শাহিন বাগের বিক্ষোভে শিশুদের শামিল করায় অসন্তোষ প্রকাশ করল শীর্ষ আদালত। ছবি: রয়টার্স।
মায়ের সঙ্গে শাহিন বাগে গিয়ে ঠান্ডা লেগে মৃত্যু হয়েছিল চার মাসের শিশুর। স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ বার সেই ঘটনায় হস্তক্ষেপ করল সুপ্রিম কোর্ট। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার এবং দিল্লি পুলিশকে নোটিস ধরিয়েছে শীর্ষ আদালত। তাতে একরত্তি ওই শিশু কীভাবে মিছিলে অংশ নিল, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
শাহিন বাগের বিক্ষোভে শিশুমৃত্যু নিয়ে সম্প্রতি শীর্ষ আদালতে চিঠি দেয় কেন্দ্রীয় সরকারের সাহসিকতার পুরস্কার জয়ী, ১২ বছর বয়সী জেন গুণরতন সদাবর্তে। এই ধরনের ধর্না বা বিক্ষোভ থেকে শিশুদের যাতে দূরে রাখা যায়, আদালতের কাছে তা নিয়ে আর্জি জানায় সে।
সেই চিঠি হাতে পেয়েই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ দিন বিষয়টি আদালতে তুলে ধরে ধরেন প্রধানবিচারপতি এসএ বোবদে নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ। গোটা ঘটনায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন ওই ডিভিশন বেঞ্চের অন্য দুই বিচারপতি, বিচারপতি বিআর গবাই এবং বিচারপতি সূর্যকান্তও। তাঁরা প্রশ্ন তোলেন, ‘‘চার মাসের শিশুকে এই ধরনের বিক্ষোভে শামিল করা যায় কি?’’
আরও পড়ুন: রাস্তা আটকে অনির্দিষ্ট কাল প্রতিবাদ চলতে পারে না, শাহিন বাগ নিয়ে নোটিস সুপ্রিম কোর্টের
শাহিনবাগের আন্দোলনকারীদের তরফে আদালতে উপস্থিত আইনজীবীরা এ নিয়ে আপত্তি জানাতে উদ্যত হন। আন্দোলনে উপস্থিত শিশুদেরও ‘পাকিস্তানি’, ‘দেশদ্রোহী’ বলে কটাক্ষ করা হয়েছে বলে জানান তাঁরা। কিন্তু তাঁদের সেই অভিযোগকে গুরুত্ব না দিয়ে আদালত জানায়, ‘‘এখানে এই ধরনের অভিযোগ একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক। আদালতে দাঁড়িয়ে কেউ তা করতে চাইলে, এখানেই আলোচনা বন্ধ করে দেব আমরা। মাতৃত্বের প্রতি অসম্ভব শ্রদ্ধা রয়েছে আমাদের। কিন্তু এখানে কোনওরকম অপ্রাসঙ্গিক আলোচনা হোক, তা চাই না আমরা। এনআরসি, সিএএ নিয়ে আলোচনা করছি না আমরা। কোথায় কাকে পাকিস্তানি বলা হচ্ছে, তা-ও আমাদের আলোচনার বিষয় নয়। আমরা কারও কণ্ঠরোধ করছি না। স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করছে আদালত। সেই নিয়েই আলোচনা হোক।’’
আরও পড়ুন: ‘দাদাকে দ্রুত মুক্তি দেওয়া হোক’, কেন্দ্রকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে ওমর আবদুল্লার বোন
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ), জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) এবং জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি (এনপিআর)-র বিরুদ্ধে গত দু’মাস ধরে শাহিন বাগে অবস্থান বিক্ষোভ করছেন বহু মানুষ। শুরু থেকেই তাতে সামিল ছিলেন উত্তরপ্রদেশের বরেলী থেকে দিল্লিতে আসা নাজিয়া নামের এক মহিলাও। চারমাসের ছেলে মহম্মদ জহানকে নিয়ে টানা দেড় মাস ধরে রোজ রাতে শাহিন বাগে যেতেন তিনি। কিন্তু সারারাত খোলা আকাশের নীচে থাকতে থাকতে ঠান্ডা লেগে যায় জহানের। গত ৩০ জানুয়ারি রাতে ঘুমের মধ্যেই মারা যায় সে।
এই ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়েই সুপ্রিম কোর্টে চিঠি লিখেছিল সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী জেন গুণরতন সদাবর্তে। এই ধরনের মিছিলে শিশুদের প্রবেশে নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি, শাহিন বাগের আয়োজকদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের আর্জিও জানায় সে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy