(বাঁ দিকে) স্কুলপড়ুয়া। (ডান দিকে) পড়ুয়াকে খুনে অভিযুক্তেরা। ছবি: সংগৃহীত।
স্কুলের ‘উন্নতির’ জন্য দ্বিতীয় শ্রেণির এক পড়ুয়াকে ‘বলি’ দেওয়ার অভিযোগ উঠল উত্তরপ্রদেশের হাথরসে। অভিযোগ, স্কুলের হস্টেল থেকে ওই পড়ুয়াকে তুলে নিয়ে যান স্কুলেরই মালিক এবং তিন শিক্ষক-সহ পাঁচ জন। ওই পড়ুয়া চিৎকার করতেই তাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। শুধু তা-ই নয়, ওই পড়ুয়াকে খুন করার আগে তন্ত্রসাধনাও করা হয়। হাথরসের বেসরকারি স্কুলের এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই হুলস্থুল পড়ে গিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, স্কুলমালিকের বাবা তন্ত্রসাধনা করেন। তাঁর নির্দেশে স্কুলপড়ুয়াকে ‘বলি’ দেওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়। স্কুলের কেন কোনও ‘উন্নতি’ হচ্ছে না, তা নিয়ে বিচলিত ছিলেন স্কুল মালিক। তাঁর বাবা এবং কয়েক জন শিক্ষকের পরামর্শ অনুযায়ী ‘নরবলি’র আয়োজন করা হয়। আর তার জন্য বেছে নেওয়া হয় স্কুলের হস্টেলের এক পড়ুয়াকে। গত ৬ সেপ্টেম্বর এক পড়ুয়াকে হস্টেল থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে স্কুলেরই পিছনে একটি জায়গায় ‘বলি’র ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু সেই পড়ুয়া কোনও রকমে পালিয়ে আসায় স্কুলমালিকের সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই পড়ুয়াকে শ্বাসরোধ করে খুন করার চেষ্টা হয়েছিল। তার মেডিক্যাল পরীক্ষা করানো হয়। গলায় ক্ষতচিহ্ন মিলেছে। তখনকার মতো সেই চেষ্টা ব্যর্থ হলেও আবারও তৎপর হয়ে ওঠেন স্কুলমালিক এবং তাঁর বাবা। ২২ সেপ্টেম্বর আবারও ‘বলি’র আয়োজন করা হয়। এ বার শিকার হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছিল দ্বিতীয় শ্রেণির এক পড়ুয়াকে। রাতে হস্টেলে ঢুকে ওই পড়ুয়াকে তুলে নিয়ে গিয়ে স্কুলের পিছনে ঠিক আগের জায়গাতেই ‘বলি’ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু শিশুটি ভয়ে চিৎকার শুরু করায় তাকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন তিন শিক্ষক।
পড়ুয়ার বাবার অভিযোগ, ২৩ সেপ্টেম্বর সকালে স্কুল থেকে ফোন করে বলা হয়, তাঁর সন্তানের অবস্থা সঙ্কটজনক। দ্রুত আসতে হবে। তাঁর কথায়, ‘‘এই খবর পেয়ে আমি যখন স্কুলের উদ্দেশে রওনা দিই, আবার ফোন আসে। তখন বলা হয়, আরও অবস্থা খারাপ হয়ে পড়েছে আমার সন্তানের। তাকে সদাবাদ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কিন্তু সদাবাদে গিয়ে দেখি স্কুলমালিকের গাড়ির ভিতরে রাখা আমার ছেলের দেহ।’’ তার পরই পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান পড়ুয়ার বাবা।
হাথরসের পুলিশ সুপার নিপুণ আগরওয়াল জানিয়েছেন, স্কুলমালিক, তাঁর বাবা এবং তিন শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে। স্কুলের ‘ভাগ্য’ ফেরাতে দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়াকে খুন করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy