কোনও হাসপাতাল থেকে সদ্যোজাত চুরি হলে সবার আগে ওই হাসপাতালের ‘লাইসেন্স’ (ছাড়পত্র) বাতিল করা উচিত। মঙ্গলবার শিশুপাচার সংক্রান্ত এক মামলার শুনানিতে এমনটাই জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শিশুপাচার সংক্রান্ত সব মামলায় ছ’মাসের মধ্যে বিচার শেষ করতে হবে বলেও নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি আর মহাদেবনের বেঞ্চের নির্দেশ, প্রতিটি নিম্ন আদালতের কাছে এই মর্মে নির্দেশিকা পাঠিয়ে দিতে হবে হাই কোর্টগুলিকে।
উত্তরপ্রদেশের এক শিশুপাচার মামলায় অভিযুক্তদের অন্তর্বর্তী জামিন সংক্রান্ত মামলার শুনানি চলছিল সুপ্রিম কোর্টে। এক সদ্যোজাতকে চুরি করে অন্য এক পুত্রহীন দম্পতির কাছে তাকে ৪ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। মঙ্গলবার মামলার শুনানির সময়ে উত্তরপ্রদেশ সরকারকে তুলোধনা করে শীর্ষ আদালত। একই সঙ্গে ইলাহাবাদ হাই কোর্টের ভূমিকার সমালোচনাও করে সুপ্রিম কোর্ট। আইনি খবর পরিবেশনকারী ওয়েবসাইট ‘বার অ্যান্ড বেঞ্চ’ অনুসারে, শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, “হাই কোর্ট জামিনের আবেদনগুলিকে অবহেলার সঙ্গে বিবেচনা করেছে এবং এর ফলে অনেক অভিযুক্ত পলাতক। এই অভিযুক্তেরা সমাজের জন্য ভীষণ ভাবে ক্ষতিকর। জামিন দেওয়ার সময় হাই কোর্টের অন্তত উচিত ছিল, অভিযুক্তদের প্রতি সপ্তাহে থানায় হাজিরার শর্ত দেওয়া।” একই সঙ্গে মামলায় উত্তরপ্রদেশ সরকার কেন জামিনের বিরুদ্ধে আবেদন করেনি, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে সুপ্রিম কোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্য, “এই মামলার ক্ষেত্রে অভিযুক্ত পুত্রসন্তানের আশায় ছিলেন। তার পরে তিনি ৪ লক্ষ টাকার বিনিময়ে এক পুত্রসন্তান পেয়ে যান। পুত্রের আশায় কারও পাচার হওয়া সন্তানকে আপনি নিতে পারেন না। অভিযুক্ত জানতেন যে ওই শিশুকে চুরি করা হয়েছে।” সেই কারণে অভিযুক্তদের জামিনের পক্ষে হাই কোর্টের নির্দেশ খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রত্যেক অভিযুক্তকে থানায় আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি মহাদেবনের বেঞ্চ। প্রত্যককে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
আরও পড়ুন:
শীর্ষ আদালতের দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, এই নির্দেশ বাস্তবায়নে কোনও ঢিলেমি হলে তা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে এবং আদালত অবমাননা হিসাবে তা বিবেচনা করা হবে। রাজ্য সরকারগুলিকে এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের সুপারিশগুলি দেখে দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য বলেছে শীর্ষ আদালত। শিশুপাচার সংক্রান্ত মামলা দেশের কোন আদালতে কতগুলি বিচারাধীন রয়েছে এবং মামলাগুলি বর্তমানে কোন পর্যায়ে রয়েছে, তা নিয়েও তথ্য সংগ্রহের জন্য প্রতিটি হাই কোর্টকে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।