জলশক্তি মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী বিশ্বেশ্বর টুডু এ দিন জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের (সিপিসিবি) নির্ধারিত মাপকাঠি অনুযায়ী, গঙ্গার কোনও অংশই ক্যাটেগরি এক থেকে চারের মধ্যে নেই। শুধুমাত্র দু’টি অংশ দূষণ মাপকাঠির পঞ্চম স্তরে রয়েছে। এই স্তরে বায়োলজিক্যাল অক্সিজেন ডিমান্ড বা বিওডি প্রতি লিটার জলে ৩ থেকে ৬ মিলিগ্রামের মধ্যে।
ফাইল চিত্র।
গঙ্গার জলের মান নিয়ে বহু দশক ধরেই উদ্বিগ্ন পরিবেশবিদেরা। এমনকি গঙ্গায় দূষণের মাত্রা এতটাই যে, ওই জলে স্নানের জেরে স্বাস্থ্যহানি ঘটতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন অনেকে। ‘গঙ্গা অ্যাকশন প্ল্যান’ এবং পরবর্তী সময়ে একই ধাঁচে ‘নমামি গঙ্গে’ চালু করে কেন্দ্র গঙ্গার জল শুদ্ধ করার প্রকল্প হাতে নিলেও তাতে কতটা কাজ হয়েছে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছেই। তার মধ্যেই এ বারে কেন্দ্রীয় সরকার আজ দাবি করল, গঙ্গার জল স্নানের উপযোগী। গঙ্গার জলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণের উপরে নির্ভর করে জলের গুণমান। আজ কেন্দ্র জানিয়েছে, গঙ্গার জলের গুণমান খতিয়ে দেখা গিয়েছে, তা স্নানের পক্ষে ক্ষতিকর নয়।
জলশক্তি মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী বিশ্বেশ্বর টুডু এ দিন জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের (সিপিসিবি) নির্ধারিত মাপকাঠি অনুযায়ী, গঙ্গার কোনও অংশই ক্যাটেগরি এক থেকে চারের মধ্যে নেই। শুধুমাত্র দু’টি অংশ দূষণ মাপকাঠির পঞ্চম স্তরে রয়েছে। এই স্তরে বায়োলজিক্যাল অক্সিজেন ডিমান্ড বা বিওডি প্রতি লিটার জলে ৩ থেকে ৬ মিলিগ্রামের মধ্যে।
বিওডি হল জলের গুণমানের নির্দেশক। যে জলে দূষণের পরিমাণ যত বেশি, সেই জলে বিওডি-র পরিমাণ তত বেশি থাকে। অন্য দিকে বিওডি কম হলে সেই জলের গুণমান তুলনামূলক ভাবে উন্নত।
বিহার ও উত্তরাখণ্ডে গঙ্গার দু’টি অংশে জলের গুণমানের উন্নতি ঘটেছে বলে সাম্প্রতিক তথ্যে জানা গিয়েছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী উত্তরাখণ্ডে (হরিদ্বার থেকে সুলতানপুর) এবং বিহারে (বক্সার থেকে ভাগলপুর) ২০১৫ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত গঙ্গার জলে বিওডি প্রতি লিটারে ৩ মিলিগ্রামের কম ছিল।
এ ছাড়া উত্তরপ্রদেশ (কনৌজ থেকে বারাণসী) এবং পশ্চিমবঙ্গেও (ত্রিবেণী থেকে ডায়মন্ড হারবার) দূষণ বেশ কম (ক্যাটেগরি ৫) বলে জানিয়েছেন ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গা-র ডিরেক্টর জেনারেল জি অশোক কুমার।
দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের মাপকাঠি অনুযায়ী, ক্যাটেগরি ১ সবচেয়ে বেশি দূষিত। অন্য দিকে সব চেয়ে কম দূষিত স্তর হল ক্যাটেগরি ৫। ২০২১ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন সেন্ট্রাল পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ড (সিপিসিবি)-র প্রকাশিত তথ্য থেকে দেখা গিয়েছে, ২০১৫ সালের তুলনায় ২০২১ সালে গঙ্গার জলের গুণমানের বেশ কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
মন্ত্রী জানিয়েছেন, গঙ্গার জলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ, বিওডি ও ফিকল কলিফর্মের (এফসি) মাপকাঠির নিরিখে ২০১৪-২০২১ পর্যন্ত ৩১টি অঞ্চলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণের উন্নতি হয়েছে। ৪৬টি স্থানে বিওডি এবং ২৩টি অঞ্চলে এফসি-র উন্নতি ঘটেছে।
‘নমামি গঙ্গে’ প্রকল্পের অধীনে সিপিসিবি পাঁচ রাজ্যে ৯৭টি অঞ্চলে গঙ্গার জলের গুণমান খতিয়ে দেখেছে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের সাহায্যও নেওয়া হয়। এর পরেই ৩৬৪টি প্রকল্পে অনুমোদন দেওয়া হয়। যার সম্ভাব্য খরচ ৩০ হাজার ৮৫৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৮৩টি ইতিমধ্যেই প্রকল্প শেষ হয়েছে। মন্ত্রী জানিয়েছেন, ৩৬৪টি প্রকল্পের মধ্যে ১৬০টি প্রকল্প নিকাশী পরিকাঠামো সংক্রান্ত।
কেন্দ্র গঙ্গার জলের উন্নতি হয়েছে বলে দাবি করলেও প্রশ্ন উঠছে কানপুর, মোরাদাবাদ অঞ্চলের শিল্পজাত বর্জ্য যেহেতু গঙ্গায় এসে পড়ে, ফলে গঙ্গার জল আদৌ কতটা নিরাপদ? ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গা-র ডিরেক্টর জেনারেলের দাবি, কানপুর অঞ্চলে প্রচুর শিল্পজাত বর্জ্য থাকলেও ট্রিটমেন্ট প্লান্টের মাধ্যমে সেখানে জলে দূষণ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। পাশাপাশি সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্টগুলিরও আধুনিকীকরণ করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy