ফাইল চিত্র।
গত দশ মাস ধরে যে সব কৃষক সংগঠন তিন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে, তাদের কেউই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়নি। কেউই আদালতে মোদী সরকারের তিন কৃষি আইনকে চ্যালেঞ্জ জানায়নি। কিসান মহাপঞ্চায়েত নামের এমন একটি সংগঠন আদালতের সামনে হাজির হয়েছিল, যারা অনেক আগেই আন্দোলন থেকে সরে এসেছে।
আজ শীর্ষ আদালত সেই কৃষক সংগঠনের উদ্দেশেই প্রশ্ন তুলল, ‘‘যখন কৃষকরা কৃষি আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতেই এসেছেন, তখন আবার রাস্তায় আন্দোলন করছেন কেন?’’ সড়ক অবরোধ করে কৃষকদের আন্দোলনের জন্য রোজকার জীবনযাত্রায় অসুবিধা হচ্ছে বলে সুপ্রিম কোর্টে মামলা জমা পড়েছিল। আজ বিচারপতি এ এম খানউইলকর ও বিচারপতি সি টি রবিকুমারের বেঞ্চ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, প্রতিবাদের অধিকার ‘শর্তহীন অধিকার’ কি না, আগে তাঁরা সে বিষয়ে বিচার করবেন।
উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরিতে কৃষকদের বিক্ষোভে হিংসায় মৃত্যুর ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে আজ বিচারপতিরা বলেন, ‘‘যখন এই ধরনের হিংসার ঘটনা ঘটে, মৃত্যু হয়, সম্পত্তি নষ্ট নয়, তখন কেউ দায়িত্ব নেয় না।’’ বিচারপতি খানউইলকরের প্রশ্ন, ‘‘আইনে স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, আইন কার্যকর করবে না। তা হলে কিসের বিরুদ্ধে আন্দোলন হচ্ছে? বিষয়টি যখন আদালতের বিচারাধীন, তখন কী ভাবে আন্দোলন হতে পারে?’’
শীর্ষ আদালতের এই প্রশ্ন শুনে আজ কৃষক নেতাদের বক্তব্য, তাঁরা তো সুপ্রিম কোর্টে কোনও মামলা করেনি। কয়েকশো কৃষক সংগঠনের মঞ্চ সংযুক্ত কিসান মোর্চা গত দশ মাস ধরে আন্দোলন করছে। তাঁরা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। রাজনৈতিক ভাবে সমস্যার সমাধানের দাবি করেছেন। আদালতের দ্বারস্থ হননি। কিসান মহাপঞ্চায়েতের মতো যে সব সংগঠন সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে, তাদের সঙ্গে আন্দোলনের কোনও যোগ নেই। তাদের সঙ্গে কৃষকদের জনসমর্থনও নেই। সুপ্রিম কোর্ট কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবি খারিজ করে দিলে বিজেপির সুবিধা হয়ে যাবে বলেই এই সব সংগঠনকে আদালতে হাজির করানো হয়েছে।
কিসান মহাপঞ্চায়েত নিজেও জানিয়েছিল, তারা আন্দোলনে নেই। তবে তারা যন্তর মন্তরে সত্যাগ্রহে বসার আর্জি জানিয়েছিল। আজ সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, প্রতিবাদের অধিকার শর্তহীন অধিকারের মধ্যে পড়ে কি না, আগে সেই আইনি বিচার হবে। কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল আজ লখিমপুরের ঘটনার উল্লেখ করে বলেছেন, ‘‘এই ধরনের দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়া উচিত নয়। এই আন্দোলন বন্ধ হওয়া দরকার। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করে দিক যে আইনের বিরুদ্ধে যখন শীর্ষ আদালতে মামলাই হয়েছে, তখন সড়কে আন্দোলন চলতে পারে না।’’ আগামী ২১ অক্টোবর এই মামলার ফের শুনানি হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy