Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

UP election 2022: এসপি রুখতে কলহের বীজ পুঁজি বিজেপির

বুধবার অপর্ণা যাদবের পর বৃহস্পতিবার এসপি ত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন মুলায়মের ভায়রাভাই প্রমোদ গুপ্তা।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২২ ০৫:৩৪
Share: Save:

রামের বিরুদ্ধে নিরন্তর কৈকেয়ীকে উস্কে দিতেন মন্থরা। আর কলিযুগে ভোটের মুখে যদুবংশে এখন ঠিক সেই কাজটিই করছে বিজেপি! যাদব পরিবারের সূত্র মনে করছে, মুলায়মের দ্বিতীয় পক্ষের মধ্যে সন্দেহ এবং কলহের বীজ বুনে দিয়েই ভোটযুদ্ধ জয়ের কৌশল নিয়েছে যোগী আদিত্যনাথের দল।

স্থানীয় রাজনৈতিক শিবিরের মতেও, পরিবারের অভ্যন্তরীণ মন কষাকষি, দ্বেষ, ঈর্ষা, অনাস্থাকে সুকৌশলে কাজে লাগিয়ে যদুবংশে বিভাজন তৈরি করতে চাইছে বিজেপি। মুলায়মের দ্বিতীয় পক্ষের পুত্র প্রতীক যাদব (যিনি আবার মুলায়মের দ্বিতীয় স্ত্রীর প্রথম পক্ষের সন্তান) এবং তাঁর স্ত্রী অপর্ণা যাদবকে বোঝানো হয়েছে যে, পরিবারের সমস্ত নিয়ন্ত্রণই চলে যাচ্ছে প্রথম পক্ষের সন্তান অখিলেশ যাদবের হাতে। ভোটে এসপি জোট জিতলে অখিলেশই মুখ্যমন্ত্রী। মুলায়মের অসুস্থতার পর তাঁর উত্তরাধিকারের একচ্ছত্র মালিক। দলের সর্বেসর্বা। প্রার্থী বাছাই, প্রায় সাড়ে তিনশো প্রার্থীকে টিকিট দেওয়ায় শেষ কথা অখিলেশই। আর কারও কোনও অধিকার নেই এসপি সাম্রাজ্যে।

সূত্রের খবর, এক দিনে নয়, ধীরে ধীরে এই সন্দেহের বিষ ঢোকানো হয় মুলায়মের দ্বিতীয় পক্ষের মনে। স্থানীয় রাজনৈতিক শিবির স্মরণ করছেন, এর আগেও বারবার যদুবংশে মুষল পর্ব চলেছে। কখনও কলকাঠি নেড়েছেন প্রয়াত অমর সিংহ, কখনও অখিলেশের কাকা শিবপাল যাদব। আবার অখিলেশের স্ত্রী ডিম্পল এবং প্রতীকের স্ত্রী অপর্ণার মধ্যে সম্পর্কও এতটাই বিষিয়ে যায়, যে জায়ে জায়ে মুখ দেখাদেখিও কালক্রমে বন্ধ বলেই পারিবারিক সূত্রে খবর।

বুধবার অপর্ণা যাদবের পর বৃহস্পতিবার এসপি ত্যাগ করে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন মুলায়মের ভায়রাভাই প্রমোদ গুপ্তা। তিনিও অখিলেশের দিকে তোপ দেগে বলেছেন, “মুলায়ম সিংহকে কার্যত বন্দি করে রাখা হয়েছে। অপরাধী এবং জুয়াড়িদের দখলে এখন সমাজবাদী পার্টি।” এখনও পর্যন্ত স্থির রয়েছে মুলায়মের ভাই শিবপালের প্রগতিশীল সমাজ পার্টি অখিলেশের সঙ্গে হাত মিলিয়েই লড়বে। কিন্তু সূত্রের খবর, শিবপালের সঙ্গেও তলায় তলায় যোগাযোগ করছে বিজেপি। উস্কানো হচ্ছে অখিলেশের ‘সর্বেসর্বা’ মনোভাবের বিরুদ্ধে।

তাৎপর্যপূ্র্ণ ভাবে পরিবারের সদস্যদের দলত্যাগ প্রসঙ্গে অখিলেশের জবাব, “বিজেপির তো খুশি হওয়া উচিত! আর যাই হোক তারা তা হলে এসপি-র ‘পরিবারবাদ’ শেষ করতে পারল। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। তারা তো এত দিন ধরে আমাদের পরিবারবাদী রাজনীতির নিন্দাই করে এসেছে।”

রাজনৈতিক শিবির মনে করছে, এটা নিছক কথার কথা নয়। অখিলেশ নিজেও চান নিষ্কণ্টক হতে। তাই দলে তাঁর পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতি যত কমছে, অখিলেশ হাঁফ ছেড়ে বাঁচছেন আসলে। এই প্রথম বারের জন্য বাবার রিমোট কন্ট্রোল তাঁর মাথার উপরে নেই। একেবারে খোলা হাতে, বাবার ছায়া থেকে বেরিয়ে এসে একা লড়তে চাইছেন অখিলেশ। কাকা শিবপালের সঙ্গে দেখা করে সুসম্পর্ক তৈরি করে রেখেছেন ঠিকই। তবে এমনটাও শোনা যাচ্ছে শিবপাল যদি বেরিয়ে গিয়ে বিজেপির সঙ্গে হাতও মেলান, তা হলেও বিশেষ হতাশ হবেন না অখিলেশ।

সম্পর্কে তুতো-ভাই, বদায়ূঁর এক বারের সাংসদ ধর্মেন্দ্র যাদবকে এসপি-র প্রচার মঞ্চের ধারে কাছে ঘেঁষতে দেননি অখিলেশ। মুলায়মের তুতো ভাই রামগোপাল যাদবকেও শেষ মঞ্চে বসে থাকতে দেখা গিয়েছে পনেরো দিন আগে, অখিলেশের একটি জনসভায়। রাজনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, এক ঢিলে দুই পাখি মারতে চাইছেন অখিলেশ। প্রথমত, তিনি চান এসপি-র বিরুদ্ধে বিজেপির দীর্ঘ দিনের ‘পরিবারবাদ’ নামক অস্ত্রটিকে ভোঁতা করে দিতে। দ্বিতীয়ত, এসপি সাম্রাজ্যের একচ্ছত্র অধিনায়ক হতে। শেষ পর্যন্ত জল কোন দিকে গড়াবে তা অবশ্য ভোটবাক্সেই বোঝা যাবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy