জম্মু ও কাশ্মীরে আসন পুনর্বিন্যাস করার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার, তার বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন সেখানকার দুই বাসিন্দা। সোমবার সেই মামলা খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চ।
‘জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্বিন্যাস আইন, ২০১৯’ অনুসারে অধুনা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীরের বিধানসভাগুলি পুনর্বিন্যস্ত করতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই পুনর্বিন্যাস প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পুনর্বিন্যাস কমিশনকে। এ বিষয়ে রিপোর্ট তৈরি করে তা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে জমা দেওয়ার কথা কমিশনের। কমিশনের প্রস্তাব মতো পুনর্বিন্যাস হলে জম্মু ও কাশ্মীরে বিধানসভার আসনসংখ্যা ৮৩ থেকে বেড়ে ৯০ হতে পারে। সে ক্ষেত্রে কাশ্মীর উপত্যকার তুলনায় জম্মুর আসনসংখ্যা তুলনামূলক ভাবে বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিরোধী দলগুলির একাংশের অভিযোগ, জম্মু এবং কাশ্মীরের মধ্যে ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজন ঘটাতে চাইছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। তাদের আরও অভিযোগ, হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ জম্মুতে অধিকাংশ আসনে জয় পেয়ে গোটা রাজ্যেরই শাসনক্ষমতা দখল করতে চাইছে বিজেপি। রাজ্যের তকমা ফিরে পেলে চলতি বছরেই জম্মু ও কাশ্মীরে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা।
কাশ্মীরের দুই বাসিন্দা আব্দুল গনি খান এবং মহম্মদ আয়ুব মাটো সম্প্রতি এই পুনর্বিন্যাসের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এর বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন। আসন পুনর্বিন্যাস করার সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন ছাড়া অন্য কোনও কমিশন নিতে পারেন কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। যদিও জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্বিন্যাস আইন, ২০১৯-কে উদ্ধৃত করে কেন্দ্রের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, নতুন আইনে এই সংস্থান রয়েছে। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি সঞ্জয় কিসান কউল এবং এএস ওকা মামলাটি খারিজ করে দেন। আদালতের তরফে জানানো হয়, কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা রদ করার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একগুচ্ছ মামলা হয়েছে। সেগুলোর নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্বিন্যাস আইন, ২০১৯ নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেবে না সুপ্রিম কোর্ট।
২০১৯ সালের অগস্ট মাসে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপ করে দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করা হয় রাজ্যটিকে। গৃহবন্দি করা হয় সে রাজ্যের সমস্ত দলের শীর্ষ পদাধিকারীদের। কাশ্মীরের থেকে পৃথক করা হয় লাদাখকে। কেন্দ্রের তরফে দাবি করা হয়েছে, কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ আগের তুলনায় অনেক কমেছে। এই পরিস্থিতিতে জম্মু ও কাশ্মীরকে রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দিয়ে সেখানে বিধানসভা নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy