এমপক্স (সাবেক মাঙ্কি পক্স)-এর নতুন উপরূপ ক্লে়ড ১বি-এর সংক্রমণ এ বার ভারতেও। সংবাদ সংস্থা এএনআই সরকারি সূত্রকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, কেরলের মলপ্পুরমে এক রোগীর শরীরে এমপক্সের ক্লে়ড ১বি-র সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এমপক্সের এই উপরূপে প্রথম কেউ আক্রান্ত হলেন ভারতে। বছর আটত্রিশের ওই রোগী সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরশাহি থেকে ফিরেছিলেন। দেশে ফেরার পর থেকেই তাঁর বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিয়েছিল।
গত মাসেই এমপক্সের নতুন উপরূপ ক্লেড ১ প্রসঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। দেশে ফেরার পর থেকে জ্বরে ভুগছিলেন ওই রোগী। ত্বকে র্যাশ বেরিয়েছিল। চিকেনপক্সে যেমন হয়, অনেকটা সেই রকমই। পরে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে যান তিনি। সেই সময়ে উপসর্গ দেখে সন্দেহ হয় চিকিৎসকের। নমুনা পরীক্ষা করা হলে শরীরে এমপক্সের সংক্রমণ ধরা পড়ে।
দেশে এমপক্সের সংক্রমণের হিসাবে অবশ্য কেরলের এই রোগী দ্বিতীয় আক্রান্ত। এর আগে দিল্লিতে এক রোগীর শরীরে সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। তবে সেটি ছিল ক্লেড ২ উপরূপের সংক্রমণ। কেরলের এই রোগীর শরীরে ধরা পড়েছে এমপক্সের ক্লে়ড ১ উপরূপ, যা নিয়ে সম্প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে হু।
আরও পড়ুন:
এমপক্সের নতুন উপরূপ বিশ্বের একাধিক দেশে মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে। আফ্রিকায় যে গতিতে সংক্রমণ ছড়িয়েছে, তার জেরে অগস্টে এমপক্স নিয়ে গোটা বিশ্বের জন্য জরুরি অবস্থার সতর্কতা ঘোষণা করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ২০২২ সালের পর এই নিয়ে দ্বিতীয় বার এমপক্স নিয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
উল্লেখ্য, আশির দশকে প্রথম মাঙ্কি পক্সের খোঁজ মিলেছিল। তার পর থেকে মূলত পশ্চিম এবং মধ্য আফ্রিকার দেশগুলিতেই এই রোগ সীমাবদ্ধ ছিল। কারণ, মাঙ্কি পক্স পশুবাহিত রোগ। আর যে ধরনের পশুর শরীর থেকে এ রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা, তাদের বাস মূলত গ্রীষ্মপ্রধান এলাকার বৃষ্টি বনাঞ্চলে (রেন ফরেস্ট)। চিকেন পক্সের মতো মাঙ্কি পক্সের ক্ষেত্রে কেবল গায়ে র্যাশ কিংবা ফুসকুড়ি বেরোয়। কিন্তু মাঙ্কি পক্সের ক্ষেত্রে সারা গায়ের পাশাপাশি, লসিকাবাহেও ছড়িয়ে পড়ে সংক্রমণ। এই ভাইরাসের কারণে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
এমপক্স নিয়ে বিশ্বের একাধিক প্রান্তে উদ্বেগের মধ্যেই সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে রাজ্যগুলিকে সতর্ক করে একটি নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্র। নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, এমপক্স সংক্রমণের বিষয়টি চিহ্নিত করে নজরদারি চালাতে হবে। কেউ সংক্রামিত হলে বা সংক্রামিত হয়েছেন বলে সন্দেহ হলে তাঁকে আইসোলেশনে রাখার ব্যবস্থাও করতে বলা হয়েছে। সে জন্য হাসপাতালে বিশেষ ব্যবস্থা রাখার কথাও বলা হয়েছে নির্দেশিকায়। দেশবাসীকে অকারণে আতঙ্কিত না হওয়ারও পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্র।