অনশন শয্যায় সোনম ওয়াংচুক। —ফাইল চিত্র।
খাবার ছেড়ে শুধুমাত্র গত ২১ দিন ধরে শুধু নুন-জল খাচ্ছিলেন তিনি। রাত কাটাচ্ছিলেন খোলা আকাশের নীচে স্লিপিং ব্যাগে। তাঁর প্রিয় লাদাখের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য হয় ২১ দিন অথবা আমরণ অনশনের প্রতিজ্ঞা করেছিলেন শিক্ষাবিদ সোনম ওয়াংচুক। ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন তিনি। অবশেষে মঙ্গলবার নিজের অনশন প্রত্যাহার করে নিলেন সোনম। তবে একই সঙ্গে তিনি জানালেন, অনশন ভাঙলেও আন্দোলন জারি থাকবে।
পেশায় ইঞ্জিনিয়ার তবে সার্বিক ভাবে একজন শিক্ষাবিদ এবং সমাজকর্মী সোনমের কথা দেশের মানুষ জানতে পারেন মূলত ‘থ্রি ইডিয়টস’ সিনেমাটি মুক্তি পাওয়ার পর। আমির খান অভিনীত চরিত্র রঞ্ছোড়দাস শ্যামলদাস চাঁচড় ওরফে র্যাঞ্চাে চরিত্রটি তৈরি করা হয়েছিল তাঁরই জীবনকাহিনির আদলে। বাস্তবের ‘র্যাঞ্চো’ সম্প্রতি গোটা দেশের নজর কাড়েন লাদাখের জন্য অনশন করে। লাদাখের ভালর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া চার দফা প্রতিশ্রুতি পালনের দাবি জানিয়েছিলন সোনম। কেন্দ্রকে এক রকম চ্যালেঞ্জ ছুড়েই বলেছিলেন, ‘‘যে প্রতিশ্রুতি লাদাখের মানুষকে দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী, সেই প্রতিশ্রুতি সৎ ভাবে পালন করতে হবে।’’ কিন্তু সোনমের অনশনকে দেখেও না দেখার ভান করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
গত ৬ মার্চ থেকে অনশন শুরু করেছিলেন সোনম। চার দফা দাবি সামনে রেখে বাস্তবের ‘র্যাঞ্চো’ জানিয়েছিলেন, যত দিন না তাঁর দাবি কেন্দ্র মানছে, তাঁর অনশন চলবে। কী এই চার দফা দাবি? সোনমের চার দফা দাবির প্রথমটি হল লাদাখকে রাজ্যের সম্মান দিতে হবে। এ ছাড়া লে এবং কার্গিল জেলার জন্য আলাদা আলাদা লোকসভা আসন, লাদাখের জন্য আলাদা পাবলিক সার্ভিস কমিশন এবং তাতে চাকরি দেওয়ার আলাদা প্রক্রিয়া, খনি ব্যবসায়ী এবং শিল্পগোষ্ঠীগুলির হাত থেকে লাদাখের প্রকৃতিকে রক্ষা করা এবং সর্বোপরি বিধানের ষষ্ঠ তফসিল নিশ্চয়তার নিরাপত্তা বলবৎ করার দাবি জানিয়েছিলেন তিনি। সংবিধানের এই নিয়ম বলবৎ হলে দেশের আদিবাসী এলাকাগুলিকে ন্যূনতম স্বায়ত্তশাসন দেওয়া হয়। এই এলাকাভুক্ত জমিগুলির জন্যও থাকে বাড়তি নিরাপত্তার নিশ্চয়তা। কিন্তু ২৬ মার্চ পর্যন্ত কেন্দ্রের তরফে সোনমের দাবি নিয়ে একটি শব্দও খরচ করা হয়নি।
কিন্তু ২১ দিন ধরে একটি মানুষ স্রেফ নুন-জল খেয়ে রইল, আর সরকার তাঁর আন্দোলনকে পাত্তাই দিল না! সোনমের কাজ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল একটি মহল বলছে, আসলে সোনম আগেও এমন অনশন করছেন। নির্দিষ্ট কয়েক দিন পর্যন্ত অনশন করে তিনি আবার তা প্রত্যাহারও করে নিয়েছেন। হয়তো তাই সরকার তাঁর এই দীর্ঘ এবং কষ্টকর অনশনকেও এড়িয়ে যেতে পেরেছে।
তবে সরকার এড়িয়ে গেলেও সোনম ছাড়ার পাত্র নন। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, লাদাখের মানুষের সাংবিধানিক অধিকারের স্বার্থে তাঁর লড়াই থামবে না। উল্লেখ্য, সোনমের অনশনের সহানুভূতি জানিয়ে তাঁর সঙ্গেই অনশনে বসেছিলেন লাদাখের বহু মানুষ। মঙ্গলবার সোনমের অনশন শেষ হওয়ার পর লাদাখের মহিলাদের একটি দল জানিয়েছে, সোনমের মতোই একই দাবি জানিয়ে তাঁদের অনশন শুরু হবে এর পর থেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy