পাভোর নিজস্ব পক্ষী অভয়ারণ্য। নিজস্ব চিত্র
সাধারণত চোখের সামনে পাখি দেখলেই গুলতি হোক বা বন্দুক, তাকে নিকেশ করাই অধিকাংশ নাগা গ্রামের দস্তুর। কিন্তু স্রোতের উল্টো পথে হেঁটে কোহিমা থেকে ২৭ কিলোমিটার দূরে ভিসওয়েমা গ্রামের প্রাথমিক স্কুল-শিক্ষক মাঝো পাভো নিজের বাড়ির বাগানে রীতিমতো ‘বার্ড স্যাংচুয়ারি’ গড়ে ফেলেছেন!
শিকার নাগা সমাজ-সংস্কৃতিতে জড়িয়ে। তাই ঘরে ঘরে দেশি বন্দুকও মজুত থাকে। কিন্তু ছোট থেকেই পাভো পাখি ভালবাসেন। পাখি মেরে খাওয়ার কথা ভাবতেই পারেন না। যত বড় হয়েছেন পশুপাখির প্রতি ভালবাসা বেড়েছে। বাড়ি সংলগ্ন জমিতে তিনি গাছ লাগানো শুরু করেন। সেই গাছপালা বড় হয়ে
এখন ছোটখাটো জঙ্গলের চেহারা নিয়েছে। সেখানেই গাছে গাছে পাখিদের জন্য বাসা তৈরি করে ঝুলিয়ে দেন পাভো। প্রথমে একাই উদ্যোগ নিলেও এখন তাঁর পরিবারও এই পক্ষীপ্রেমের শরিক।
ধর্মভীরু পাবোর কথায়, ‘‘ভগবান শুধু মানুষ নয়, পাখিদেরও সৃষ্টিকর্তা। তাই তাদের হত্যা না করে লালন করাই মানুষের কর্তব্য।’’ যতদিন পাখিদের ‘অভয়ারণ্য’ গড়তে পারেননি, কাউকে পাখি বিক্রি করতে দেখলেই কিনে এনে জঙ্গলে উড়িয়ে দিতেন। এখন তাঁর বাড়ির আশপাশেই জঙ্গল। পাখিদের জন্য গাছে মাটির হাঁড়ি বাসা, বাঁশের ১৪টি ‘বার্ড হাউস’। শিকারের ভয় নেই। তাই পাখির কাকলিতে ভরে থাকে পাভোর হাতে তৈরি ‘অভয়ারণ্য।’
আশপাশের ছেলেপুলেরা মাঝেমধ্যেই গুলতি হাতে পাভোর জঙ্গলে হানা দেয়। কিন্তু তিনি তাঁদের সংরক্ষণের গুরুত্ব বুঝিয়ে ফেরত পাঠান। অবশ্য ঘরোয়া জঙ্গলে তেমন বড় গাছ নেই। তাই তাঁর আক্ষেপ, বড় পাখিদের বাসা গড়ার মতো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা তিনি করতে পারছেন না। মে-জুন মাস জুড়ে পাভোর বাগানে পাখিদের ডিম ফুটে বাচ্চা বেরনোর সময়। পাভোর উদ্যোগের পাশে দাঁড়িয়ে সংশ্লিষ্ট গ্রামসভাও গ্রামে পাখি শিকার নিষিদ্ধ করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy