাসে রায় দান করে। সেই বেঞ্চে বিচারপতি অরুণ মিশ্র ছিলেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিচারপতি এ কে গয়াল, মোহন এম শান্তানাগৌড়া।
আরও পড়ুন:এক্সক্লুসিভ অভিজিৎ: কলকাতা প্রাণবন্ত মেধাচর্চার একটা বড় জায়গা ছিল, এখন আর তা বলা যাবে না
আরও পড়ুন:কমলেশ খুনে গুজরাত-রাজস্থান সীমানা থেকে গ্রেফতার আরও ২
এই মামলার দু’টি রায়ে পার্থক্য ছিল। ২০১৪ সালে গঠিত বেঞ্চ রায়ে বলা হয়েছিল, ২০১৩ সালের জমি অধিগ্রহণ আইনের ২৪ নং ধারা অনুসারে ওই জমি অধিগ্রহণ করা হবে। অন্য দিকে বিচারপতি মিশ্রর বেঞ্চ রায় দিয়ে বলে, ক্ষতিপূরণের টাকা নিতে জমির মালিক পাঁচ বছরের বেশি দেরি করতে পারে না। সেক্ষেত্রে জমি অধিগ্রহণ আটকে থাকবে না। একই জমি নিয়ে দু’টি মামলার দু’টি রায় নিয়ে সেই সময়ে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হওয়ায়, সমস্ত দিক খতিয়ে দেখতে শীর্ষ আদালত আরও বৃহত্তর বেঞ্চ তৈরি করে। বেঞ্চের নেতৃত্বে রাখা হয় অরুণ মিশ্রকেই। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিনীত সরণ, রবীন্দ্র ভট্ট, এম আর শাহ। কিন্তু এই শুনানিতে কেন ফের বিচারপতি মিশ্রকে রাখা হবে, এই প্রশ্নকে হাতিয়ার করেই সরব হন নেটিজেনরা।
চূড়ান্ত বিরোধিতার মধ্যেও আত্মবিশ্বাসী বিচারপতি মিশ্র, বললেন, ‘‘এই মামলায় আমি কোনও পক্ষ নই, কাজেই আমি আমার পুরনো মতকেও সংশোধন করতে পারি সব দিক খতিয়ে দেখে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy