Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Srinivas BV

যুব কংগ্রেসের শ্রীনিবাসই সহায়

বণিকসভার গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকলেও দিল্লিতে কোনও ভাবেই দ্রুত কোভিড পরীক্ষার বন্দোবস্ত করতে পারেননি।

শ্রীনিবাস বি ভি

শ্রীনিবাস বি ভি

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২১ ০৭:২৪
Share: Save:

বারাণসী থেকে কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার অবসরপ্রাপ্ত অফিসার অরুণমণি ত্রিপাঠী কাতর আবেদন পাঠিয়েছিলেন। তাঁর ছেলে গ্রেটার নয়ডায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। কোভিডের সমস্ত লক্ষণ দেখা দিয়েছে, কিন্তু আরটি-পিসিআর পরীক্ষা হচ্ছে না। সরকারি-বেসরকারি পরীক্ষা কেন্দ্রে এত চাপ যে কেউ নমুনাই সংগ্রহ করতে আসছেন না। এ দিকে কোভিড পজিটিভ রিপোর্ট না পেলে হাসপাতালেও ভর্তি করা যাচ্ছে না।

একই সমস্যা পড়েছিলেন দিল্লির উদ্যোগপতি সিতু মহাজন কোহলিও। বণিকসভার গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকলেও দিল্লিতে কোনও ভাবেই দ্রুত কোভিড পরীক্ষার বন্দোবস্ত করতে পারেননি।

প্রধানমন্ত্রী বা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী নন। দু’জনের কাছেই শেষ সহায় হয়ে দেখা দিয়েছেন শ্রীনিবাস বি ভি। যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি। দিল্লির রাজনৈতিক মহলে তেমন পরিচিত নন। সাংসদ বা বিধায়ক নন। কর্নাটকের শিমোগা জেলার ভদ্রাবতী থেকে আসা শ্রীনিবাস চোস্ত হিন্দিও বলতে পারেন না। কিন্তু কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বহু মানুষের উদ্ধারকর্তা হয়ে উঠেছেন ৪১ বছরের শ্রীনিবাস ও তাঁর সংগঠনের কর্মীরা। রাহুল গাঁধীর আগাম সাবধানবাণী অনুসরণ করেই আগে থেকে প্রস্তুত হয়েছেন তাঁরা।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে শ্রীনিবাসের ফোন বেজেই চলেছে। সেকেন্ডে সেকেন্ডে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ আসছে। মিনিটে হাজার হাজার সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক, রাজনৈতিক নেতা তাঁর কাছে টুইটারে সাহায্য চাইছেন। ফেসবুক-টুইট বা নেট-দুনিয়ায় ‘#এসওএসআইওয়াইসি’ বার্তা দিয়ে সাহায্যের আবেদন থামছে না। কেউ অসুস্থ আত্মীয়কে অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে হাসপাতালে হাসপাতালে ঘুরছেন। কারও অক্সিজেন মিলছে না। গোটা দেশ থেকে আর্জি আসছে ওষুধ, ইঞ্জেকশন জোগাড় করে দেওয়ার জন্য। প্লাজমা ডোনর জোগাড় করে দেওয়ার আর্জিও পাচ্ছেন।

শ্রীনিবাস কাউকেই ফেরাচ্ছেন না। হাসপাতালের বেডের অনুরোধ এলে জানিয়ে দিচ্ছেন, বেসরকারি নয়, সরকারি হাসপাতালে চেষ্টা করবেন। ওষুধ-ইঞ্জেকশন নিয়ে তাঁর স্বেচ্ছাসেবকরা অসুস্থ মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছেন। কোভিডে সেরে ওঠা মানুষকে ফোন করে যুব কংগ্রেসের স্বেচ্ছাসেবকরাই প্লাজমা দান করার আর্জি জানিয়ে, ডোনরদের পৌঁছে দেওয়ার বন্দোবস্ত করছেন। সাহায্য পেয়ে অনেকে টুইট করছেন, ‘আনসাং হিরো’ শ্রীনিবাসই দেশের আসল স্বাস্থ্যমন্ত্রী। লাজুক হাসিতে শ্রীনিবাস বলছেন, “এটা রাজনীতির সময় নয়। মানুষকে সাহায্য করার সময়।”

যেখানে গোটা দেশে কংগ্রেসের সংগঠন বেহাল, সেখানে যুব কংগ্রেসের সভাপতি হয়ে এত সব সামলাচ্ছেন কী করে? শ্রীনিবাসের জবাব, সব সমস্যার জন্য আলাদা দল তৈরি করে, দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি রাজ্যে যুব কংগ্রেসের সভাপতি, রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ১০ হাজার প্লাজমা ডোনর চিহ্নিত করা হয়েছিল। তার অর্ধেক পিছিয়ে গিয়েছেন। তাঁদের বুঝিয়ে রাজি করানোর কাজ চলছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রতিষেধকের জন্য নাম নথিভুক্ত করানো, বিভিন্ন শহরে লকডাউনের পরে তাঁদের খাবারের বন্দোবস্তও করা হচ্ছে। শ্রীনিবাসের বক্তব্য, গত কয়েক সপ্তাহে অন্তত ৫৫ হাজার মানুষকে সাহায্য করেছেন তাঁরা।

যখন সরকারি স্তরেই কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মোকাবিলায় প্রস্তুতির অভাব, তখন যুব কংগ্রেস আগেভাগে প্রস্তুতি নিয়ে রাখল কী ভাবে? শ্রীনিবাসের জবাব, ‘‘গত ৭ মার্চ যুব কংগ্রেসের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে এসে রাহুল গাঁধী বলেছিলেন, কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ আসছে। মানুষের সাহায্যে যুব কংগ্রেসকে তৈরি থাকতে হবে। তার পর থেকেই আমরা প্রস্তুতি নিতে শুরু করি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Youth Congress Srinivas BV
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy